সিলেটে কোরবানীর পশুর হাটে ক্রেতা কম, দাম বেশি
প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ জুলাই ২০২২, ১০:১৮ অপরাহ্ণ
দৈনিকসিলেট ডটকম : ভয়াবহ বন্যায় ভেসেছিলো সিলেট। চারদিকে এখনো রয়েছে ক্ষয়ক্ষতির চিহ্ন। বানভাসিদের অনেকেরই এখনো ঘরে ফেরা হয়নি। পশু সম্পদেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে এখনো জমে উঠেনি বন্যা কবলিত সিলেটের কোরবানির পশুর হাট।
সিলেট নগরীর প্রধানতম পশুর হাট কাজিরবাজার এখনো জমে উঠেনি। সাধারণত ঈদের দুই দিন আগে সিলেটের হাট বাজারগুলো পুরোপুরি জমে উঠে। এবার আর সেই দৃশ্য নেই। বাজারে ক্রেতা কম, তবে দাম বেশি।
পশুর হাট কাজিরবাজার ঘুরে দেখা গেছে, এবার বাইরের জেলা থেকে বেপারিরা গরু নিয়ে আসেননি। তবে বাজার কর্তৃপক্ষ বলছে এখনো দুই দিন আছে, এর মধ্যে বাজারে গরুর সংখ্যা বাড়বে। ক্রেতাদের খুব একটা উপস্থিতি নেই। বাজারে মাঝারি থেকে শুরু করে বড় গরু দেখা গেলেও বিক্রেতারা দাম বেশি হাঁকছেন বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা।
দেখা গেছে, হাটে গরু বাঁধার জন্য খুঁটি গেড়ে বাঁশ বাঁধার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তবে এখনো বাজার ভরে উঠেনি। গরু নিয়ে চলছে ক্রেতা—বিক্রেতার মধ্যে দর কষাকষি।
অপরদিকে সিলেট নগরীর ৬টিসহ জেলায় সর্বমোট ৫১টি অস্থায়ী হাট ইজারা দেওয়া হয়েছে। একটা সময় অস্থায়ী বৈধ হাটের পাশাপাশি পুরো শহর অবৈধ হাটে রূপ নিতো। এবার এখনো সেই দৃশ্য চোখে পড়েনি। বৈধ হাটগুলোতেই গরুর সংখ্যা অতি নগণ্য।
সিলেট শহরতলীর টুকেরবাজার অস্থায়ী পশুর হাটে কিছু গরু নিয়ে এসেছেন বেপারি। আব্দুল মালিক নামের এই বেপারি বলেন, ১০টি গরু নিয়ে সিলেট এসেছেন। মাঝে মাঝে দু একজন ক্রেতা আসেন। তবে দাম করেই চলে যান। এখনো ক্রয় বিক্রয় শুরু হয়নি।
সিলেটের বিশ্বনাথের রামপাশার বাসিন্দা সোনা মিয়া জানান, তার ভাই প্রতিবছর তিনটি গরু কোরবানি দিতেন। এবার বন্যায় প্রচুর টাকার খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছেন। এরজন্য এবার একটি গরু কোরবানি দিবেন। গরু কিনতে এসে দেখছেন গরু মালিকরা দাম একটু বেশি হাঁকছেন।
সিলেটের সবচেয়ে বন্যা কবলিত কোম্পানীগঞ্জের খাগাইল বাজারের কৃষক আব্দুল বারী বলেন, বন্যার সময় গো খাদ্য ও রাখার জায়গায় না থাকায় দুটি গরু বিক্রি করে দিয়েছিলেন। একটি গরু নিয়ে বাজারে এসেছেন। তিনি দাম যাই হোক গরুটি বিক্রি করে দিবেন।
সিলেট নগরীর নোয়াখুররমখলা এলাকার বাসিন্দা হামিদুর রহমান বলেন, গতবারের তুলনায় একেকটি গরুর দাম ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা বেশি হাঁকছেন বিক্রেতারা। গত বছর যে গরু ৫০ হাজার টাকায় কেনা গিয়েছিল, সেসব গরু বিক্রিতে ৭৫ থেকে ৮০ হাজার টাকার নিচে বলছেন না।
অন্যদিকে বিক্রেতারা দাবি করছেন, গরুর খাবার খৈল, ভুষি, খড়, ঘাসের দাম যে বেড়েছে। এরজন্য বিক্রেতারা বাধ্য হয়েই দাম একটু বেশি বলছেন।
কাজিরবাজারের ম্যানেজার শাহাদত হোসেন লোলন জানান, বাজারে পর্যাপ্ত গরু রয়েছে। নগরীর বিভিন্নস্থানে অস্থায়ী বাজার হওয়ায় ক্রেতাদের জন্য দাম দর করতে একটু অসুবিধা হচ্ছে।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ—কমিশনার (মিডিয়া) বিএম আশরাফ উল্লাহ তাহের জানান, বৈধ হাট ছাড়া বাইরে কোথাও হাট বসতে দেওয়া হবে না। আইনশৃংখলা পরিস্থিতি ভালো। পুলিশ সর্বদা সতর্ক রয়েছে