সাহিত্য সংস্কৃতি
পাপড়ি লেখক-পাঠক সম্মিলন ও সাহিত্য পুরস্কার প্রদান
দৈনিক সিলেট ডট কম
প্রকাশনা সংস্থা পাপড়ির ৬ষ্ঠ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে লেখক-পাঠক সম্মিলন ও পাপড়ি করামত আলী সাহত্যি পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠিত হয়েছে। সিলেটের কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের শহিদ সুলেমান হলে ২৫ নভেম্বর বিকেল সাড়ে তিনটা থেকে রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত এ সম্মিলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন আশির দশকের শক্তিমান কবি ও কথাসাহিত্যিক সোলায়মান আহসান। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক কবি মোঃ আমিনুল ইসলামের সভাপতিত্বে লেখক-পাঠকদের মিলনমেলায় সম্মানিত অতিথির বক্তব্য দেন প্রবীণ সাংবাদিক আফতাব চৌধুরী, আশির দশকের শক্তিমান কবি মুকুল চৌধুরী, কবি ও কলামিস্ট সালেহ আহমদ খসরু, গল্পকার সেলিম আউয়াল, ঐহিত্যবাহী ছড়া সংগঠন ছড়াপরিষদ সিলেটের সভাপতি মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান শাহীন এবং সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি মুহিত চৌধুরী। এর আগে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের সহসভাপতি দেওয়ান মাহমুদ রাজা চৌধুরী।
শিশুসাহিত্যিক মিনহাজ ফয়সল ও ছড়াকার নাঈমুল ইসলাম গুলজারের যৌথ উপস্থাপনায় অনুষ্ঠিত সম্মিলনের শুরুতে কুরআন তেলাওয়াত করেন মো. মোস্তাফিজুর রহমান। এরপর সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশিত হয়। স্বাগত বক্তব্য দেন পাপড়ির কর্ণধার কামরুল আলম।
লেখক-পাঠকদের এ মিলনমেলায় স্বরচিত ছড়া-কবিতা পাঠ, শুভেচ্ছা বিনিময় ছাড়াও পাপড়ি করামত আলী সাহিত্য পুরস্কার, পাপড়ি পা-ুলিপি পুরস্কার ও পাপড়ি বেস্ট সেলার অ্যাওয়ার্ড এবং পা-ুলিপি বিজয়ী সেরালেখক সম্মাননা প্রদান করা হয়। সারাদেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে লেখকগণ এই সম্মিলনে অংশগ্রহণ করেন। সম্মিলনে পাপড়ি-করামত আলী সাহিত্য পুরস্কার-২০২২ প্রদান করা হয়। এ বছর সার্বিক সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য ‘আজীবন সম্মাননা’ প্রদান করা হয় কবি কালাম আজাদকে। এছাড়া প্রবন্ধ ও গবেষণায়, আশীষ দে, কবিতায় তানভীর সিকদার, কথাসাহিত্যে মাহফুজ জোহা এবং শিশুসাহিত্যে মিনহাজ ফয়সলকে সাহিত্য পুরস্কার প্রদান করা হয়। প্রবাসী লেখক সম্মাননা দেওয়া হয় ছড়াকার নজরুল ইসলাম আসলমী, কবি রজমান আলী ও ছড়াকার মোহাম্মদ উল্লাহ ইমরানকে। বেস্ট সেলার লেখক অ্যাওয়ার্ড অৎন করেন শিশুসাহিত্যিক তোরাব আল হাবীব, রম্যলেখক ও কবি আজমল আহমদ, গল্পকার কাওছার হামিদ সুন্নাহ, শিশুসাহিত্যিক মাহবুব এ রহমান, কথাসাহিত্যিক মিদহাদ আহমদ ও গল্পকার সাইফুল্লাহ মনসুর ইসহাক। এছাড়াও বিগত ৬ বছরে যারা পা-ুলিপি প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ও সেরালেখক নির্বাচিত হয়েছিলেন তাদের হাতে ক্রেস্ট ও সম্মাননাপত্র তুলে দেওয়া হয়।
আজীবন সম্মাননা গ্রহণ করে অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে কবি কালাম আজাদ বলেন, কবি করামত আলী সরাসরি আমার শিক্ষক ছিলেন। আজ করামত আলীর নামে শেষ জীবনে আজীবন সম্মাননা গ্রহণ করে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। তিনি ইন্টারনেটের এই যুগেও কবি-সাহিত্যিকদের কাগজে-কলমে লেখালেখির চর্চা অব্যাহত রাখার পরামর্শ দেন।
প্রধান অতিথি সোলায়মান আহসান লেখক-পাঠক সম্মিলনে পাপড়ি কর্তৃক যারা বিভিন্নভাবে পুরস্কৃত হয়েছেন তাদেরকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, সাহিত্য হচ্ছে সুন্দরের প্রতীক, কল্যাণের অগ্রদূত, জনসাধারণের উপকারের উৎস। মানবজীবনের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্নার স্মৃতি, অনুভূতিকে লেখালেখির মাধ্যমে কাগজের পাতায় জীবন্ত করে তোলার নামই সাহিত্য। এই কাজটি যারা করছেন তারা আজকের সম্মিলন থেকে উৎসাহ পেয়ে সাহিত্য চর্চায় আরও মনোযোগী হবেন বলে আমি আশাবাদী। তিনি আরও বলেন, সাহিত্যের রাজপথে সবাই সফলতা অর্জন করতে পারে না। একমাত্র তারাই পারে এ দুর্গম পথ ও পথের বিভিন্ন আঁকবাঁক ও চড়াই-উতরাই পাড়ি দিয়ে সফলতার স্বর্ণশিখরে পৌঁছতে, যাদের রয়েছে প্রশস্ত মন, সৎ সাহস ও অসীম ধৈর্য। সাহিত্যযুদ্ধে সাফল্য অর্জনে প্রয়োজন সাধনা, নিরন্তর প্রচেষ্টা, অক্লান্ত পরিশ্রম, তীব্র ইচ্ছা, অদম্য স্পৃহা, প্রশস্ত মন ও অসীম ধৈর্যশক্তির।