বাংলাদেশ মিশন লন্ডনে সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদযাপন
দৈনিক সিলেট ডট কম
দৈনিকসিলেটডেস্ক:সশস্ত্র বাহিনী দিবস আমাদের জাতীয় ইতিহাসে এক গৌরবোজ্বল দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী সদস্য ও বীর মুক্তিসেনারা সম্মিলিত ভাবে দখলদার পাকিস্থানী হানাদারদের উপর সম্মিলিত ভাবে আক্রমন শুরু করে। চারিদিক থেকে আক্রমনে বিপর্যস্থ হয়ে পরে পাকবাহিনী। ফলশ্রুতিতে ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর পাক বাহিনী ভারত-বাংলা মিত্রবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পনে বাধ্য হয়। আমরা অর্জন করি বিজয়। বিশ্বের মানচিত্রে স্থান করে নেয় নতুন রাষ্ট্র বাংলাদেশ। ১৯৭১ সালের সেই বীর সেনানীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে প্রতিবছর ২১ নভেম্বর দিনটিকে জাতীয় সশস্ত্র বাহিনী দিবস হিসেবে পালন করা হয়। জাতীয় ভাবে আয়োজন করা করা হয় জাতির শ্রেষ্ট সন্তানদের সম্বর্ধনা ও নানা অনুষ্টানের।
প্রতিবছরের ন্যায় এবারও লন্ডন্থ বাংলাদেশ মিশন লন্ডনে সশস্ত্র বাহিনী দিবসে আয়োজন করে এক ব্যতিক্রমী অনুষ্টান মালার। ২১ নভেম্বর (মঙ্গলবার) স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে পাঁচটায় টেমস নদীর তীরে ৪ আলবার্ট এমবেকমেন্ট লেমবেতে আয়োজন করে সম্বর্ধনা ও ডিনারপার্টির। অনুষ্টানে উপস্থিত হন লন্ডস্থ বাংলাদেশ মিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা। আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত হন ব্রিটিশ সেনা নৌ বাহিনীর সদস্য, এমপি, লর্ডসভার সদস্য, লন্ডনে কর্মরত বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কুটনীতিক, ৭১ এর বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠননের নেতৃবৃন্দসহ কমিউনিটির বিশিষ্টজন।
লন্ডস্থ বাংলাদেশ মিশনের কাউন্সিলার মিঃ আবেদিনের সঞ্চালনায় অনুষ্টানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মিশনের ডিফেন্স এডভাইজার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ.কে.এম. আমিনুল হক এএফসি, পিএসসি, সিএসই। স্বাগত বক্তব্যে ব্রিগেডিয়ার আমিনুল হক শ্রদ্ধাভরে স্মরন করেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। তিনি বলেন জাতির জনক ৭১‘র ৭ইমার্চ জাতিকে যুদ্ধের জন্যে প্রস্তুত হওয়ার আহবান জানান, এর পর থেকে বাঙ্গালী জাতি যুদ্ধের জন্যে প্রস্তুতি নিতে শুরু করে। পরবর্তিতে ২৬ মার্চ সরাসরি আবার দেন স্বাধীতার চূড়ান্ত ঘোষনা। ডিফেন্স এডভাইজার বলেন, অবসরপ্রাপ্ত কর্ণেল এম এ জি ওসমানীকে প্রধান করে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তৎকালীন পাকিস্তান সামরিক বাহিনীতে যে সব বাঙ্গালী ছিলেন তাদের অনেকেই পাকিস্তানের পক্ষ ত্যাগ করে সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। বক্তৃতায় তিনি মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় বাহিনীর অবদানের কথাও শ্রদ্ধা ভরে স্মরন করেন। স্মরন করেন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীকে। আমিনুল হক বলেন, বাংলাদেশ সশস্ত্রবাহিনী একটি সুশৃঙখল বাহিনী, এই বাহিনীকে শক্তিশালী করতে কাজ করে গেছেন জাতির জনক। তার পথ অনুসরণ করে তারই কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ সেনা বাহিনীকে একটি সুশৃঙ্খল বাহিনী হিসেবে প্রতিষ্টা করতে কাজ করে যাচ্ছেন।
এরপর অতিথিদের সাথে নিয়ে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের কেক কাটেন হাইকমিশনার নাজমুল কাওনাইন ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেলর এ.কে.এম. আমিনুল হক এএফসি,পিএসসি,সিএসই। হাই কমিশনার নাজমুল কাওনাইন বলেন, বাংলাদেশ সশস্ত্রবাহিনী দেশ পূনর্গঠনে কাজ করছে। আন্তর্জাতিক শান্তি মিশনে কাজ করে আমাদের সশস্ত্রবাহিনীর সদস্যরা দেশের ভাবমূর্তি উজ্বল করছে। দেশের দুর্যোগ মুহূর্তে দেশবাসীর পাশে দাড়ায় সেনাবাহিনী, বর্তমানে রোহিঙ্গা শরনার্থিদের পাশে দাড়িয়েছে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী। অনুষ্টানে সশস্ত্রবাহিনী দিবসে একটি ডকুমেন্টারী প্রদর্শন করা হয়। সব শেষে আগত অতিথিদের সম্মানে আয়োজন করা হয় নৈশভোজের।