পাহাড়ি ঢলে ছাতকে বন্যা, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
প্রকাশিত হয়েছে : ১৭ মে ২০২২, ১:২৬ অপরাহ্ণ
ছাতক প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জের ছাতকে টানা এক সপ্তাহ’র ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে বন্যা দেখা দিয়েছে। প্লাবিত হয়ে পড়েছে উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে উঁচু জমিতে চাষ করা কয়েকশত একর বোরো ফসল।
সোমবার (১৬ মে) বিকাল পর্যন্ত উপজেলার সুরমা, পিয়াইন ও চেলা নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় এখানকার বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারন করার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
সরজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পৌরসভাসহ উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। ইতোমধ্যে বন্যায় তলিয়ে গেছে বহু রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বীজতলা ও শত শত একর উঁচু জমির বোরো ফসল। শহরের নিচু এলাকার বাসাবাড়িতে বন্যার পানি ঢুকেছে। কাচা ও আধাপাকা বসতবাড়িতে পানি উঠে পড়ায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়েছে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় ওইসব প্রতিষ্ঠান সাময়িক বন্ধ করার ঘোষনা আসতে পারে বলে স্থানীয় শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে।
সুরমা, চেলা ও পিয়াইন নদীর পানি প্রবল বেগে প্রবাহিত হওয়ায় নৌপথে ছোট ছোট নৌকা চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। কয়েকটি ষ্টোন ক্রাশার মিল, পোল্টি ফার্ম ও মৎস্য খামারে বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। ভারী বর্ষণ ও বন্যার পানি উঠে পড়ার কারণে শহর এলাকায় থাকা সকল ক্রাশার মিল বন্ধ রাখা হয়েছে। নদীতে কার্গো লোডিং আন লোডিং বন্ধ হয়ে পড়েছে। ওই কারনে শত শত শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন।
এছাড়া বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার। এসব হাট বাজারে বেচা কেনায় চরম ভাটা পড়েছে। বন্যা প্লাবিত এসব এলাকায় গো খাদ্যের অভাবে গৃহপালিত পশু নিয়েও চরম বিপাকে রয়েছেন বানবাসী লোকজন। উজানে প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারনে নদীতে ব্যাপক হারে পানিবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।
গত ২৪ ঘন্টায় ভারতের চেরাপুঞ্জিসহ আশপাশ এলাকার ৫৪০ মি.মি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, সুরমা-মেঘনা স্টেশনে ২৬৮, সুরমা নদীর পানি ছাতক পয়েন্টে বিপদসীমার ২২ সে.মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে বন্যার পানিতে ছাতক-সিলেট সড়কের কয়েকটি স্থান তলিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে দেশের সাথে এখানের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। ইতিমধ্যে উপজেলা সদরের সাথে ইসলামপুর, চরমহল্লা, ভাতগাঁও, সিংচাপইড়সহ অন্তত ৮টি ইউনিয়নের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মামুনুর রহমান জানান, বন্যা হতে পারে এমন পূর্বাভাস জনসাধারণকে আগেই জানিয়ে দেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য বিভিন্ন প্রস্তুতিও সম্পন্ন করা হয়েছে।
ডিএস