জামালগঞ্জে নিকটবর্তী অফিস দেখিয়ে ইজারা পেতে বিলের পাড়ে তড়িঘড়ি ঘর নির্মাণ

জামালগঞ্জ প্রতিনিধি :
সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার বাঁশকার (পাগনা) হাওর অন্তর্গত নয়াখাল নাইন্দা বিল জলমহালের ইজারা পেতে তড়িঘড়ি করে জলমহাল নীতিমালা ভঙ্গ করে বিলের পাশে অফিস ঘর নির্মান করার অভিযোগ উঠেছে এক মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির বিরুদ্ধে।
জানাযায়, উপজেলার সদর ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রাম সংলগ্ন বাঁশকার হাওরের নয়াখাল নাইন্দা বিল ইজারা পেতে তড়িঘড়ি করে ক্ষিরা ক্ষেতে অফিস ঘর নির্মাণ করা হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার খবর পেয়ে এই প্রতিবেদক সরেজমিনে সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে ঘর নির্মাণ করতে দেখা যায়। এসময় ক্ষিরা ক্ষেতের ফসল নষ্ট করে হাওরের মাঝে তড়িঘড়ি করে ঘর তোলা হচ্ছে কেন জানতে চাইলে, প্রতিবেদকের প্রতি চড়াও হয়ে উঠে এবং ছবি তুলতে বাঁধা প্রদান করে।
সংশ্লিষ্ট দপ্তর সূত্রে খবর নিয়ে জানাযায়, সম্প্রতি উপজেলা প্রশাসন থেকে নয়াখাল নাইন্দা বিল জলমহালের ইজারা দরপত্র আহ্বান করা হলে, বিলের নিকটবর্ত্তী পূর্ব লক্ষিপুর নয়াখাল মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিমিটেড এবং লক্ষিপুর মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লি.উভয়েই দরপত্রে অংশগ্রহণ করে। কিন্তু দরপত্র উন্মুক্ত (চূড়ান্ত) করার আগেই লক্ষিপুর মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির কাগজপত্রে উল্লেখিত অফিস জলমহাল থেকে দূরবর্তী স্থানে থাকলেও দরপত্র আহবানের পর পরই জলমহাল নীতিমালা ভঙ্গ করে মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির সভাপতি আনোয়ার হোসেন বিলের পাশের ক্ষিরা ক্ষেতে নতুন করে অফিস ঘর নির্মান শুরু করেন।
খোঁজ নিয়ে আরো জানাযায়, গতবছর লক্ষিপুর মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির সাথে বিলের নিকটবর্ত্তী অন্য কোনো সমিতি দরপত্রে অংশগ্রহণ না করায় এককভাবে উক্ত সমিতি ইজারাপ্রাপ্ত হয়ে এ বছর মাছ আহরণ করেছে। কিন্তু নতুন বছর সংশ্লিষ্ট প্রশাসন দরপত্র আহবান করলে জলমহালের নিকটবর্ত্তী একাধিক সমিতি দরপত্রে অংশগ্রহণ করায় পূর্বের ইজারাপ্রাপ্ত লক্ষিপুর মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির মাঝে অস্বস্তি ও অস্থিরতা দেখা দেয়। তাই তাদের ইজারাপ্রাপ্তি নিশ্চিত করতে সমিতির সভাপতি আনোয়ার হোসেন এক রকম মরিয়া হয়ে উঠেন এবং খাস ভূমিতে একদিনের মধ্যে অফিস ঘর নির্মান করেন। এনিয়ে তীরবর্ত্তী সমিতির সদস্যরা অসন্তোষ প্রকাশ করেন। একাধিক সমিতির লোকেরা বিস্ময় প্রকাশ করে জানান, জলমহালের ইজারা পাবার আগেই ইজারদারের ভূমিকায় স্থাপনা নির্মান করার রহস্য কারো বোধগম্য নয়। সমবায় সমিতির ইজারা প্রাপ্তির প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে এরকম অগ্রিম তৎপরতা একটা বিতর্কিত বিষয়। এব্যাপারে জামালগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তনুকা ভৌমিক জানান, দরপত্র আহবানের পরপরই তদন্তের জন্য সার্ভেয়ারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এখনো রিপোর্ট হাতে পাইনি। তবে তড়িঘড়ি করে অফিস ঘর নির্মাণ এটি এখন শুনেছি। বিল ইজারার ক্ষেত্রে নীতিমালা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।