আমেরিকায় ৩৬ বাঙালি নারীর ইংরেজী গল্প-গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব
দৈনিক সিলেট ডট কম
এনআরবি নিউজ, নিউইয়র্ক থেকে : আমেরিকায় প্রবাসী ৩৬ নারীর
ছোটগল্পের ইংরেজীতে অনুবাদিত গ্রন্থ ‘দ্য গোল্ডেন লিভস’র
প্রকাশনা উৎসবে বহুজাতিক এ সমাজে বাঙালির এগিয়ে চলার
ঘটনাবলি স্থান পেল। সমাজ-বিনির্মাণে নারীদের ভ’মিকার কথাও
অবলিলায় ব্যক্ত হলো এ অনুষ্ঠানে।
৭ জুন শুক্রবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটসে এ উৎসবে
প্রধান অতিথি ছিলেন কন্সাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুননেসা। তিনি এ
ধরনের উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন। তার নেতৃত্বে সকল লেখিকা
গ্রন্থটি হাতে নিয়ে মোড়ক উম্মোচন করেন।
অতিথির মধ্যে বাংলাদেশের জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও
লেখিকা ফরিদা ইয়াসমিন ‘সাউথ এশিয়ান ক্রিয়েটিভ উইমেন’র এই
প্রকাশনাকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, নতুন কিছু করতে হলে একজন
নারীকে কতটা ধকল সইতে হয়, তা প্রতিটি নারীই উপলব্ধি করেন।
সংসারের নৈমিত্তিক কাজ সেরেই লেখালেখি অথবা সৃজনশীল কোন
কাজের জন্যে সময় বের করতে হবে। আর এটি অতটা সহজ নয় আমাদের
সমাজ ব্যবস্থায়। তারপরও পপি চৌধুরীর এই প্রয়াস এবং তার সাথে যুক্ত
হয়েছেন, তারা এই প্রবাসে নারী অধিকারের ক্ষেত্রে বড় একটি অবলম্বন
হয়ে থাকবেন। এমন ভালো কাজের সাথে আমিও থাকার অঙ্গিকার করছি।
তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন, এগিয়ে চলার ক্ষেত্রে নারীদের যে ব্যথা, তা
নারীরাই ভালো বুঝেন। তবে পুরুষদেরকেও তা বুঝতে হবে। অন্যথায় সমাজ
এগুবে না।
ফরিদা বলেন, নতুন প্রজন্মের অনেকেই বাংলায় কথা বলতে পারলেও লিখতে
পারে না। তেমনি একজনের লেখা এই গ্রন্থে স্থান পেয়েছে। এটি অনেক
বড় একটি ঘটনা বলে মনে করছি। এভাবেই বাঙালি সংস্কৃতির সাথে
প্রবাস প্রজন্মকে জড়িয়ে রাখতে হবে। ফরিদা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন,
নিউইয়র্ক থেকে বাংলা ভাষায় অনেক পত্রিকা প্রকাশিত হচ্ছে।
ইংরেজীতেও হওয়া দরকার। বাংলাদেশের কথা, বাঙালি সংস্কৃতি ও বাঙালিদের
এগিয়ে চলার ঘটনাবলি জানতে আগ্রহী-প্রবাস প্রজন্মের জন্যেই
ইংরেজী পত্রিকা দরকার।
জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি (প্রেস) নূর এলাহি
মিনা এ বছরের আন্তর্জাতিক নারী দিবসের স্লোগানের প্রসঙ্গ টেনে
বলেন, ভাবুন সমানভাবে, চমৎকারভাবে গড়–ন এবং পরিবর্তনের জন্যে
উদ্ভাবন করুন। নারীদের উদ্ভাবিত সবকিছুই লিঙ্গ সমতার পথ
সুগম করছে। এবং এই প্রত্যাশায় জাতিসংঘের ২০৩০ এজেন্ডায় নারী
ক্ষমতায়নের বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। মিনা বলেন, দ্য গোল্ডেন লিভস
গ্রন্থটিও নারীদের উত্থানের জয়গানই গাইবে।
গ্রন্থটির ওপর আলোচনাকালে কবি-লেখক বেলাল বেগ বলেন, বাংলা
সংস্কৃতি হচ্ছে মানবতার জয়গানের অন্যতম অবলম্বন। হাজার বছর
আগেই বাঙালি লেখকেরা স্পষ্টভাবে উচ্চারণ করেছেন, মানুষের চেয়ে বড়
কিছু নেই। তা এখনও ধ্বনিত হয় সর্ব সমাজে।
জাতিসংঘের শিক্ষা বিষয়ক শুভেচ্ছা দূত নাঈমা খান বলেন, নারীর
অগ্রগতি নিশ্চিত হলেই সমাজ-উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত হবে।
গ্রন্থটির সম্পাদনা করেছেন যৌথভাবে পপি চৌধুরী এবং বাংলা
একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক পূরবী বসু।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন লেখক-লেখিকারা। কয়েকজন স্বরচিত কবিতা
পাঠ করেন।