দিরাই আ.লীগের সম্মেলনে সংঘর্ষ: চেয়ার ঢাল বানিয়ে রক্ষা পেলেন নেতারা

দৈনিকসিলেটডেস্ক
আ.লীগের সম্মেলনে ইটপাটকেল, চেয়ারকে ঢাল বানিয়ে রক্ষা পেলেন কেন্দ্রীয় নেতারা
দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত অর্ধশত নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। তাদের দিরাই হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় বিদ্রোহী গ্রুপের মোশাররফ ও রঞ্জন রায়কে তাৎক্ষণিকভাবে বহিষ্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
৮ বছর পর দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন সোমবার বিএডিসি মাঠে আয়োজন করা হয়। সকাল থেকেই উপজেলার বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন থেকে শত শত আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থক সম্মেলনে যোগদান করেন।
আমন্ত্রিত অতিথিরা মঞ্চে ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই বিদ্রোহী গ্রুপের সাবেক মেয়র মোশাররফ ও যুবলীগের সভাপতি রঞ্জন রায়ের নেতৃত্বে একটি মিছিল সম্মেলনস্থলে প্রবেশ করে মঞ্চ লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ও হামলা শুরু করে। এ সময় কেন্দ্রীয় নেতারা চেয়ার দিয়ে ঢাল বানিয়ে আত্মরক্ষা করেন। এ সময় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের প্রতিহত করার চেষ্টা করলে সংঘর্ষ বেধে যায়।
১০-১৫ মিনিটব্যাপী চলা সংঘর্ষে আহত হয়েছেন মঞ্চে থাকা কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য আজিজুস সামাদ ডন, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খায়রুল কবির রুমন, জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক আসাদুজ্জামান সেন্টু, কাউন্সিলর এবিএম মাসুম প্রদীপ, যোদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা শফিক মিয়া, হাসান মিয়া, এমরান, রেজা মিয়াসহ অন্তত ৫০ জন।
জানা যায়, সংঘর্ষের সময় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আজিজুল সামাদ আজাদ ডন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমান, সহ-সভাপতি মুহিবুর রহমান মানিক এমপি, সহ-সভাপতি নোমন বখত পলিন, সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম এনামুল কবির ইমন, স্থানীয় সংসদ সদস্য ড. জয়া সেনগুপ্ত, সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট শামীমা আক্তার খানমসহ কেন্দ্রীয় ও জেলার নেতারা মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। তারা চেয়ারকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে আত্মরক্ষা করেন।
দিরাই পৌরসভার সাবেক মেয়র মোশাররফ মিয়ার সমর্থকদের মঞ্চে উঠতে না দেওয়ায় সভা শুরুর পরপরই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়েছে বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।
পরে পুলিশ ও কেন্দ্রীয় নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। সংঘর্ষের পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ফের সম্মেলন শুরু হয়। উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট সোহেল আহমদের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ রায়ের পরিচালনায় সম্মেলনের কার্যকর শুরু করা হয়।
বক্তব্যের শুরুতেই জেলা আওয়ামী সভাপতি মতিউর রহমান এ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত বিদ্রোহী গ্রুপের মোশাররফ ও যুবলীগের সভাপতি রঞ্জন রায়কে বহিষ্কারের ঘোষণা দেন।
জেলা সভাপতি বলেন, মঞ্চে বসা বয়োবৃদ্ধ নেতাদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যকালে নূরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, শান্তিপূর্ণ সম্মেলনে যারা হামলা করে তারা আওয়ামী লীগের কেউ হতে পারে না, এরা জামায়াত বিএনপির প্রেতাত্মা। বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ যখন উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে তখন উন্নয়ন বিরোধীরা দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন অপপ্রচার চালাচ্ছে। গত পৌরসভার নির্বাচনে মোশাররফ মিয়া বিদ্রোহী প্রার্থী হলে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
দিরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল আলম বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় কয়েকজন আহত হয়েছেন।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু সাইদ বলেন, পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।