সিলেটে বিভাগের দীর্ঘতম সেতু
প্রথম ৩৩ ঘণ্টায় ১ লাখ টাকার টোল আদায়

শাহীন আহমেদ :
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার রাণীগঞ্জ সেতু নির্মাণের মধ্য দিয়ে খুলতে যাচ্ছে দক্ষিণের দুয়ার। নির্মাণকাজ শেষে প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে ১৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটি। সিলেট বিভাগের দীর্ঘতম এই সেতুটি উদ্বোধনের পর পরই সুনামগঞ্জ থেকে সরাসরি হবিগঞ্জ হয়ে ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে সৃষ্টি হবে এক নতুন অধ্যায়।
সুনামগঞ্জবাসীর এতোদিনের স্বপ্ন সিলেটের সর্ববৃহৎ সেতু কুশিয়ারা নদীর উপর নির্মিৎ রাণীগঞ্জ সেতু। সদ্য উদ্বোধন হওয়া এ সেতুটিতে ৩৩ ঘণ্টায় এক লাখ টাকার টোল আদায় করা হয়েছে বলে জানা গেছে।সোমবার রাত ১টা থেকে বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ২ হাজার ২০০টি গাড়ি থেকে এই টোল আদায় করা হয়।
সেতু কর্তৃপক্ষ জানান, প্রথম দিনে টোল আদায় করা হয় ৭৫ হাজার ২৩৭ টাকা। ৩৩ ঘণ্টায় সেতুর দক্ষিণ প্রান্তে সেতু পার হয়েছে ৯৬১টি যানবাহন। এ থেকে আয় হয়েছে ৫৬ হাজার ৬০ টাকা। সেতুর উত্তর প্রান্তে ৬৮৪ টি যানবাহন থেকে টোল আদায় করা হয় ৪৩ হাজার ৯৪০ টাকা।
সেতুর টোল প্লাজার দায়িত্বরত ম্যানেজার আব্দুল কুদ্দুস তালুকদার এ তথ্য নিশ্চিব করে বলেন, সেতু উদ্বোধনের পর থেকে যেসব যানবাহন চলাচল করেছে তার ৫০ শতাংশই মোটরসাইকেল ও ছোট গাড়ি। সে তুলনায় বড় যানবাহন অনেকটাই কম। ফলে চারটি কাউন্টারের মধ্যে দুইটি চালু রয়েছে। তবে যানবাহন চলাচল বৃদ্ধি পেলে বন্ধ থাকা অপর দুই কাউন্টারও চালু করা হবে।
উল্লেখ্য, গত সোমবার (৭ নভেম্বর) কুশিয়ারা সেতু ওপর নির্মিত সিলেট বিভাগের সবচেয়ে বড় রাণীগঞ্জ সেতু উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে ২৫ লাখ সুনামগঞ্জবাসীর স্বপ্নের দুয়ার খুলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাণীগঞ্জ সেতুর প্রথম যাত্রী এম এ মান্নান
উদ্বোধনের পর প্রথম যাত্রী হিসেবে টোল দিয়ে রাণীগঞ্জ সেতু পার হন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান এমপি। পরে সারাদিন বিনা টোলে যানবাহন চলাচলের জন্য সেতুটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।
সোমবার (৭ নভেম্বর) রাত ১টা থেকে রানীগঞ্জ সেতুতে টোল আদায় শুরু হয়েছে।
রাণীগঞ্জ সেতুর দৈর্ঘ্য
রাণীগঞ্জ সেতুটির মোট দৈর্ঘ্য ৭০২ মিটার। এই সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালে। সেতুর এপারে হবিগঞ্জ ওপারে সুনামগঞ্জ। সেতু নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৯১ কোটি টাকা।
বাকি ব্যয় ধরা হয়, অ্যাপ্রোচ সড়ক, আধুনিক টোলপ্লাজা, কালভার্ট ও স্থানীয় ইটাখলা নদীর ওপর আরেকটি ছোট সেতু নির্মাণে।
এই সেতুটি নির্মাণের ফলে সিলেট থেকে ঢাকাগামী যাত্রীদের জন্য রাস্তা কমেছে প্রায় ৫৫ কিলোমিটার। এছাড়াও এ অঞ্চলের মানুষের দূর হবে দীর্ঘ দিনের ফেরির ভোগান্তি। সহজ হবে পণ্য পরিবহন।
হাওর জেলা সুনামগঞ্জে উৎপাদিত মাছ ও ফসল দ্রুত কম খরচে পৌঁছানো যাবে ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য জায়গায়। সড়ক যোগাযোগের পাশাপাশি উন্নত হবে সুনামগঞ্জের অর্থনীতি।
রাণীগঞ্জ সেতু দেখতে মানুষের ভীর
এদিকে রাণীগঞ্জ সেতুটি উদ্বোধনের পর থেকেই ভিড় করছেন স্থানীয় লোকজন। উদ্বোধনের আগে থেকেই এই সেতু দেখতে এসে ভীর করতে থাকেন এলাকার মানুষ। সিলেটে আরও অনেক সেতু থাকলেও রাণীগঞ্জ সেতুটি সবচেয়ে দীর্ঘ আর দৃষ্টিনন্দন।
তাছাড়া, উদ্বোধনের দিন পুরো দিন টোল ছাড়া সেতুর উপর দিয়ে যানবাহন চালানোরও সুযোগ দিয়েছিল সেতু কতৃপক্ষ।