সুনামগঞ্জে চাঁদা উত্তোলন নিয়ে ৩ গ্রামবাসীর সংঘর্ষে আহত ৪০

দৈনিকসিলেট ডটকম :
সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে পাটলাই নদীতে বিআইডব্লিউটিএর চাঁদা উত্তোলন নিয়ে তিন গ্রামবাসীর লোকজনের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের প্রায় ৪০ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে গুরুতর আহত ২০ জনকে তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, ১০ জনকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতাল এবং ৫ জনকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজে প্রেরণ করা হয়েছে। অন্যান্যদের শ্রীপুর উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (২৪ অক্টোবর) সকাল ১০টায় শ্রীপুর বাজারে এই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটেছে।
সংঘর্ষে উভয় পক্ষের আহতরা হলেন, তরং গ্রামের রনিক, সম্রাট তালুকদার, লোকমান, নজির, রুখন, আনেয়ার হোসেন, কুড়েপাড়া গ্রামের সাবেক মেম্বার শাহনুর মিয়া, মোরাদ মিয়া, কবির মিয়া, মোরছালিন, তানজিল, তারিকুল, সামু,খলিল, হাসান মিয়া। অন্যান্য আহতদের পরিচয় সনাক্ত হয়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের পাটলাই নদীতে বিআইডব্লিউটিএর নামে নদীতে চলাচলকারী নৌযান থেকে গত কয়েক মাস ধরে চাঁদা তুলে আসছিলেন তরং ও নয়াবন্ধ গ্রামের সামাদ ও রিফাত গংরা। গত কয়েকদিন আগে বিআইডব্লিউটিএর লিজ গ্রহীতা আশ্ররাফুজ্জামান রনি তাদের বাতিল দিয়ে নতুন করে মন্দিয়া গ্রামের সাজিনুর মেম্বারের ছেলে জিলানী গংদের চাঁদা তুলার দায়িত্ব দেন। এই নিয়ে তাদের মধ্যে কয়েকদিন ধরে ফেসবুক ও মোবাইল ফোনে হুমকি ধামকি চলছিল। এরই জের ধরে গতকাল রবিবার (২৩ অক্টোবর) বিকালে সাজিনুরের ছেলে জিলানী সামাদ তালুকদারকে মোবাইল ফোনে হুমকি ও গালিগালাজ করেন। সোমবার সকালে তরং গ্রামের সামাদ তালুকদার ও শিবরামপুর গ্রামের আকিক মড়লের মধ্যে এই নিয়ে কথা-কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে তরং, শিবরামপুর ও কুড়েপাড়া গ্রামের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শ্রীপুর বাজারে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে প্রায় দুই ঘণ্টার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। সংঘর্ষ চলাকালীন সময়ে বাজারের দোকান পাট বন্ধ হয়ে পড়ে। বাজারের বেশ কয়েকটি দোকানঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বর্তমানে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বাজার এলাকায় পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে।
শ্রীপুর বাজার বনিক সমিতির সভাপতি মতিউর রহমান বলেন- পাটলাই নদীতে বিআইডব্লিউটিএর চাঁদা উত্তোলন নিয়ে বাজারে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের প্রায় ৪০ জন আহত হয়েছে।
সংঘর্ষে বাজারের ব্যবসায়ীদের অনেক ক্ষতি হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন- অনেকের দোকানঘর ভাংচুর করা হয়েছে। এতে ব্যবসায়ীরা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
বিকাল ৪ টার দিকে পাটলাই নদীর বিডব্লিউটিএর ইজারাদার আশ্রাফুজ্জামান রনির নাম্বারে একাধিক বার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
তাহিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সৈয়দ ইফতেখার হোসেন বলেন- সংবাদ পেয়েই ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বাজারে পুলিশ রয়েছে।