সিলেটে এক নারীর সাথে পুলিশ কর্মকর্তার ‘প্রতারণা’, নাটক সিনেমাকে হার মানিয়েছে

দৈনিকসিলেটডেস্ক
নাটক কিংবা সিনেমায় অনেক সময় দেখা যায় নকল বাবা-মা। নিজেকে ধনী এবং বড়লোক হিসেবে জাহির করতে রাজনৈতিক নেতা অথবা মন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয় দেয়া হয়। বাস্তব জীবনে এ ধরনের ঘটনা সচরাচর দেখা না গেলেও
মানিকুল ইসলাম নামে এক পুলিশ কর্মকর্তা এমনি একটি প্রতারণার জন্ম দিয়েছেন যা নাটক সিনেমাকে হার মানিয়েছে।
মানিকুল ইসলাম নিজেকে সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার আমিনুল হকের আপন ছোট ভাই পরিচয় পরিচয় দিয়ে সিলেটের এক নারী চিকিৎসককে বিয়ে করেন।
ওসমানীনগরের এই নারী চিকিৎসককে বিয়ের পর জানা গেলো, ওই পুলিশ কর্মকর্তা আসলে মন্ত্রীর ভাই নন। স্ত্রীর কাছ থেকে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিতে তিনি এ প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন। পরে এ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন স্ত্রী। এ ঘটনায় তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
গত ১ অক্টোবর সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানায় মানিকুলের বিরুদ্ধে মামলা করেন ভুক্তভোগী নারী।
স্থানীয় ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালে মানিকুল সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার বাসিন্দা ওই নারী চিকিৎসককে বিয়ে করেন। নারী চিকিৎসকের আগে একটি বিয়ে হয়েছিলো। কানাডা প্রবাসী স্বামীকে ডিভোর্স দিয়ে তিনি মানিকুলকে বিয়ে করেন। বিয়ের আগে মানিকুল নিজেকে সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার আমিনুল হকের আপন ছোট ভাই পরিচয় দেন এবং নকল বাবা-মা দিয়ে ওই চিকিৎসক নারীর বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব পাঠিয়েছিলেন।
মানিকুল নকল বাবা-মার মাধ্যমে বিয়ের আগে জানিয়েছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স-মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেছেন, তাঁর আরেক ভাই ব্রিটিশ কাউন্সিলের উচ্চপদে কর্মরত এবং রাজধানীতে তাদের রয়েছে অঢেল সম্পত্তি। এছাড়াও তৈরি করেন ভুয়া শিক্ষা সনদ।
বিয়ের পর একপর্যায়ে স্ত্রীর কাছে ধরা পড়ে মানিকুলের আসল পরিচয়। কিন্তু তত দিনে চিকিৎসক স্ত্রীর কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন ২০ লাখ টাকা। সব জানাজানি হলে ৫০ লাখ টাকা যৌতুকের জন্য চিকিৎসক স্ত্রীকে নির্যাতন শুরু করেন তিনি। শেষ পর্যন্ত আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হন ভুক্তভোগী নারী।
সিলেটের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ বলেন, ‘মানিকুল ইসলাম সিলেটে কর্মরত থাকতে এসআই ছিলেন। এখন তিনি ওসি। তিনি বরিশাল রেঞ্জে সংযুক্ত আছেন। চিকিৎসক স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
অভিযুক্ত মানিকুল ইসলাম রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার বাসিন্দা। সিলেটে কর্মরত থাকাবস্থায় তিনি উপ-পরিদর্শক (এসআই) ছিলেন। পরে পদোন্নতি পেয়ে হন পরিদর্শক। সাময়িক বরখাস্তের আগে মানিকুল একটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ছিলেন।