‘স্টুলিশ’ অ্যাপ : নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন
দৈনিক সিলেট ডট কম
দৈনিকসিলেটডেস্ক: গত বছর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের আলোচনায় থাকা ‘সারাহা’ অ্যাপের স্থান এ বছর দখল করে নিয়েছে ‘স্টুলিশ’ নামের একটি অ্যাপ। তবে এ বছরের ‘স্টুলিশ’ অ্যাপের বিরুদ্ধে সাইবার বুলিংসহ নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
চলতি মাসে দেশের ফেসবুক ব্যবহারকারীদের মধ্যে ‘স্টুলিশ’ অ্যাপকেন্দ্রিক স্ট্যাটাসের সংখ্যা ছিল লক্ষণীয়। অ্যাপটির বিপক্ষেও রয়েছে স্ট্যাটাস। এমনকি ২৩ মে থেকে বাংলাদেশি ফেসবুক ব্যবহারকারীদের স্ট্যাটাসে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সিএনএনের লোগো সংবলিত একটি স্ক্রিনশট ভেসে বেড়াতে দেখা গেছে। স্ক্রিনশটের তথ্য অনুযায়ী স্টুলিশ একটি হ্যাকিংঅ্যাপ এবং এটির মাধ্যমে দুই মিলিয়নের বেশি তথ্য হ্যাক হয়েছে।
এমন সংবাদের প্রেক্ষিতে ইন্টারনেট ঘেঁটে সিএনএনে এমন কোনো সংবাদের দেখা মেলেনি। তবে অ্যাপটি ঘেঁটে দেখা গেছে, স্টুলিশ যেসব তথ্য চেয়ে আবদার করে থাকে তা সন্দেহজনক।
সন্দেহের মূলে রয়েছে অ্যাপটি যেসব অনুমতি চেয়ে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম ‘ডিভাইস আইডি অ্যান্ড কল ইনফরমেশন’। অ্যাপটি মোবাইলে ডাউনলোড করার সময় ‘ডিভাইস আইডি অ্যান্ড কল ইনফরমেশন’ অপশনটির মধ্য দিয়ে মোবাইলের ফোন কল সম্পর্কিত তথ্য হাতানোর অনুমতি চেয়ে থাকে। ইংরেজিতে লেখা ওই লাইনটির বাংলা অর্থ করলে দাঁড়ায়, অ্যাপটি ফোনের নম্বর এবং আইডি সম্পর্কিত তথ্য জানতে পারবে, এমনকি অন্য নম্বর থেকে আসা কোনো কলও যদি চালু থাকে।
এ ছাড়া শুধু লিখিত মেসেজ পাঠানোর এই অ্যাপটি ফোনে থাকা ভিডিও, অডিও ব্যবহারের অনুমতিও চেয়ে থাকে। তবে অ্যাপটির মাধ্যমে ভিডিও বা অডিও তথ্য পাঠানোর কোনো অপশন দেখা যায়নি। অ্যাপটির শর্তাবলি ঘরটিও ফাঁকা দেখা গেছে, যেখানে অ্যাপটি ব্যবহারের শর্তাবলি থাকার কথা ছিল।
এদিকে দুটি উপায়ে অ্যাপটিতে অ্যাকাউন্ট খোলা যায়। একটি ফেসবুক এবং অপরটি নিজের তথ্য দেওয়ার মাধ্যমে। সেই সঙ্গে এর ওয়েব ইন্টারফেসে দেখা মেলেনি লগ-ইন করার কোনো অপশন।
উপরোক্ত বিষয়গুলোকে সন্দেহের চোখে দেখছেন অ্যাপ ডেভেলপরা। তাদের মতে, অ্যাপটি যেসব তথ্য জানতে চেয়ে অনুমতি চেয়ে থাকে তা সন্দেহজনক।
এ বিষয়ে জুবায়ের আহমেদ নামে এক অ্যাপ ডেভেলপার বলেন, ‘কিছু কিছু ভয়েস কল সম্পর্কিত অ্যাপ রয়েছে, যেগুলো মোবাইলের ফোন কল সম্পর্কিত তথ্য চেয়ে থাকে। তবে এই অ্যাপটি ভয়েস কল সম্পর্কিত নয়। বিষয়টি সন্দেহের। এ ছাড়া ফিডনলি.কম নামে একটি সাইট এই স্টুলিশ অ্যাপের সঙ্গে সংযুক্ত। আর বোঝায় যায় এটি অ্যাপটি ব্যবহারে বাধ্য করছে।’
উল্লেখ্য, গত বছর অ্যাপ স্টোর কিংবা গুগল প্লে, সর্বাধিক ডাউনলোড হওয়া অ্যাপের তালিকায় শীর্ষে ছিল সারাহাহ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে প্রথম সাড়া ফেলে অ্যাপটি। তবে অ্যাপটির বিরুদ্ধে সাইবার বুলিংয়ের অভিযোগ ওঠায় তা চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্লে-স্টোর ও অ্যাপ-স্টোর থেকে সরিয়ে ফেলা হয়।