নিউইয়র্কে ‘বাংলাদেশের রাজনীতিতে ছাত্রলীগের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনার
দৈনিক সিলেট ডট কম
এনআরবি নিউজ, নিউইয়র্ক থেকে : ‘তলাবিহীন ঝুড়ির অপবাদ ঘুচিয়ে বাংলাদেশ আজ উপচে পড়া ঝুড়ির দেশে পরিণত হয়েছে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার দূরদরির্শতাপূর্ণ নেতৃত্ব গুণে’-এমন অভিমত পোষণ করেছেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির প্রভাবশালী সদস্য আব্দুল মান্নান এমপি। মান্নান বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরই মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত শক্তির পুনর্বাসন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল জাসদ নামক সংগঠনটি। সদ্যস্বাধীন বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার মতলবে বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের তকমা লাগিয়ে ঐতিহ্যবাহী ছাত্রলীগে ভাঙনের জঘন্য চেষ্টা চালানো হয়। শুধু তাই নয়, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট হত্যাকান্ডের প্লট তৈরীর ক্ষেত্রেও এই বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের ব্যানারে অনেক কাজ হয়েছে, যা এখন সংশ্লিষ্টরা অনুধাবনে সক্ষম হয়েই বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ গড়ার কাজে মনোনিবেশ করেছেন।’
২৯ নভেম্বর বুধবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটসে মেজবান পার্টি হলে ‘বাংলাদেশের রাজনীতিতে ছাত্রলীগের ভ’মিকা’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান বক্তা হিসেবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আব্দুল মান্নান আরো বলেন, ‘একাত্তরে যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে ছিল, যারা পাক হায়েনাদের দালালী করেছে, সেই শ্রেণীর মানুষেরা এখনও ছাত্রলীগের ঐতিহাসিক ইমেজ বিনষ্টের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। ছাত্রলীগের সংগ্রামী ইতিহাসকে খাটো করতে ওরা সংঘবদ্ধভাবে ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত এবং জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অবিচল আস্থাশীল একজনকেও বিভ্রান্ত করা সম্ভব হবে না।’
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ আয়োজিত এ সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান। স্বাগত বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদ। সেমিনার সঞ্চালনা করেন সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ফারুক আহমেদ। বিষয়বস্তুর ওপর লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন সংগঠনের অন্যতম সহ-সভাপতি শামসুদ্দিন আজাদ।
সেমিনারে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক নেতা-কর্মীদের অনেকেই ছিলেন। এর অন্যতম হলেন নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি জাকারিয়া চৌধুরী, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নুরল আমিন বাবু, সহ-সভাপতি মাসুদ হোসেন সিরাজি, আবুল হুসেন, মোর্শেদা জামান, মো. আব্দুল কাদের মিয়া এবং আলমগীর মিয়া, যুগ্ম সম্পাদক খায়রোল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক শিবলী সাদিক, নান্টু মিয়া, মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী এবং সুমন মাহমুদ, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের অন্যতম সহ-সভাপতি আকতার হোসেন এবং সৈয়দ বসারত আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক মহিউ্িদ্দন দেওয়ান এবং আবুল হাসিব মামুন, প্রচার সম্পাদক হাজী এনাম, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক মোজাহিদুল ইসলাম, যুব সম্পাদক মাহবুবুর রহমান টুকু, ত্রাণ সম্পাদক জাহাঙ্গির হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক লীগের আন্তর্জাতিক সম্পাদক সাখাওয়াত বিশ্বাস, আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য শাহানারা রহমান, খোরশেদ খন্দকার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম এ সালাম, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হাকিকুল ইসলাম খোকন প্রমুখ।
সেমিনারে অংশগ্রহণকারি সকলেই দৃপ্ত প্রত্যয়ে ঘোষণা করেন যে, বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে উনত্তরের গণঅভ্যুত্থান, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ এবং নব্বইয়ের স্বৈরাচার পতন আন্দোলনে অবিস্মরণীয় ভ’মিকা পালনকারি ছাত্রলীগের বর্তমান ও সাবেক নেতাদের মধ্যে যারা এই প্রবাসে রয়েছেন, তাদের ইস্পাতদৃঢ় ঐক্যে ফাটল ধরানো চলবে না।
সভাপতির সমাপনঅী বক্তব্যে ড. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘ছাত্রলীগের ভ’মিকা স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে বাংলাদেশের ইতিহাসে। সুতরাং এ নিয়ে বিভ্রান্তির অবকাশ থাকতে পারে না।’ ড. সিদ্দিক বলেন, ‘সামনের বছর জাতীয় নির্বাচন। এটি বাংলাদেশের এগিয়ে চলার ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে। এই নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের প্রার্থীদের বিপুল বিজয় দিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে চলমান উন্নয়ন-কর্মকান্ড অব্যাহত রাখতে হবে। এজন্যে সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে।’
ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি জাকারিয়া চৌধুরী এ সেমিনার প্রসঙ্গে গণমাধ্যমকে বলেন, ‘একাত্তরের পরাজিত শক্তির দোসরেরা এই প্রবাসেও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ও তার নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে। প্রতিদিনই ওরা বাংলাদেশের ইমেজ বিপন্ন হওয়ার মত প্রপাগান্ডা চালাচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ চিহ্নিত মিডিয়ার মাধ্যমে। এহেন অপতৎপরতা রুখে দিতে মুজিব সৈনিকদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। বিশেষ করে ছাত্রলীগের প্রতিটি নেতা-কর্মীকে অতন্দ্র প্রহরীর ন্যায় কাজ করতে হবে।’ ‘এটা ভুলে গেলে চলবে না যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতাসহ যত অর্জন-তার সবটাই এসেছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা রচনার পথও সুগম হয়েছে তারই কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণতাপূর্ণ নেতৃত্বে’-উল্লেখ করেন ছাত্রলীগের সাবেক সংগঠক জাকারিয়া চৌধুরী।