সজীব বসন্ত
দৈনিক সিলেট ডট কম
আমার উঠান সাজিয়ে দাওগো সুবাস চন্দনে
রমণীরে বসাও আনি দেবির আসনে,
এই বলে মহাবীর আপনচিত্ত মনে
তড়িৎ বেগে চলিলেন নব পুষ্পবনে।
চারিদিক মাতিয়াছে ভমর গুঞ্জনে
শত নিদ্রা কেঁটে যাবে নন্দন কাননে,
প্রভাত স্বরণকালে নিশীত কুমারী
পুষ্পবর্ণ আবাসন প্রমোদ তরী।
শিমুল, পলাশ, সাথে কৃষ্ঞকুমারী
সুগন্ধে ভরিয়াছে তরীর দোয়ারি,
প্রাসাদ প্রাঙ্গনে আজ স্বচ্ছ রক্তধারা
এগুলো রক্ত নয়গো পুষ্পমনোহরা।
হৃদত্যাগে নিরুদ্দেশ আমারি নিঃশ্বাস
কে যেন দিয়াছে তারে প্রণয়ের বিশ্বাস,
বনের দোয়ারে আসি থামেন মহাবীর
কে যেন ছুড়িয়াছে বিষবর্ণ তীর,
কুয়াশা বিলীন হইল বীরের হুমকারে
কে তুমি? প্রকট হও দেখিব তোমারে।
সম্মূখে প্রকট হইল “রক্ষবীরবাহু”
কাননে প্রবেশ করিলে হইবে অগ্নিদাহো,
প্রাণের পরোয়া যদি আমি করিতাম
স্বীয় হস্তে ক্ষত্রীয়তা বর্জন করিতাম।
অদম মূর্খ তুমি বৃথা এ দ্বন্ধ
প্রথম প্রহারদ্বারা করিব নিঃস্থব্দ,
এতই দম্ভ যদি হও আগোয়ান
তীক্ন তলোয়ার দেবে প্ররাক্রমের প্রমান।
এসব বলিয়া যোদ্ধা স্বয়ং তেজ মনে
ঝাপিয়া পড়িলেন এক ক্ষীপ্ত বর্ণ রণে,
তৃতীয় প্রহর অবদি চলিছে তলোয়ার
চতুর্থ প্রহরে শুনি বীরের চিৎকার।
বক্ষখানি দ্বীখন্ডিত ক্ষীপ্ত প্রহারে
রক্ষবীর ঢলেপড়েন ভূমির উপরে,
শত্রু পরাস্ত করিয়া জৈনিক মহাবীরে
গতিতে প্রবেশ করেন বনের ভিতরে।
সপ্তখানা গাজরামাল্য, অষ্টশত জুঁই,
শতগুচ্ছ রজনীগন্ধা, পদ্মকোমল, ভুঁই,
পঞ্চঅশ্ব বহন করে শ্রেষ্ঠ মহারথ
পুষ্প দ্বারা ভরপুর রথ সুদর্শন মহৎ।
সারথির আসনে আছেন স্বয়ং মহাবীর
হস্তে তাঁহার ইন্দ্রধনুক সঙ্গে তীক্ন তীর,
প্রতিক্ষায় দন্ডায়মান কুমারী উপমা
দেখে যেন মনেহয় লক্ষীপ্রতিমা।
মায়াবী কন্ঠে দেবি বলিয়া উঠিলেন
পুষ্পনিয়ে মহাবীর কোথায় আসিলেন?
বলিতে বলিতে সেই বীরের পদার্পণ,
মস্তকখানি করে দিলেন দেবির সমর্পন।
আনত পুষ্পাঞ্জলী দেবির চরনে,
করিতাছি নিবেদন স্বাচ্ছন্দ মনে।
প্রেমেতে ভরিয়া গেছে সৃষ্ট সামন্ত
ফাগুন নিয়ে এসেছে সজীব বসন্ত।