রমজানে প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া হলে
দৈনিক সিলেট ডট কম
ডা. শাহনেওয়াজ চৌধুরী:
রোজা পালনে সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সব ধরনের পানাহার থেকে বিরত থাকেন রোজাদাররা। কিন্তু ইফতার থেকে সেহরি পর্যন্ত খাবারে গরমিল এবং পর্যাপ্ত পানি পানের অভাবে অনেকেরই প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া হতে পারে। বিশেষ করে গরমে এ সমস্যা বেশি হয়। প্রস্রাবে জ্বালাপোড়ার সমস্যা নারী-পুরুষ উভয়েরই হতে পারে।
তবে নারীদের প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া হওয়ার প্রবণতা বেশি। প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া হলে যে সমস্যাগুলো হতে পারে, তা হলো- প্রস্রাব গাঢ় হলুদ বা লালচে হয়। প্রস্রাবে বাজে গন্ধ আসে। একটু পর পর প্রস্রাবের বেগ আসে কিন্তু পরিমাণে খুব কম হয়। প্রস্রাব করার সময় জ্বালাপোড়া বা ব্যথা হয়। তলপেটে বা পিঠে তীব্র ব্যথা হয়। সারাক্ষণ জ্বর জ্বর ভাব অথবা কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসে। বমি ভাব বা বমি হয়।
প্রস্রাবের এ জ্বালাপোড়া থেকে নিস্তার পেতে পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া বা ইউরিন ইনফেকশন হলে কিংবা ঘন ঘন ইনফেকশন হওয়ার প্রবণতা থাকলে প্রতিদিন কমপক্ষে ২ থেকে ৩ লিটার পানি পান করতে হবে। তরল জাতীয় খাবার, ইসবগুলের ভুসি-মিছরির শরবত, অ্যালোভেরার শরবত, আখের গুড়, ফলের ফ্রেশ জুস, ডাবের পানি বা লেবুর শরবত পান করতে হবে। এ ক্ষেত্রে কর্যকরী সমাধান পেতে ভিটামিন-সি জাতীয় খাবার খেতে হবে।
ভিটামিন-সি ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করতে সহায়তা করে। ভিটামিন-সি মূত্রথলি ভালো রাখে এবং প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া ভাব কমাতে সহায়তা করে। এ ক্ষেত্রে আনারস খুব উপকার করে। কারণ এতে আছে ব্রোমেলাইন নামক উপকারী এনজাইম। তাই ইউরিন ইনফেকশন হলে প্রতিদিন এক কাপ আনারসের রস খান।
ইউরিন ইনফেকশন সাধারণত দুদিনের বেশি সময় থাকে। আর এ সময়ে ইনফেকশন কিডনিতে ছড়িয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই যত দ্রুত সম্ভব ইউরিন ইনফেকশন সারিয়ে ফেলা উচিত। বেকিং সোড়া দ্রুত ইউরিন ইনফেকশন সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে। আধা চা চামচ বেকিং পাউডার এক কাপ পানিতে ভালো করে মিশিয়ে দিনে একবার করে খেলে প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া কমে এবং ইউরিন ইনফেকশন দ্রুত ভালো হয়।
লেখক : আবাসিক চিকিৎসক,শাহজাহান জেনারেল হাসপাতাল
মির্জাগঞ্জ, পটুয়াখালী