নবজাতকের মাথা মুণ্ডানো নিয়ে ইসলাম কী বলে

মুফতি আবদুল্লাহ নুর
জন্মের সপ্তম দিন আকিকার পশু জবাই করার আগে নবজাতকের মাথা মুণ্ডানো মুস্তাহাব। তারপর কর্তিত চুলের ওজন পরিমাণ স্বর্ণ বা রৌপ্য অথবা তার মূল্য দান করাও মুস্তাহাব। নাতি হাসান ইবনে আলী (রা.)-এর ব্যাপারে নবীজি (সা.)-এর আমল এমনই ছিল।
মাথা কেন মুণ্ডাতে হয় : আল্লামা ইবনুল কায়্যিম (রহ.) বলেন, নবজাতকের মাথা মুণ্ডানোর উপকার হলো, এর দ্বারা শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি পায়, চুলের গ্রন্থি খুলে যায় এবং এতে চুলের উৎসস্থলে ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
একইভাবে তা দৃষ্টিশক্তি, ঘ্রাণশক্তি ও শ্রবণশক্তি বৃদ্ধি করে। (তারবিয়াতুল আউলাদ ফিল ইসলাম : ১/৬৮)
হাদিসে চুলকে নবজাতকের জন্য কষ্টকর বস্তু হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, প্রত্যেক নবজাতকের পক্ষ থেকে একটি করে আকিদা জরুরি, তোমরা তাদের পক্ষ থেকে পশু জবাই করবে এবং তাদের থেকে কষ্টদায়ক বস্তু (চুল) দূর করবে। (সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ৪২১৪)
মুণ্ডানোর পর দুই করণীয় : নবজাতকের চুল মুণ্ডানোর অভিভাবক দুটি কাজ করবে। তা হলো—
১. মাথায় সুগন্ধি লাগানো : আবু বুরায়দা (রা.) বলেন, জাহেলি যুগে আমাদের কারো সন্তান হলে তার জন্য ছাগল জবাই করা হতো এবং পশুর রক্ত দ্বারা নবজাতকের মাথা রঞ্জিত করা হতো। পরে আল্লাহ আমাদের দ্বিন ইসলাম দ্বারা ধন্য করলেন। তখন আমরা নবজাতকের আকিকার জন্য ছাগল জবাই করতাম, তার মাথা মুণ্ডিয়ে দিতাম এবং মুণ্ডিত মাথায় জাফরান মাখিয়ে দিতাম। (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ২৮৪৩)
২. সদকা করা : মাথা মুণ্ডানোর পর নবজাতকের চুলের ওজনে স্বর্ণ বা রৌপ্য অথবা তার মূল্য দান করাও অভিভাবকের দায়িত্ব। আলী (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) হাসানের পক্ষ থেকে একটি ছাগল দ্বারা আকিকা করেছিলেন আর বলেছিলেন, হে ফাতিমা! হাসানের মাথা মুণ্ডিয়ে দাও আর তার চুলের সমপরিমাণ ওজনে রুপা সদকা করে দাও। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ১৫১৯)
আল্লাহ সব শিশুকে সুন্দর জীবন দান করুন। আমিন।