আমি চাই নতুন নেতৃত্ব আসুক: শেখ হাসিনা

দৈনিকসিলেটডেস্ক
আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমাদের এই কমিটি বিলুপ্ত হয়ে যাবে। নতুন কমিটি গঠন হবে। তার জন্য নির্বাচন কমিশনও আমরা গঠন করেছি। আজ থেকে আমাদের বিদায়, আমি চাই নতুন নেতৃত্ব আসুক।’
আজ শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এর আগে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে এবং জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন তিনি।
সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনের মুলতবি ঘোষণার সময় শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের দ্বিতীয় অধিবেশন শুধুমাত্র কাউন্সিলরদের জন্য। আমাদের এই কমিটি বিলুপ্ত হয়ে যাবে। নতুন কমিটি গঠন হবে। তার জন্য নির্বাচন কমিশনও আমরা গঠন করেছি। সেই নির্বাচন কমিশন বসবে এবং নাম প্রস্তাব হবে। সেখানে নতুন নেতৃত্ব আসবে। আজ থেকে আমাদের বিদায়, আমি চাই নতুন নেতৃত্ব আসুক।’
এর আগে সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এ রকম এক সম্মেলনে আমার অনুপস্থিতিতে আমাকে সভাপতি করা হয়। ছেলেমেয়েদের দায়িত্ব রেহানার ওপর ছেড়ে দিয়ে চলে এসেছিলাম। স্বাধীনতার সুফল যেন মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছায় সেটাই ছিল আমার দেশে ফেরার একমাত্র লক্ষ্য।’
তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যাতে সরকারে না আসতে পারে, অনেক চেষ্টা করেছে। কিন্তু বাংলাদেশের এতটুকু স্বার্থ কারও হাতে তুলে দেব না, এটাই ছিল আমার প্রতিজ্ঞা। জাতির পিতা দেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ করতে চেয়েছিলেন। দুর্ভাগ্য তিনি সেটা করতে পারেননি। আমরা সেটা করছি। আমরা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে আমাদের কিছু দিন লোডশেডিং দিতে হয়েছিল। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক।’
ভোট চুরি করলে বাংলাদেশের মানুষ মেনে নেয় না মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৯৯৬ সালে খালেদা জিয়া ভোট চুরি করে প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন। ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনে তিনি জয়ী হয়েছিল আর ৩০ মার্চ পদত্যাগে বাধ্য হয়েছিল। কিন্তু কেউ ভোট চুরি করলে বাংলাদেশের মানুষ তাকে মেনে নেয় না। আওয়ামী লীগ নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন করে দিয়েছে। যাতে কেউ ভোট চুরি করতে না পারে ও আগেই সিল মেরে ব্যালট বক্স ভরে রাখতে না পারে সেজন্য স্বচ্ছ ব্যালট বক্সের ব্যবস্থা করেছে আওয়ামী লীগ।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দুর্ভাগ্য ২০০১-এ আমরা সরকারে আসতে পারিনি। কেন পারিনি সেটা অনেকবার বলেছি, আর বলতে চাই না। কিন্তু বাংলাদেশের এতটুকু স্বার্থ আমার জীবন থাকতে নষ্ট হবে না। কারও হাতে তুলে দেব না। পরপর তিনবার আমরা ক্ষমতায়। আর এই ক্ষমতায় আছি বলেই আজকে বাংলাদেশকে আমরা উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারছি। যেখানেই বাংলাদেশের বাজেট হতো মাত্র ৬২ হাজার কোটি টাকার, সেখানে এই ২২-২৩ অর্থবছরে আওয়ামী লীগ বাজেট দিয়েছে ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা ‘
সরকারপ্রধান বলেন, ‘করোনাভাইরাস মোকাবিলা করে বিশেষ প্রণোদনা দিয়েও আমরা এ বাজেট দিতে সক্ষম হয়েছি। আমরা এই কয় বছরে প্রবৃদ্ধির হার বৃদ্ধি করেছিলাম। যেখানে জাতির পিতা যুদ্ধবিধ্বস্ব দেশে প্রবৃদ্ধি ৯ শতাংশে ওঠাতে সক্ষম হয়েছিলেন। কিন্তু এর পরে যারা অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে, জিয়া সরকার, এরশাদ সরকার অথবা খালেদা জিয়া সরকার.. কেউ কিন্তু আর প্রবৃদ্ধি বাড়াতে পারেনি। আওয়ামী লীগই একমাত্র এই প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশ পর্যন্ত তুলতে সক্ষম হয়েছিল।’সূত্র:আমাদেরসময়