স্বাস্থ্য
যে কারণে নারীদের মধ্যে বাড়ছে হৃদরোগের ঝুঁকি

দৈনিকসিলেটডেস্ক
আগে পুরুষরাই বেশি আক্রান্ত হতো হৃদরোগে। কিন্তু বর্তমানে চিত্রটা একটু ভিন্ন । এখন নারীদের হৃদরোগে আক্রন্ত হওয়ার ঘটনাও বেড়ে চলছে। প্রজননক্ষম সময়ে নারীর ‘করোনারি হার্ট ডিজিজ’-এ আক্রান্ত হওয়ার ভয় কম।
তখন মেয়েদের শরীরে ইস্ট্রোজেন হরমোনের উৎপাদন ঠিক থাকে। হৃদ্রোগ আটকাতে সাহায্য করে সেই হরমোন। তবে বয়সের সঙ্গে সঙ্গে ইস্ট্রোজেনের পরিমাণ কমতে থাকে। ফলে হৃদ্রোগ বাসা বাঁধে নারী শরীরে। কেন নারীদের হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে?
**উপসর্গ ধরতে না পারা
জানেন কী পুরুষ এবং মহিলাদের মধ্যে হৃদ্রোগের উপসর্গগুলি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আলাদা। নারীর ক্ষেত্রে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হওয়ার আগে বুকে ব্যথার মতো উপসর্গ দেখা যায় না। ক্লান্তি, শ্বাসকষ্ট, কাঁধ ও ঘাড়ে ব্যথার মতো উপসর্গগুলিই দেখা দেয়। তাই অনেক সময় চিকিৎসকরা ধরতে পারেন না আসলে ওই নারীর সাথে কী ঘটছে। হার্টের কোন সমস্যা ধরতেও দেরি হয়। বেশিরভাগ নারীদের এই সমস্যা ধরা পরে ৩০ বা ৪০ বছর বয়সে।
** জৈবিক পার্থক্য
পুরুষদের তুলনায় নারীদের ধমনী ছোট থাকে। তাই করোনারি ধমনীর রোগ ভিন্নভাবে বা আরো বিস্তৃতভাবে প্রকাশ পায়। এছাড়াও,নারীদের মধ্যে সিএডি বা যে ধমনীগুলো হৃদপিন্ডে রক্ত সঞ্চালন করে সেগুলো সংকুচিত বা বন্ধ হয়ে যাওয়ার প্রবণতা দেখা দেয়। ফরে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে। এনজিওগ্রাম করলেও অনেক সময় সিএডি ধরা পড়ে না।
** রক্তচাপ
অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় অনেক নারী উচ্চ রক্তচাপে ভোগে। এ সময়ে রক্তচাপ বেড়ে গেলে রক্তনালিকাগুলি দিয়ে রক্ত ও অক্সিজেন পর্যাপ্ত মাত্রায় মস্তিষ্কে পৌঁছাতে পারে না। এ ক্ষেত্রে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
** ধূমপান
ধূমপান বাড়িয়ে দেয় হৃদ্রোগের আশঙ্কা। এছাড়া অতিরিক্ত মদ্যপানও বাড়িয়ে দেয় ঝুঁকি।
**মানসিক চাপ
মানসিকচাপ এখন একটি বড় কারণ নারীদের মধ্যে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি। শরীরকে সুস্থ রাখতে দৈনিক ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুম অবশ্যই প্রয়োজন। কর্মব্যস্ততা এবং অবসাদের কারণে অনেক মহিলাই অনিদ্রার সমস্যায় ভোগেন। এতেও কিন্তু ঝুঁকি বাড়ে হার্ট অ্যাটাকের। ভেতরে ভেতরে সব শেষ করে দেয় কিন্তু বুঝতেও পারা যায় না। তাই সতর্ক থাকতে হবে।
** কিছু সমস্যা
ডায়াবিটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ও উচ্চ কোলেস্টেরলের সমস্যা থাকলে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। ফলে রক্তনালিকাগুলো সঙ্কুচিত হয়ে পড়ে। রক্ত প্রবাহে বাধা তৈরি হয়। ফলস্বরূপ হৃদ্যন্ত্রের উপর চাপ পড়ে। কার্ডিয়োভাস্কুলার রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা বেড়ে যায়।
**সঠিক যত্ন
আর একটি কারণ হলো সঠিক সময়ে সঠিক যত্ন। নিজের স্বামী বা অন্য করো এই অবস্থা হলে সাথে সাথে নিজেই হয়ত হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু নিজের জন্য এই এই কাজ সহজে করতে চান না নারীরা। তাছাড়া সমাজেও নারীদের অবস্থানের কারণে এমন হয় অনেক সময়। সহজেই ডাক্তারের কাছে নিতে চান না অনেকেই।
সূত্র : বিউমন্ট।