নারীদের সাদাস্রাব: কারণ ও প্রতিকার
দৈনিক সিলেট ডট কম
দৈনিকসিলেটডেস্ক: নারীদের নানা সমস্যার মধ্যে একটি হচ্ছে সাদাস্রাব। লিউকোরিয়া বা সাদাস্রাব হচ্ছে নারীদের একটি বিশেষ সমস্যা। নারীর জরায়ু থেকে এক ধরনের শ্বেত বর্ণের তরল স্রাব নির্গত হয়, যাকে লিকোরিয়া বলে। সংস্কৃত ভাষায় একে শ্বেতপ্রধারাও বলা হয়। যদিও নারীদের কমবেশি সবারই ভেজাইনা থেকে হালকা সাদাস্রাব বা লিকোরিয়া নিঃসৃত হয়। তাই অনেকে এটিকে তেমন গুরুত্ব দেন না।
অধিকাংশ স্রাব জীবন শৈলী ও শারীর বৃত্তীয় সংক্রান্ত, যার কোন চিকিৎসা প্রয়োজন হয় না। তবে যখন সাদাস্রাব নির্গত হওয়ার পরিমাণ খুব বেশি হয়, তখন বিষয়টি চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কেননা এ থেকে বিভিন্ন ধরনের রোগ হয়ে ভেজাইনাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। তবে প্রচুর পরিমাণে, রক্তে দাগ, দুর্গন্ধ যুক্ত, স্বাভাবিক রঙের না হলে গুরুত্বের সাথে দেখতে হবে।
সাধারণত, স্বাভাবিক স্রাব পাতলা এবং সামান্য চটচটে হয়। এটা অনেকটা সর্দির মত। সাধারণত যোনি সাদাস্রাবের পরিমাণ ডিম্বস্ফূটন এবং যখন মানসিক চাপের বৃদ্ধি, মাসিক চক্রে তারতম্য হয়।
স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয়, বয়সন্ধিকালে রক্ত চলাচল বেড়ে যায় ফলে নিঃসরণ-ও বেশি হয়, যৌন মিলনকালে, যৌন আবেগে, গর্ভাবস্থায়, শরীরের রাসায়নিক সমতা বজায় রাখতে এবং যোনির কোষগুলোকে সচল রাখতে ইস্ট্রজেন হরমোনের প্রভাবে সাদাস্রাবের নিঃসরণ হতে পারে।
এছাড়া মেয়ে শিশুর জন্মের প্রথম ৭-১০ দিনের মধ্যেও সাদাস্রাবে চাপ দিতে পারে।
মায়ের শরীরে যদি অত্যাধিক হরমোন থাকে তবেও সাদাস্রাব হতে পারে। সন্তান প্রসবের প্রথম কয়েকদিন-ও সাদাস্রাব বেশি হতে পারে। এছাড়া হস্তমৈথুন বা মাস্টারবেশন, অভুলেশন (ডিম্বাণু নিঃসরণ কালে) জন্ম বিরতিকরণ পিল ব্যবহার করলে এমনটা হতে পারে।
চলুন দেখে নেওয়া যাক লিকোরিয়ার কিছু কারণ-
অনেক নারীরই মাসিকের আগে সাদাস্রাব নির্গত হয়, সন্তান ধারণ করলে লিকোরিয়া নিঃসৃত হতে পারে, যৌন উত্তেজনার সময় এটি হতে পারে, অনেক সময় শিশুজন্মের পরও মায়ের অল্প সময়ের জন্য লিকোরিয়া হতে পারে এবং এর ব্যাপ্তি এক থেকে ১০ দিনের মতো হয়ে থাকেন, ভেজাইনাল ইনফেকশনের কারণে হতে পারে, যৌনবাহিত অসুখের কারণে হয়ে থাকে,ফাংগাস বা ছত্রাকের দ্বারা ভেজাইনা সংক্রমিত হওয়ার ফলে লিকোরিয়া হয়।
চলুন দেখে নেওয়া যাক সাদাস্রাব প্রতিরোধে করণীয়-
– কখনও খালি পেটে থাকা যাবে না।
– খুব বেশি জরায়ু চুলকালে কুসুম গরম পানিতে লবন দিয়ে, জরায়ুরর মুখ ভালো করে ধুতে হবে।
– জরায়ুরর মুখ সব সময় পরিষ্কার এবং শুকনো রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে জরায়ুর মুখ ভেজা থাকে বলেই বেশি ইনফেকশন হয়।
– স্যানিটারি ন্যাপকিন ৫ ঘণ্টা অন্তর বদলাতে হবে।
সাদাস্রাবে করণীয়-
– প্রতিদিন ২ চামচ টক দই খান।
– ভাজাপোড়া খাওয়া একদমই বাদ দিতে হবে।
– অ্যালার্জি যুক্ত খাবার পরিহার করতে হবে।
আর বেশি সমস্যা দেখে দিলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।