সিসিক মেয়র পদে নির্বাচন করতে চান কাউন্সিলর আজাদুর রহমান

দৈনিকসিলেট ডেস্ক :
সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এবার প্রার্থিতা ঘোষণা করলেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর আজাদুর রহমান ওরফে আজাদ। সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) নগরজুড়ে তাঁর সমর্থনে পোস্টার, ব্যানার ও বিলবোর্ড সাঁটানো হয়েছে।
আজাদুর রহমান চারবারের নির্বাচিত কাউন্সিলর ও মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তিনি সিলেট-১ (নগর ও সদর) আসনের সংসদ সদস্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের ঘনিষ্ঠজন। সিলেটের আলোচিত ‘টিলাগড় গ্রুপের’ একটা অংশের নেতা হিসেবেও পরিচিত আজাদুর রহমান। গত পাঁচ দিনে তিনিসহ আওয়ামী লীগের মোট ছয়জন প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন পেতে প্রকাশ্যে তৎপরতা শুরু করেছেন।
অপর পাঁচ নেতা হলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন ওরফে সিরাজ, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জাকির হোসেন, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ টি এম এ হাসান ওরফে জেবুল এবং সদস্য প্রিন্স সদরুজ্জামান চৌধুরী। তাঁদের বাইরে মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আসাদ উদ্দিন আহমেদ ও সাংগঠনিক সম্পাদক আরমান আহমেদ ওরফে শিপলুও দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী।
আজাদুর রহমানের একাধিক সমর্থকের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তাঁরা বলেন, মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন পেতে অনেক আগে থেকেই তৎপর ছিলেন আজাদুর রহমান। এর অংশ হিসেবে তাঁরা পোস্টার, ব্যানার ও বিলবোর্ড সাঁটিয়ে প্রকাশ্যে তৎপরতা শুরু করেছেন।
আজাদুর রহমান বলেন, ‘গত নির্বাচনেও আমি মেয়র পদে দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলাম। তবে মনোনয়ন না পাওয়ায় দলের প্রার্থীর সমর্থনে কাজ করেছি। আমার পরিবার রাজনীতির জন্য নিবেদিতপ্রাণ। তাঁদের অনেকে দীর্ঘদিন জনপ্রতিনিধি ছিলেন। এখন যেসব ওয়ার্ড নতুন করে সিটি করপোরেশনে যুক্ত হয়েছে, সেগুলোতে যেমন আমার পরিবারের সদস্যরা জনপ্রতিনিধি ছিলেন, তেমনি অনেক আত্মীয়স্বজনও আছেন।’
সিলেট শহরের একটা পরম্পরা আছে, প্রায় সবাই কাউন্সিলর থেকে মেয়র হন—এমনটাই মনে করেন আজাদুর রহমান। তিনি বলেন, ‘উদাহরণ হিসেবে বদরউদ্দিন আহমদ কামরান ও আরিফুল হক চৌধুরীর কথা বলা যায়। এ ঐতিহ্য আমার পক্ষে যাচ্ছে। এ ছাড়া নগরের মানুষজনও আমাকে প্রার্থী হিসেবে দেখতে চান, সে জন্য প্রার্থিতা ঘোষণা করেছি। তবে আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনার কথাই শেষ কথা। তিনি যে সিদ্ধান্তই দেবেন, এর বাইরে যাওয়ার সুযোগ আমাদের কারও নেই।’
২০০২ সালে সিলেট সিটি করপোরেশন প্রতিষ্ঠার পর এ পর্যন্ত চারবার নির্বাচন হয়েছে। চলতি বছরের মাঝামাঝি পঞ্চমবারের মতো নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। প্রতিবার আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি বদরউদ্দিন আহমদ কামরান। করোনাভাইরাসে ২০২০ সালের ১৫ জুন তিনি মারা যান। অনেক ভোটারের ভাষ্য, আগামী নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে না বলে ধারণা করছেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। ফলে সহজে জয় পাবেন ধারণা করে দলীয় মনোনয়ন পেতে আওয়ামী লীগের এসব নেতা মাঠে তৎপর।
আওয়ামী লীগের ছয় নেতার প্রার্থিতা ঘোষণার বিষয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাসুক উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘তফসিল ঘোষণা হয়নি। এমনকি দলের সভাপতি শেখ হাসিনা বা কেন্দ্র থেকেও কোনো নির্দেশনা আসেনি। তাই মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন কে পাবেন, সেটা অনুমান করা সম্ভব নয়। নেত্রী যাঁকে যোগ্য মনে করবেন, তাঁকেই মনোনয়ন দেবেন। আমরা নেত্রীর মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করব। এখন কারা কোন সংকেত পেয়ে প্রার্থিতা ঘোষণা করছেন, এটা একান্তই তাঁদের নিজস্ব বিষয়।’