‘জলসম্পদকে কাজে লাগিয়ে সিলেট অঞ্চলে মৎস্য বিপ্লব সম্ভব’
প্রকাশিত হয়েছে : ১২ জুন ২০২২, ৪:০৮ অপরাহ্ণ
দৈনিকসিলেডিটকম: সিলেটে আয়োজিত এক সেমিনারে জলসম্পদকে কাজে লাগিয়ে এ অঞ্চলে মৎস্য বিপ্লব সম্ভব বলে বিশেষজ্ঞ পর্যায় থেকে অভিমত ব্যক্ত করা হয়েছে।
আরও অভিমত রাখা হয়েছে, এই সম্ভাবনা কাজে লাগাতে প্রয়োজন প্রশাসন ও জনগণের যৌথ উদ্যোগ, সামাজিক আন্দোলন, সঠিক নেতৃত্ব ও দিকনির্দেশনা। এ ক্ষেত্রে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় মৎস্যসম্পদ গবেষণাগার হতে পারে।
শনিবার সকালে জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় ‘সিলেট জেলায় মৎস্য চাষ সম্প্রসারণে চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ বিষয়ক এই সেমিনারের আয়োজন করে।
মহানগরীর সাগরদিঘিরপাড় এলাকায় মৎস্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন, মৎস্য বিভাগের সিলেট বিভাগীয় উপপরিচালক ড মো মোতালেব হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন, জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক মো আহসান হাসিব খান। সভাপতিত্ব করেন, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো আবুল কালাম আজাদ। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিসারিজ বায়োলজি এন্ড জেনেটিক্স বিভাগের অধ্যাপক ড নির্মল চন্দ্র রায়। সঞ্চালনায় ছিলেন, সিলেট সদর উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা দ্বিজ রাজ বর্মণ।
প্রধান অতিথি উপপরিচালক ড মো মোতালেব হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার মৎস্যবান্ধব। বাংলাদেশ বিশ্বে মৎস্য আহরণে তৃতীয় আর উৎপাদনে চতুর্থ স্থানে রয়েছে। তবে মৎস্য সংরক্ষণ আইন না মানলে উৎপাদন আর বাড়বেনা। এছাড়া নিষিদ্ধ উপকরণ দিয়ে মাছ ধরা বন্ধ করতে হবে; কিন্তু পর্যাপ্ত জনবলের অভাবে অনেক কিছুই করা যাচ্ছেনা।
বিশেষ অতিথি জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক মো আহসান হাসিব খান বলেন, মাছ উৎপাদনের উৎসগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। পুুকুরগুলোতে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করা যেতে পারে। জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে স্থানীয় প্রজাতির মাছ চাষের উপর গুরুত্ব দিতে হবে।
সভাপতি বক্তব্যে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো আবুল কালাম আজাদ লোকবল বৃদ্ধি ও জনসচেতনতার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
অধ্যাপক ড নির্মল চন্দ্র রায় আকস্মিক বন্যা, বাসস্থান পরিবর্তন ও বর্ধিতকরণ, পলি, অপরিকল্পিত বাঁধ, অতি আহরণ, গুণগত মানসম্পন্ন পোনার অভাব, অবহেলিত জনগোষ্ঠী, দারিদ্র, শিল্পায়ন, জলবায়ু পরিবর্তন, কম বাজারমূল্য, ত্রুটিপূর্ণ বাজারজাতকরণ ব্যবস্থা, ক্ষতিকারক মাছধরা উপকরণ, সামাজিক দ্বন্দ্ব, উদ্যোক্তার অভাব ইত্যাদিকে সিলেট অঞ্চলে সম্ভাবনা সত্ত্বেও মাছের উৎপাদন আশানুরূপ না হওয়ার কারণ বলে উল্লেখ করেন।
তিনি প্রতিবছর অন্তত ২ মাস মুক্ত জলাশয়ে মাছ ধরা বন্ধ রাখার এবং এই সময় মৎস্যজীবীদের জন্যে বিকল্প কর্মসংস্থানের পরামর্শ দেন।
সেমিনারে বিভিন্ন বক্তা সিলেট অঞ্চলে মৎস্যসম্পদের উন্নয়নে অঞ্চলভিত্তিক আলাদা পরিকল্পনা গ্রহণের পক্ষে মত দেন।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক মো আরিফ হোসেন, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি আল আজাদ, সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকী,সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি মুহিত চৌধুরী এবং কলামিস্ট আফতাব চৌধুরী,প্রমুখ।