সিলেট-সুনামগঞ্জে ভয়াবহ বন্যা, উৎকন্ঠায় প্রবাসীরা
প্রকাশিত হয়েছে : ২০ জুন ২০২২, ৬:৩৯ অপরাহ্ণ
শাহীন আহমদ : সৌদি আরবে বসবাস করেন সিদ্দিকুর রহমান সুমন। বাড়ি বাংলাদেশের সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলায় বৃহস্পতিবার থেকে উৎকণ্ঠায় দিন পার করছেন। বন্যায়তার বাড়িও তলিয়ে গেছে। সুনামগঞ্জে বন্যার কারণে বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় দেশের স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না তিনি।
তিনি বলেন, আমাদের বাসায় বন্যার কোমর পানি, মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় ইন্টারনেটও নেই। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযােগ করতে পারছি না। তিনি বলেন আমার জীবন এমন ভয়াবহ বন্যা কখনো দেখেনি। আমার পরিবার ও আত্বীয়জনের কারো কাছে প্রায় ৪ দিন ধরে কোনোরকম যোগাযোগ করতে পারি না তাই আমি তাই আমার চরম খারাপ হয়েছে।
শুধু তিনি না প্রবাসে বসবাসকারী সিলেট অঞ্চলের সবাই দুশ্চিন্তায়, উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন। প্রতি মুহূর্তে ভয়াবহ বন্যায় আক্রান্ত সিলেট, সুনামগঞ্জের স্বজনদের খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করছেন তারা।
ইতালী প্রবাসী সিরাজুল ইসলাম বলেন, চার দিন ধরে উৎকণ্ঠায় কাটছে প্রতিটি মুহূর্ত। দেশে আমার বাসাবাড়ি সব বন্যার পানিতে নিমজ্জিত, অনেক চেষ্টা করে পরিবারের কারো কোনো খবর পাচ্ছি না। দেশের সরকারের কাছে দাবি জানাই, যারা বন্যায় আক্রান্ত তাদের যেন আশ্রয়, খাবারের ব্যবস্থা করেন। মোবাইল নেটওয়ার্কটা সচল করেন, যাতে আমরা দুশ্চিন্তায় থাকা স্বজনরা যোগাযোগ করতে পারি। আমরা প্রবাসীরা বন্যা দুর্গতদের সহায়তার জন্য প্রস্তুত আছি।
আরো এক প্রবাসী ফেইসবুকে লিখেছেন, আমার স্মরণকালে এমন ভয়াবহ বন্যা কখনো দেখিনি। আসলে এতবড়ো বন্যা হবে আমি কখনো ভাবিনি। আমার মনটা দেশে আর দেহটা প্রবাসে রয়েছে। পরিবারের সবাই যদি না বেচে তাহলে আমি প্রবাসে থাকার কোনো দরকার নেই। আজ চার দিন ধরে আমার ও আত্বীয়স্বজনের কারো কাছে এখন পর্যন্ত যোগাযোগ করতে পারছি না। আল্লাহ তাদের সাহায্য করুন।
পূর্ব লন্ডনের বাসিন্দা কলিম উদ্দিন বলেন, আমাদের সিলেট শহরের বাড়িতে বন্যার পানি ঢুকে গেছে। আমার বৃদ্ধ মা আর এক ছোট ভাই পানিবন্দি অবস্থায় রাত পার করছেন। আর পানি বাড়লে তাদের আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে হবে।
এদিকে বন্যায় আক্রান্তদের সহযোগিতারও উদ্যোগ নিচ্ছেন যুক্তরাজ্যে বসবাসকারী প্রবাসীরা। ঢাকা মেট্রপলিটন পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার এমডি। নাজমুল ইসলাম সিলেট বিভাগে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়ে ফেসবুকে লিখেছেন, যুক্তরাজ্য তথা ইউরোপের আর্থ-সামাজিব উন্নয়নে সিলেট অঞ্চলের মানুষের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তা ছাড়া যুদ্ধের কারণে ইউক্রেনের মানুষের যে দূরাবস্থা
তার চেয়ে কোনো অংশে কম নয়বন্যা কবলিত। এলাকার মানুষের। সমগ্র ইউরােপে বসবাসরত সিলেটি এবং ইউরোপের বিশেষ করে যুক্তরাজ্য সরকারকে এ বন্যা কবলিত ভাগ্য বাড়িয়ে মানুষের পাশে থাকার আহ্বান জানাই। আমরা বারমিংহ্যাম থেকে এ বিষয়ে কাল থেকেই ক্যাম্পেইন শুরু করছি। আশেপাশে যারা আছেন আওয়াজ দিন। বাংলাদেশ, বাংলাদেশের সরকার, বাংলাদেশের জনগণের পাশে থেকে বিদেশ থেকেও আমরা কিছু করতে চাই।