আজ স্বপ্নের রানীগঞ্জ সেতু উদ্বোধন

জগন্নাথপুর সংবাদদাতা
সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে আজ সোমবার(৭ নভেম্বর) জগন্নাথপুরের রানীগঞ্জ সেতু উদ্বোধন হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকাল ১০টায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সেতুর উদ্বোধন করবেন।
সিলেট বিভাগের মধ্যে দীর্ঘতম এই সেতু জগন্নাথপুর উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়নের কুশিয়ারা নদীর উপর দেড়শ কোটি ব্যয়ে নির্মান করা হয়েছে।
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর স্বপ্নের রানীগঞ্জ সেতু উদ্বোধন কে ঘিরে বর্নিল সাজে সেজেছে রানীগঞ্জ। এ উপলক্ষে রানীগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জনসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
সভাস্থলে বর্নাঢ্য মঞ্চ তৈরী করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চ্যয়ালি সরাসরি যুক্ত হবেন। উপস্থিত থাকবেন স্থানীয় সংসদ সদস্য.পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান এমপি। অনুষ্ঠান মাঠে ১০ হাজার চেয়ার বসানো হবে। মঞ্চে ৩০ জন বিশিষ্ট নাগরিক বসবেন। মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিবিদ, সুশীল সমাজের বিশিষ্টজন,গণমাধ্যম কর্মী সকলের আলাদা আলাদা বসার গ্যালারি থাকবে। ঢাকা থেকে আগত শিল্পীরা অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশ করবেন। রানীগঞ্জ সাজসাজ রব বিরাজ করছে। উৎসবে মেতে উঠবে জগন্নাথপুরবাসী।
৭০২ দশমিক ৩২ মিটার দীর্ঘ এবং ১০ দশমিক ২৫ মিটার প্রস্থ এ সেতুর কাজ সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে
২০১৬ সালের ১১ আগস্ট শুরু হয়। কাজ পান ঠিকাদারী প্রতিষ্টান চায়না রেলওয়ে ২৪ ব্যুরো গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেড ২৪ বি এবং এমএম বিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড এমবিইএল। ২০১৯ সালের ১০ আগস্ট কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা ৬ বছরে এসে গত অক্টোবর মাসে সম্পন্ন হয়। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানায়, সেতুটির নির্মাণ কাজের প্রকল্প নকশা সংশোধন ও করোনা পরিস্থিতির জন্য এই বিলম্ব হয়েছে।
১৯৯৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুস সামাদ আজাদ পাগলা-জগন্নাথপুর-আউশকান্দি আঞ্চলিক মহাসড়কের কাজ শুরু করেন। ২০০১ সালে বিএনপিসহ চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় এলে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান ওই সড়কের অপ্রয়োজনীয় উল্লেখ করে সড়কের বরাদ্দ বন্ধ করে দিলে মহাসড়কের স্বপ্নের অকাল মৃত্যু হয়। পরে ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ পুনরায় ক্ষমতায় এলে সুনামগঞ্জ ৩ (দক্ষিণ সুনামগঞ্জ-জগন্নাথপুর) আসনের সংসদ সদস্য বর্তমান পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ওই আঞ্চলিক মহাসড়কের কাজ পুনরায় চালুর প্রচেষ্ঠা চালান। এক পর্যায়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অগ্রাধিকার তালিকা সবুজ পাতায় সড়কটি অন্তর্ভূক্ত করে একনেকে ৫২ কোটি টাকা অনুমোদন করান।
সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরেরর তথ্য মতে, ২০১৪ সালের ২৫ জুন একনেকের সভায় প্রধানমন্ত্রী এই সেতুর ১২৫ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন করেন। পরে ওই বছরের জুন মাসে সেতুর দরপত্র আহ্বান করা হয়। দরপত্রে অংশ নেয় দেশী-বিদেশী তিনটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। অবশেষে ২০১৬ সালের আগস্ট মাসে যৌথভাবে কার্যাদেশ পায় চায়না রেলওয়ে ২৪ ব্যুরো গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেড ২৪ বি এবং এমএম বিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড এমবিইএল। পরে ২০১৭ সালের ১৪ জানুয়ারি বর্তমান সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের স্থানীয় সংসদ সদস্য ও পরিকল্পামন্ত্রী এম এ মান্নানকে সাথে নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। নির্মাণকাজ সময়সীমা তিন বছর ও ১২৫ কোটি টাকা ব্যয়ের এ প্রকল্প পরবর্তীতে ধাপে ধাপে ব্যয় এবং সময় বাড়ানো হয়।
জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাজেদুল ইসলাম জানান,রানীগঞ্জ সেতু উদ্বোধনের পর গণপরিবহন
চলাচল শুরু হবে। তিনি জানান,এখন থেকে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যোগাযোগে কম সময় লাগবে। ঢাকার সঙ্গে দুরত্ব কমবে ৩ ঘন্টা। রানীগঞ্জ সেতু বাস্তবায়নে ভাটির অর্থনীতির চিত্র বদলে দেবে।