প্রায় দেড়যুগ পর সিলেট জেলা পরিষদের চার একর জমি উদ্ধার

দৈনিকসিলেট প্রতিবেদক :
প্রায় দেড় যুগ পর অবৈধ দখল উচ্ছেদে নেমেছে সিলেট জেলা পরিষদ। অভিযানের প্রথম দিনেই চার একর ভূমি থেকে ৭০টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে।
রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে সিলেট সদর উপজেলার বাদাঘাট সড়ক সংলগ্ন চার একর জায়গায় গড়ে ওঠা আধাপাকা ও টিন শেডের ৭০টি অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ করা হয়েছে।
জেলা পরিষদ সূত্র জানায়, বাদাঘাট বাজার এলাকায় জেলা পরিষদের চার একর জমি প্রায় ১৮ বছর আগে বন্দোবস্ত দেওয়া হয়। একসনা বন্দোবস্তুকৃত এসব ভূমি ইজারা গ্রহীতারা আর নবায়নও করেননি। ফলে বেদখলে কেটে যায় দেড় যুগ। সেসব জায়গাতে অনেকে স্থায়ীভাবে দোকানপাট নির্মাণ করে এতদিন ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
সিলেট জেলা পরিষদের নতুন চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মো. নাসির উদ্দিন দায়িত্ব নেওয়ার পর সম্প্রতি এসব অবৈধ দখলদারদের কবলে থাকা ভূমি নজরে আসে। মালিকানা ভূমি ফেরত পেতে স্থানীয় ব্যবসায়ী, জনপ্রতিনিধি ও রাজনীতিবিদদের সঙ্গে বৈঠকও হয়। পরে দোকানপাট সরিয়ে নিতে সময় নির্দিষ্ট করে দিয়ে ব্যবসায়ীদের নোটিশও দেওয়া হয়। কিন্তু অনেকেই বিষয়টি আমলে নেননি।
এরপর রোববার সকাল ৯ টা থেকে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে জেলা পরিষদ। বিপুল সংখ্যক পুলিশের উপস্থিতিতে বুলডোজার দিয়ে এসব স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। অভিযানকালে অনেক ব্যবসায়ীকে দোকান ছেড়ে মালামাল সরিয়ে নিতে দেখা যায়।
উচ্ছেদ অভিযানে নেতৃত্ব দেন সিলেট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান। এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ পলাশ, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সন্দ্বীপ কুমার সিংহ, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহবুবুর রহমান, উপ-সহকারী প্রকৌশলী হাসিব আহমেদ ও সূর্যসেন রায়, সার্ভেয়ার মফিজুর রহমান, সাঁটলিপিকাটার এ কে এম কামরুজ্জামান মাসুম।
এ বিষয়ে অ্যাডভোকেট মো. নাসির উদ্দিন খান বলেন, বাদাঘাট বাজার এলাকায় জেলা পরিষদের মালিকানাধীন ভূমি একসনা বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছিল। একসনা বন্দোবস্তের শর্ত অনুসারে, কোনো অবস্থায় ইজারাকৃত ভূমিতে স্থায়ীভাবে অবকাঠামো নির্মাণ করা যাবে না। এসব শর্তাবলী কেউ লঙ্ঘন করলে ইজারা আপনা-আপনি বাতিল হয়ে যায়। কিন্তু ইজারা গ্রহীতারা সেই শর্ত ভেঙে স্থায়ী অবকাঠামো গড়ে তুলেছেন। যে কারণে উচ্ছেদ অভিযানে সেসব স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। উদ্ধারকৃত জমিতে স্থাপনা তৈরি করে ভাড়া দেবে জেলা পরিষদ।
তিনি বলেন, প্রচুর জমির মালিকানা থাকা সত্ত্বেও জেলা পরিষদকে একটি মরা বাড়িতে পরিণত করে রাখা হয়েছে। অবৈধ দখলদারদের কাছ থেকে পর্যায়ক্রমে সেসব সম্পদ ফিরিয়ে আনতে অভিযান চলমান থাকবে।