একটি সাধারণ ডাইরির পেছনের কিছু কথা
দৈনিক সিলেট ডট কম
ফরজানা মৃদুলা: রক্ষক যখন ভক্ষক আইন/ বিচার/শালিস এর ক্ষেত্রে কথাটি বেশ প্রচলিত ছিলো কিংবা আছে কিন্তু সময়ের স্রোতে যেন একটু একটু হারিয়ে যেতে শুরু করছে সেই কথাটি জনগন চায় কথাটি যেন চিরতরে ইতি টানে।
ডাক্তার আসিবার পূর্বেই রোগীটি মরিয়া গেলো! ছোট বেলায় এর ইংরেজি অনুবাদ বহুবার লিখেছি। কেন জানিনা বারবার সেই কথাটির পূর্নাঙ্গ অর্থের মিল খুঁজতে গিয়ে বর্তমানে হাসপাতালের চিত্র সাথে থানার সাধারণ ডাইরি মানে যাকে জিডি বলা হয় তা করতে গেলেও সেই ভাবসম্প্রসারণের রেশ পাওয়া যায়। খুলে বলতে গেলে বলতে হয়, একজন সাধারণ জনগন যদি কোন কারনে জিডি করতে যান তখন বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই নানা রকমের প্রশ্নের উত্তর কিংবা আমাদের স্যার ভাত খাচ্ছেন কিংবা বাহিরে আছেন অপেক্ষা করুন ইত্যাদি অজুহাতের অভাব নেই।
যদিও আপনি দায়িত্বশীল জনগনের কাতারে নিজেকে দাঁড় করিয়ে আপনার চোখের সামনে ঘটে যাওয়া কোন ঘটনা নিয়ে আইনী সহায়তা নিতে ছুটে যান তবে প্রথমই আপনাকে বেশ কিছু সময় অযথা বসে থাকতে হবে। তারপর একজন আসবেন এবং জানতে চাইবেন কী ঘটনা এবং শোনার পর তিনি খুব কর্তব্যপরায়ন পেশাদারীত্ব নিয়োগকৃতের মত বলবেন আপনি আমাদের সেকেন্ড স্যার এর সাথে বিষয়টি আলাপ করুন নিশ্চয় একটা সুরাহা হবে।
এর পরেও আরো নিয়ম রয়ে যায় একটু ওসি স্যারের সাথে কথা বলুন।
কিন্তু দুঃখজনক বিষয় আপনি যে,দেখে এসেছেন একটা অপরাধ জনিত ঘটনা সেই অপরাধী এতটা সময় সেই জায়গাতে অবস্থান নাও করতে পারে সেই কথাটি তারা জেনেও না জানার ভান করতে থাকেন আর আইনের দোহাই মানে নিয়মকানুন এর কথা বলতে বলতে আর এই রুম ঐ রুম ছুটাছুটি করতে করতেই চলে যায় ঘন্টার পর ঘন্টা। আর সেই অপরাধী ব্যক্তি কিংবা ব্যাক্তিগন অনায়েসে কেটে পড়তে পারে।
এইরকম ঘটনার অভিজ্ঞতা আমার ঝুলিতেও যোগ হয়েছে এইজন্যো নিজেকে বেশ গর্বিত মনে হয়। হায়রে জিডি লিখতে লিখতেই দিন শেষ এরওপর তো আছেই প্রশ্ন আপনি দেখলেন কিন্তু আপনি তো ভিক্টিম নয় তো কেনো জিডি করবেন? তখন মনে হয় অভাগা দেশের দায়িত্বপরায়ন জনগন হওয়াও অপরাধ!
তবে উর্ধতন কর্তৃপক্ষ এর কাছে যদি কেউ পৌঁছতে পারেন তবে একটা একটু দ্রুত সম্ভব। কিন্তু যেদেশে এখন পর্যন্ত বহু জনগণ থানায় যেতেই ভেতরে আতংক কাজ করে সেখানে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের দরজায় কত জন কড়া নাড়তে পারে তা বলুন?
তবে বেশ মজার একটা ঘটনা হলো যদি কোন ব্যক্তি উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট হয়ে তারপর জিডি করতে যান আর গিয়ে একটা ফোন লাগিয়ে দেন উর্ধতন কর্মকর্তার নিকট তখন ঐ দায়িত্বরত রা জ্বি স্যার জ্বি স্যার এখনি দেখছি বলে মুখে ফেনা তুলে নেন।
হায়রে দেশ কজনই বা এতটা ধৈর্য নিয়ে এগোতে পারে যদিও পুরো মন মানসিকতা নিয়ে সেই ব্যাক্তি ছুটে যান আইন-সহায়তার জন্যে কিন্তু এতটা বেগ পোহাতে পারেন না অনেকেই।অতঃপর যদিও করতে সক্ষম হওয়া যায় সাধারণ ডায়রী তথা জিডি তাও অপেক্ষার দিন গুনতে হয় জিডিটির তদন্তকারী অফিসারের ফোনের। কেননা তিনি নিশ্চিত করবেন কার্যক্রম শুরু হতে চলছে। সেই অপেক্ষার প্রহর গুনতে গুনতে অনেকাংশ পাতার গহীনে হারিয়ে যায়।
আমরা মানবিকতার দিক বিবেচনা করে চাই চোখের সামনে ছোট বড় যেকোন অপরাধ দেখলে তা ব্যবস্থা নিতে যদি সেই জায়গায় গিয়ে এতটা হয়রানির শিকার হতে হয় তবে হয়ত সাহস নিয়ে কেউ ছুটে আসবে না আইন-সহায়তা নিতে।
আমরা জানি বর্তমান সময়ে পুলিশের মানবিকতার অনেক অনেক পরিবর্তন হয়েছে।
একটা থানায় গেলে ভিক্টিম ও সহায়তা পান তবে কিছু কিছু কারনে এইরকম অপরাধীরা দেদারছে আইনের ফাঁক দিয়ে ছুমন্তর হয়ে ভ্যানিস হয়ে যায়।
এমন কত জানা না জানা জিডির পাতায় কতজন অপরাধীরা লোকচক্ষুর আড়াল হয়ে থাকে।