ঈদের ছুটিতে সিলেটের পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড়

দৈনিক সিলেট ডট কম
দৈনিকসিলেট ডটকম : করোনা মহামারির দুই বছর পর পর্যটন স্পট খুললেও খুব বেশি পর্যটকের আনাগোনা হয়নি সিলেটের পর্যটন স্পটগুলোতে। তবে এবার ঈদের লম্বা ছুটিতে সিলেটের সব পর্যটন স্পটে পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড় জমেছে।
বুধবার (৪ মে) ঈদের পরদিন সিলেটের জাফলং, রাতারগুল, লালাখাল, বিছানাকান্দি, জৈন্তাপুরের শাপলার বিলসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পটে খবর নিয়ে জানা গেছে অগণিত পর্যটক আগমনের খবর। সেই সঙ্গে সিলেট শহর লাগোয়া চা বাগান, হজরত শাহজালাল (র.) এর মাজার, শাহপরাণ (র.) জিয়ারতেও ভিড় করছেন মানুষ। এমন অবস্থায় অতীতের লোকসান পুষিয়ে ওঠার আশায় বুক বাঁধছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
সিলেট হোটেল ও গেস্ট হাউস ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সুমাত নূরী জুয়েল বলেন, অতীতে যে লোকসান হয়েছে তা পুষিয়ে উঠা কঠিন। লম্বা ছুটি থাকায় সিলেটে অগণন পর্যটক এসেছেন। আশা করছি অতীতের লোকসানের সঙ্গে কিছুটা সমন্বয় হবে।’
অপরদিকে সরেজমিনে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সীমান্তঘেঁষা ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর এলাকায় গিয়ে দেখা যায় মানুষের ভিড়। স্বচ্ছ জলে পর্যটকদের গা ভাসিয়ে দিতে দেখা গেছে।
এ সময় কথা হয় খুলনা থেকে আসা খায়রুন ফাতিমা কলি নামের এক পর্যটকের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘প্রথমবারের মতো সিলেট ঘুরতে এসেছি। কিন্তু এখানে আসার পর গাড়ির ভাড়াও মনে হচ্ছে অনেক বেশি। অটোরিকশা রিজার্ভ নিয়ে এসেছি ২ হাজার ৭০০ টাকায়। তা ছাড়া খাবারের দামও মাত্রাতিরিক্ত।’
ঈদের পরদিন সিলেটের জাফলং গিয়ে দেখা যায় মানুষের ঢল। উপভোগ করছেন ভারতের মেঘালয়ের মুগ্ধ করা দৃশ্য আর পিয়াইন নদীর স্বচ্ছ জলে গা ভাসিয়ে দিচ্ছেন মনের আনন্দে।
ঢাকা থেকে ঘুরতে এসেছেন পাপিয়া সুলতানা। তিনি বলেন, ‘গত দুবছর করোনার কারণে ঘর থেকেই বের হওয়া যায়নি। বলতে গেলে হাঁপিয়ে উঠেছিলাম। এবার করোনা নেই, ছুটিও লম্বা। তাই ঘুরতে এসেছি। অনেক ভালো লাগছে।’
কিশোরগঞ্জ থেকে পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসেছিলেন কায়ুম বিল্লাহ নামের এক ব্যাংক কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘ঈদের ছুটি বেশি থাকায় পরিবার নিয়ে ঘুরার সুযোগ হয়েছে। তাই ঘুরতে এসেছি। এখানকার সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ।’
একই অবস্থা ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর এলাকায়। দীর্ঘদিন থেকে পাথর উত্তোলন বন্ধ ও রোজার মাসে সাদা পাথর পর্যটকশূন্য থাকায় আপন রূপ ফিরে পেয়েছে সাদা পাথর এলাকা। আর এ সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ আগত পর্যটকরা। ভালো ব্যবসায় সন্তুষ্ট ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাও।
জাফলং সংগ্রাম পুঞ্জির পর্যটন ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সেলিম আহমদ বলেন, ‘গত দু’বছর নীরবেই কেটেছে। করোনা শেষ হওয়ার পরও তেমন পর্যটক না আসায় ব্যবসা ভালো হয়নি। কিন্তু এবার প্রচুর পর্যটক আসছেন, এতে ব্যবসাও ভালো হচ্ছে।’
অপরদিকে বাড়তি পর্যটকদের কথা বিবেচনায় নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন টুরিস্ট পুলিশ জাফলং সাব জোনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রতন শেখ।
তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন এক থেকে দেড় লাখ পর্যটক জাফলং এলাকাতেই আসছেন। তাই এসব পর্যটকের জন্য বিবেচনায় আলাদাভাবে নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কোনো দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে সেটিও লক্ষ রাখা হচ্ছে।
ডিএস