হবিগঞ্জে পশুর হাটের নিরাপত্তায় এসপি’র মতবিনিময়
প্রকাশিত হয়েছে : ০৪ জুলাই ২০২২, ৯:৪৭ পূর্বাহ্ণ
নুর উদ্দিন সুমন: ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির পশুর হাটকে ঘিরে বিভিন্ন পর্যায়ে নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। জেলা উপজেলায় ঈদুল আজহা উপলক্ষে গরুর হাটগুলোর প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। পাশাপাশি আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও প্রস্তুত রয়েছে। গরুর হাটকেন্দ্রিক ছিনতাই, চাঁদাবাজি, পকেটমার, মলম পার্টি, অজ্ঞান পার্টি ঠেকাতে র্যাব ও গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা পোশাকে ও সাদা পোশাকে মাঠে কাজ করবে বলে জানিয়েছেন হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার এসএম মুরাদ আলী। রবিবার (২ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৫টায় জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে পশুর হাটের ইজারাদারদের সাথে মতবিনিময়কালে এ তথ্য জানান তিনি। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শৈলেন চাকমা এর সঞ্চালনায় হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার এসএম মুরাদ আলির সভাপতিত্বে জেলা উপজেলার পশুর হাটের ইজারাদারগন ও তাদের প্রতিনিধিগণ অংশ গ্রহন করেন। এ সময় ইজারাদারগণ পশুর হাটের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন। জেলায় স্থায়ী অস্থায়ী ৫৫টি পশুর হাট রয়েছে। জেলায় যেকটি গরুর হাট বসবে এর প্রত্যেকটিতে গোয়েন্দা সদস্যদের নিয়োজিত করা হয়েছে। তারা গরুর হাটকেন্দ্রিক নিরাপত্তা বিধানে কাজ করবে। বিশেষ করে ছিনতাইকারী ও অজ্ঞান পার্টির সদস্যদের ধরতে তারা কাজ করবে। গরুর হাটকেন্দ্রিক বিশৃঙ্খলা এড়াতে ডিবি পুলিশসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা বাহিনী বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করবে। এছাড়াও গোয়েন্দা পুলিশের কয়েকটি দল বাজারে জালটাকা সরবরাহকারীদের চিহ্নিত করার কাজ নজরদারি করছে। যাহাতে হাটগুলোতে জালটাকা ছড়িয়ে দিতে না পাড়ে। এতে সক্রিয় হয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ। পশুর হাট গুলোতে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে নজরদারি থাকবে। পেট্রোল টিমের টহল থাকবে সার্বক্ষণিক। যানজট ও নিরাপত্তার খাতিরে নির্ধারিত কিছু জায়গায় বোথ ও সিসি বসানোর উদ্যাগ নেয়া হয়েছে । পশুর হাটে আগতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে হাট সংলগ্ন এলাকায় মেডিক্যাল ক্যাম্প স্থাপনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোরবানির পশু পরিবহন, চামড়া পাচার রোধ, মলম পার্টি, জাল টাকার বিস্তার রোধ এবং ঘরমুখো মানুষের যাতায়াতকে নিরাপদ করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্ক থাকতে সবাইকে সজাগ থাকতে নির্দেশনা দেন পুলিশ সুপার। মহাসড়কের ওপর কোরবানির পশুর হাট বসতে না দেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছে পুলিশ। সীমান্তের বিভিন্ন পথে গবাদি পশুর প্রবেশ রোধে বিশেষ নজরদারি বাড়ানো হবে। কোরবানির পশুর চামড়া পাচার রোধে বিজিবিসহ সকল আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক থাকবে। প্রতিটি পশুর হাটে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করা হবে। ইজারাদার, ক্রেতা ও বিক্রেতাদের নিরাপত্তা বিধানে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রয়োজনীয় সকল কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। পুলিশ, আনসার ও র্যাবের পাশাপাশি সাদা পোশাকেও পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। পশুর হাটে হাসিল আদায়ের ব্যবস্থা স্বচ্ছ করার জন্য দৃশ্যমান জায়গায় বড় বড় ব্যানারে ‘হাসিলের হার’ টানিয়ে রাখতে হবে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত কোরবানির পশুবাহী যানবাহনে ট্রাকে চাঁদাবাজি বন্ধে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পশুর হাটে কোন ধরনের অনিয়ম করলে কাউকে ছাড় দেয়া হবেনা বলে হুশিয়ারী দেন পুলিশ সুপার এসএম মুরাদ আলী। ব্যবসায়ী তার পশুটি বিক্রির পর যেন টাকাসহ নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারেন সেজন্য জেলার সকল থানার অফিসার ইনচার্জদের কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়। আর ডাকাত ও ছিনতাইকারী প্রতিরোধে আগে থেকেই পুলিশ কাজ করছে। মূল উদ্দেশ্য হলো একজন কৃষক বলা ব্যবসায়ী তার পশুটি বিক্রির পর যেন টাকাসহ নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারেন। তিনি বলেন, আমরা হবিগঞ্জ জেলাবাসীকে ঈদ উদযাপন নির্বিঘেœ করতে পুলিশের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা প্রদান করবো। পুলিশের মোবাইল টিমের জেলা শহরসহ সকল উপজেলায় সার্বক্ষনিক নজরদারি থাকবে। লোক সমাগম বেশি হয়, এসব স্থানে আমাদের পুলিশ সদস্যরা নিরাপত্তা জোরদার করবে। মতবিনিময় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্ ) মাহমুদুল হাসান, হবিগঞ্জ সদর সার্কেল মাহফুজা আক্তার শিমুল, জেলা বিশেষ শাখার ডিআইও১ সৈয়দ মোস্তফা,সকল থানার অফিসার ইনচার্জগণসহ বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তা অংশ নেন