বসন্ত-ভালোবাসার দিনে সিলেটে মোড়ে মোড়ে ফুলের পসরা

শাহীন আহমদ ::
শীতের জীর্ণতা কাটিয়ে এসেছে ঋতুরাজ বসন্ত। আজকের দিনটিকে রাঙিয়ে নিতে বাসন্তী সাজে সেজেছেন তরুণ-তরুণীরা। কয়েক দিন আগে থেকেই ব্যস্ত নগরেও শোনা যাচ্ছিল কোকিলের কুহুতান। গাছে গাছে শুকনো পাতা ঝরে জন্ম নিয়েছে নতুন কচি পাতা। নবযৌবনের ডাক দিয়ে এসেছে বসন্ত, ছড়িয়েছে রঙের খেলা। সোনালি রোদে জেগে উঠেছে পলাশ।
আজ পহেলা ফাল্গুন। শুরু হয়েছে ঋতুরাজ বসন্তের দিন। একই দিনে পড়েছে ভালোবাসা দিবসও। বসন্ত বরণ ও ভালবাসা দিবসকে সামনে রেখে বেড়েছে ফুল ব্যবসায়ীদের ব্যস্ততা।
বসন্ত ছাড়াও প্রিয়ার মাঝে নিজেকে খুঁজে পাওয়ার সেই দিনটিই আজ, ‘বিশ্ব ভালোবাসা দিবস’। যদিও প্রয়িজনকে ভালোবাসতে বিশেষ কোনো দিনের দরকার হয় না। তারপরেও পৃথিবীর তাবৎ প্রেমিক-প্রেমিকারা আজকের এই দিনটি ‘ভ্যালেন্টাইন ডে’ হিসেবে পালন করে আসছেন। একদিকে বাসন্তী আর হলুদ রঙে ছেয়ে গেছে দেশ। আর তার মধ্যে ভালোবাসা দিবসে শিহরণ জেগেছে তরুণ প্রজন্ম।
এসব ফুল ব্যবসায়ী ছাড়াও সিলেটের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান ও মোড়ে মোড়ে বসেছে কয়েক শতাধিক অস্থায়ী ফুলের দোকান। বাহারি ফুলের পসরা সাজিয়ে বসেছেন তারা। এসব দোকানে বিকেল থেকেই ক্রেতাদের ভিড়ে চলছে জমজমাট বেচা বিক্রি।
যেন শত বাগানের দৃষ্টিনন্দন নানা প্রজাতির ফুলের সন্ধি। লাল, হলুদ, নীলসহ বিভিন্ন রংয়ের ছড়াছড়ি। দোকান গুলোতে থরে থরে সাজানো হয়েছে নানা রকম ফুলের সাজি। বানানো হচ্ছে মেয়েদের মাথায় পড়ার রিংসহ হাত ও গলার হার। এসব ফুলের মধ্যে গোলাপ, রজনীগন্ধা, জারবেরা ফুলের চাহিদা বেশি।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, সিলেটের চৌহ্রাটা, আম্বরখানা, জেলরোড, বন্দরবাজার, বাজারে স্থায়ী ও অস্থায়ী পসরা সাজিয়ে বসেছেন ফুল ব্যবসায়ীরা। সব দোকানেই ক্রেতার সংখ্যা চোখে পড়ার মতো। ফুলের দাম অন্যান্য দিনের থেকে কয়েকগুণ বেশি হলেও সানন্দে ফুল কিনছেন ক্রেতারা। বেশি দামে বিক্রি করে খুশি ব্যবসায়ীরাও। চাহিদার তুলনায় ফুল পাওয়া যাচ্ছে না বলেও জানান ব্যবসায়ীরা।
তবে এসব দোকানে দামের ভিন্নতা দেখা গেছে। গোলাপ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ১০০ টাকা প্রতি পিস। রজনীগন্ধার স্টিকসহ বিক্রি হচ্ছে দেড়শ থেকে দুইশ টাকা। ফুলে মোড়ানো মেয়েদের মাথায় পড়ানো রিং বিক্রি হচ্ছে দুইশ থেকে আড়াইশ।
এক পুষ্প দোকানের মালিক আলীম হোসেন বলেন, গতকাল বিকেল হতে বেড়েছে বিক্রি । বসন্ত বরণ ও ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে অতিরিক্ত ফুল আনা হয়েছে। আগামীকাল পর্যন্ত কয়েক লাখ টাকার ফুল বিক্রি হবে বলে আশা করছি। দাম একটু বেশি মনে হলেও কিছু করার নেই। কারণ আমাদের ফুল কিনতে হয়েছে অতিরিক্ত দামে।
ফুল ব্যবসায়ী রুকন মিয়া বলেন, ২০ হাজার টাকার ফুল কিনে এনে দোকান দিয়েছি। এর আগেও দোকান দিয়েছি। মোটামুটি সব ফুল বিক্রি হয়ে যায়।
মেহরুন সোভা বলেন, আজ ঋতুরাজ বসন্ত। প্রতিবছর এই দিনে একটু সাজুগুজু করে থাকি। আর সাজুগুজুতে এই দিনে ফুল না হলে চলে না। এজন্য দোকান থেকে ৩টি গোলাপ, কিছু জারবেরা ফুল এবং ছোট বোনের জন্য মাথার একটা রিং নিয়েছি। সব মিলিয়ে দাম অন্যান্য দিনের থেকে বেশি। অবশ্য এই দিবস উপলক্ষে দাম একটু বেশি রাখা স্বাভাবিক।