খাদিমে মসজিদের নামে জমি দখলের অভিযোগ

দৈনিক সিলেট ডট কম
দৈনিকসিলেটডটকম:নগরীর উপকণ্ঠ খাদিমপাড়া এলাকায় মসজিদের নাম ভাঙ্গিয়ে জমি দলখের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এবং এনিয়ে দখলদারদের হুমকি ধমকিতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন জমির প্রকৃত মালিক। এটি নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দারে দারে ঘুরেও রেহাই পাচ্ছেননা তিনি।
রোববার দুপুরে সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন নর্থইস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেরন হৃদরোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. ফারুক উদ্দিন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বিয়ানীবাজার উপজেলার মোল্লাপুর গ্রামের বাসিন্ধা ডা. মো. ফারুক উদ্দিন বলেন, আমি ২০১৪ সালে শাহপরান বাইপাস এলাকায় বহর মৌজায় ১১৪৩১/১৪ নম্বর রেজিস্টার দলিলমূলে (দাগ নং ৪৫৬৫/৮) ৬০ শতক জায়গা ক্রয় করে ভোগ দখল করিয়া আসিতেছেন। উক্ত ভূমি ক্রয় করার পর মাটি ভরাট করে সীমান পিলার স্থাপনসহ ২০১৮ সালে সেখানে একটি পাকা ঘর ও একটি আধাপাকা ঘর নির্মাণ করি। এ ভূমির বিপরীতে ২০১৮সাল পর্যন্ত সরকারি খাজনাদিও পরিশোধ রয়েছে। বর্তমানে বিএস জরিপে ৪৭১৫নং খতিয়ানে ভূমি আমার নিজ নামে রেকর্ড হলে সেখানে আমার নামের সাইনবোর্ডও টানিয়ে দিয়েছিলাম। যা এলাকার সর্বসাধারণের জানাও রয়েছে। এত বছর ধরে সেখানে কোন স্বত্ব দাবিদারও আসেনি। তবে চলতি বছরের শুরুর দিকে শাহপরাণ এলাকার প্রত্যাশা টাওয়ারের বাসিন্দা মৃত ফজলু মিয়ার ছেলে মুজিবুর রহমান ও মেজরটিলার প্যারাগন টাওয়ারের বাসিন্দা জসিম উদ্দিন সিলেটের কানাইঘাটের শাকুর সিদ্দিকী চৌধুরীর নাম করে এ ভূমি দখল করতে যায়। এসময় তারা আমায় হুমকি-ধমকিও দেয়। পাশাপাশি আমার কেয়ারটেকারকে বলে দেয়, যেন ভূমি রক্ষা করতে হলে তাদের ২০ লাখ টাকা চাঁদা দেই। কিন্তু আমি তা আমলে নেই নি।
তিনি বলেন, দাবিকৃত চাঁদা না পাওয়ায় শাকুর সিদ্দিকীর নির্দেশনায় মুজিবুর রহমান ডালিম একদল সন্ত্রাসী নিয়ে গত ১৯ মার্চ আমার ভূমিতে নির্মিত আধাপাকা ঘর ভাঙতে যায়। এসময় সেখানে তার কাছে কারণ জানতে চাইলে সে বলে, এ ভূমি দখল করে দিলে শাকুর সিদ্দিকি তাকে ২০ লাখ টাকা দেবে এবং এই ভূমিতেই তার নির্দেশের তারা ‘মা খাদিজা’ নামে একটি মসজিদ নির্মাণ করবে। এসময় তারা আমায় হুমকিও দেয়। এর প্রেক্ষিতে আমি শাহপরাণ থানায় সাধারণ ডায়রী করি (জিডি ৭৯৯ তারিখ-২০ মার্চ২০১৯)। এ জিডির খবর পেলে ডালিম বিষয়টি আপোষ করার প্রস্তাব দিলে আমি তা সরল মনে মেনে নেই। এবং সেখানে নতুন ঘর নির্মাণের জন্য বেশ কিছু রড়, সিমেন্টসহ নির্মাণসামগ্রী গোদামজাত করি। কিন্ত গত ২২ এপ্রিল দুপুরে তারা ওই ভূমিতে বাউন্ডারী ও ঘরের মালামাল ভাংচুর করে এবং আমার নামের সাইনবোর্ড ভেঙ্গে ফেলে দিয়ে নতুন করে ‘মসজিদের নামে’ সাইনবোর্ড লাগায়। ঘরের তালা ভেঙ্গে মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যায়। প্রায় ৪ লক্ষ টাকার ক্ষতি সাধন করে। এসময় আমি বাধা দিলে প্রাণে মারার হুমকি ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ তান্ডব সৃষ্টি করে। ফের ২০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে, না দিলে প্রাণে মারার হুমকি দেয়। পরে আমি শাহপরান থানায় মামলা দায়ের করি। এছাড়া এখন আসামীরা এই ঘরটিকে মসজিদ বানানোর নাম করে সাইনবোর্ড টাঙ্গিয়ে এলাকার মানুষের কাছে ধর্মীয় সহানুভূতি সৃষ্টি করে ভূমি দখলের পায়তারা করতেছে।
জমির প্রকৃত মালিক আরো বলেন, এ ভূমি ক্রয়ের পর থেকে আমি ভোগ দখলে থাকলেও শাকুর সিদ্দিকির নির্দেশে মুজিবুর রহমান ডালিম ও জসিম উদ্দিন গংরা বার বার এ ভূমি দখলের অপচেষ্টায় লিপ্ত। তারা আমার ভূমি পাহারাদারকেও প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে পাশাপাশি আমার চরম ক্ষতি করবে বলে এলাকায় বলে বেড়াচ্ছে। মাটি ভরাট করার পর উক্ত ভূমির মূল্য বেড়ে যাওয়ায় জনসমর্থন আদায়ের কৌশল হিসেবে তারা মসজিদের নাম করে তা দখলের চেষ্টা করছে। তাদের অত্যাচার এবং হুমকিতে আমরা স্বাভাবিক জীবন যাপনও করতে পারছি না। এমতাবস্থায় এ ভূমিখেঁকো চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসীদের কবল থেকে আমার ক্রয়কৃত ভূমি রক্ষা এবং জানমালের নিরাপত্তায় সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন তার আইনজীবী ঐ্যডভোকেট আব্দুল মুনিম এনাম ও প্রিয়াস ড্রিংকিং ওয়াটারের এমডি কামরুল হাসান চৌধুরী তুহিন।