ছুরিকাঘাতে বুলবুলের হার্ট ছিদ্র, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মৃত্যু
প্রকাশিত হয়েছে : ২৮ জুলাই ২০২২, ৬:১৪ অপরাহ্ণ
নিজস্ব প্রতিবেদক : ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে হার্ট ছিদ্র হয়ে গিয়েছিল শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বুলবুল আহমদের। তার বুকে করা আঘাতটি হার্ট ভেদ করে বেরিয়ে যায়। এছাড়া পিঠে, ডান হাতের বাহুতে আরেকটি আঘাত করা হয়। এছাড়া ডান হাতে ছিলা জখম ছিল।
ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান শামসুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, তার মৃত্যুর জন্য বুকে করা ছুরির আঘাতটিই যথেষ্ট। গভীরতম আঘাতটি হার্ট ছিত্র করে ফেলেছে। যে কারণে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়। এছাড়া পিঠে ও বাহুর আঘাতগুলোও গুরুতর ছিল।
তিনি বলেন, গত মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) নিহত শাবিপ্রবি শিক্ষার্থী বুলবুল আহমদের ময়না তদন্ত সম্পন্ন করা হয়। এরপর মরদেহ নিয়ে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। ময়না তদন্ত প্রতিবেদন একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তারা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করবেন।
গত সোমবার (২৫ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের গাজিকালু টিলায় বান্ধবী বাংলাবিভাগের ১ম বর্ষ ১ম সেমিন্টারের শিক্ষার্থী মার্জিয়া আক্তার উর্মিকে নিয়ে ঘুরতে গিয়েছিলেন বুলবুল আহমদ (২২)। তিনি শাবিপ্রবির লোকপ্রশাসন বিভাগের তৃতীয় (২০১৮-১৯ সেশন) বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি নরসিংদী সদরের চিনিশপুরম থানার নন্দিপাড়ার গ্রামের বাসিন্দা মো. ওহাব মিয়ার ছেলে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহপরাণ হলে ২২৮ নম্বর রুমে থাকতেন এবং ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন।
এ ঘটনায় গত সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার মুহাম্মদ ইশফাকুল হোসেন বাদী হয়ে জালালাবাদ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এরপর সন্দেহভাজন তিনজনকে আটক করে পুলিশ। ঘটনার তদন্তে কমিটি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও।
বুধবার বুলবুল খুনের রহস্য উদঘাটন নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এসএমপি পুলিশ। এসএমপির উপ কমিশনার আজবাহার আলী শেখ বলেন, বুলবুল হত্যার ঘটনায় মোট ৫ জনকে আটক করা হয়।ঘটনার পরপরই মঙ্গলবার ভোররাতে আটক করা হয় ৩ জনকে। তারা হলেন-ইউনিভার্সিটি সংলগ্ন টিলারগাঁও এলাকার বাসিন্দা বরিশাল জেলার বাঘাইল আটগল জারা গ্রামের জিন্নাত আলী মৃধার ছেলে ইব্রাহিম খলিল (২৭), সিলেট সদরের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস সংলগ্ন টিলারগাঁওয়ের লিলু মিয়ার ছেলে শরিফ (১৮) ও একই এলাকার আনিছ আলীর ছেলে আবুল হোসেন (১৯)।
তিনি বলেন, তাদের মধ্যে আবুল হোসেন পুলিশের কাছে হত্যার বর্ণনা দেয় এবং হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত চাকু ও নিহতের মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। এছাড়া হত্যার ঘটনায় সরাসরি জড়িত টিলারগাও এলাকার গোলাব আহমদের ছেলে কামরুল আহমদ (২৯) ও একই এলাকার মৃত তছির আলীর ছেলে মো. হাসানকে গ্রেফতার করা হয়। আর পূর্বে আটককৃত শরীফ ও ইব্রাহিমের হত্যায় কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই বলে জানান এসএমপির উপ কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ। তাদেরকে অভিভাবকদের হেফাজতে ছেড়ে দেওয়া হবে। এছাড়া বুধবার সন্ধ্যায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন আবুল হোসেন।