‘আত্নহত্যা রুখতে’ পদক্ষেপ
প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ মে ২০২২, ৯:৪০ পূর্বাহ্ণ
ফারজানা আক্তার মৃদুলা: সবচেয়ে ঘৃনতম আর নিঃকৃষ্ট কাজ হচ্ছে আত্মহত্যা। তা আমরা সকলেই জানি ও মানি।
কিন্তু তার পরেও অনেকেই ধরা দেয় সেই ঘৃনতম অপরাধের কাছে,।
বর্ধিত জীবনে যেসব অনাকাংঙ্খিত পরিস্থিতি স্থায়ী এবং অসহ্য মনে হলে কিছু মানুষ তা থেকে পালিয়ে যাওয়ার উপায় হিসেবে আত্মহত্যা করে।কিন্তু কেন? আত্মহত্যা কি কোন সমাধান? মোটেও নয়।
প্রশ্ন হচ্ছে, মানুষ কেন এত আত্মহত্যা করছে? বা কেন এই আত্মহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘মানসিক চাপ, হতাশা, আত্মবিশ্বাসের অভাব, অবসাদ ও হেনস্থার শিকার হয়ে মানুষ আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে।’
সম্প্রতি অনেক কিশোর-কিশোরী এটিকে আইডল হিসেবেও অনুসরণ করছে। পাবজি, ফ্রি ফায়ার খেলার জন্য মোবাইল ফোন অথবা শখের জামা বা মোটর বাইক এছাড়া অন্য কোনো শখের বস্তু কিনে না দেওয়ার আবদার পূরন করে না বলে, অভিভাবকের ওপর ক্ষোভ মেটাতে অনেক কিশোর বয়সিরাও আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।
এমনকি যেকোনো পরীক্ষায় আশানুরূপ ফলাফল করতে না পেরেও আত্মহত্যার ঘটনা চারপাশে অবিরত ঘটছে।
এছাড়া ও আত্মহত্যার কারণগুলো হয়ে থাকে ব্যক্তিগত জীবনে একাকীত্ব, পারিবারিক সম্পর্কের অবনতি, ঋণগ্রস্ততা বা অর্থনৈতিক অসচ্ছলতা , পরিবারে অভাব মেটাতে, ব্যর্থতা ইত্যাদি। চারপাশে আত্মহত্যার মত এই ভয়াবহতা দেখে আমাদের সকলের উচিৎ ছিল দায়িত্বশীল ভূমিকা রেখে জনসাধারণকে এই ঘৃনতম ভয়ানক ব্যাধি থেকে বাঁচানো।
কিন্তু না ! এই বিষয়ে কোন জোড়ালো ভূমিকা নিতে কেউ রাজী নয়।
বরং খবরের পাতায় এমন খবরটি আসলে বলি ইস কেন যে করলো আহা তাজা প্রাণটা ইত্যাদি।
শিক্ষার্থীসহ অনেকেই আত্মহত্যার জন্য নানান কারণকে দায়ী করে থাকে। প্রেমঘটিত টানাপোড়েন, পারিপার্শ্বিক মনোমালিন্য, আর্থিক সংকট, মানসিক চাপ, পারিবারিক সম্পর্কের অবনতি, মাদকাসক্ত, পড়াশোনা গ্যাপ, দীর্ঘ সময় গৃহবন্দি, নিঃসঙ্গতা ইত্যাদি।
এদিকে যোগ হয়েছে দীর্ঘ দুই বছরব্যাপী চলা করোনাভাইরাসের প্রকোপ। ভাইরাস সংক্রমণ রোধকল্পে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো দফায় দফায় বন্ধ দেয়ার বিষয়টিতেও শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ভয়াবহরূপে। এরফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রকোপ তুলনামূলক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
সম্প্রতি আমাদের সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রী হোস্টেলের ১ ছাত্রীর আত্নহত্যা যেনো পরিবেশটা আরো ধুসর করে ফেলেছে।
কিন্তু কেনো এত সুন্দর জীবন আমরা নিজ থেকে নিঃশেষ করবো? আত্নহত্যা কোন সমাধান নয় বরং লড়াই করে জীবনকে অগ্রসর করে বেঁচে থাকতে পারাটাই সার্থকতা।
এই আত্নহত্যার মিছিল থামাতে এখনি জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া অতি আবশ্যক।
রাষ্ট্রীয়ভাবে, সামাজিকভাবে এবং ধর্মীয়ভাবে এমন কিছু সভা, সেমিনার করতে হবে ।যেখানের সুপরামর্শে এই পথে ধাবিত মানুষগুলো নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করতে শিখবে। এবং আত্নহত্যা নামক কালো শব্দটি বিলিন হবে।
সাংবাদিক ও কলাম লেখক