শ্রদ্ধার ফুলে ফুলে মুখরিত সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার

শাহীন আহমদ :
আজ একুশে ফেব্রুয়ারি, মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। মাতৃভাষা আন্দোলনের ৭১ বছর পূর্ণ হলো আজ। ফুলে ফুলে ভরে উঠেছে মূল বেদি। সুবাসিত হচ্ছে সালাম, রফিক, বরকত, জব্বার, শফিউরদের কবরে কবরে। কণ্ঠে কণ্ঠ মিলে বজ্রধ্বনিতে রূপ নিয়েছে আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি/আমি কি ভুলিতে পারি।
বলছি অমর ২১শে ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের কথা। শ্রদ্ধায় ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছেন বাংলা ভাষার জন্য প্রাণ দেয়া শহীদগণ। মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) প্রথম প্রহর থেকে একে একে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ভাষাশহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সর্বস্তরের মানুষ।
একুশের মহান শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে মঙ্গলবার রাতের প্রথম প্রহর (১২টা ১মিনিট) থেকেই সিলেট কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ শুরু হয়েছে। ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান সিলেটের বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
এর আগে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিকেলের মধ্যেই পূর্ণরূপে প্রস্তুত করা হয় মহানগরের চৌহাট্টাস্ত সিলেট কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার। রাতের প্রথম প্রহর থেকে শুরু করে দিনভর শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে ফুলে ফুলে ভরে উঠবে এই মিনার। এর মাধ্যমে স্মরণ করা হবে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের।
একুশের প্রথম প্রহরে সর্বপ্রথম ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সিলেট জেলা ও মহানগর ইউনিট কমান্ড। পরে একে একে সিলেট সিটি করপোরেশন, বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়, সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি কার্যালয়, সিলেট মহানগর পুলিশ (এসএমপি), সিলেট জেলা প্রশাসন, সিলেট জেলা পুলিশ, সিলেট জেলা সিভিল সার্জন, সিলেট সদর উপজেলা প্রশাসন ও আরআরএফের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
পরে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। শ্রদ্ধা নিবেদনের ফুলে ফুলে ভরে ওঠে শহীদ মিনার। এর মাধ্যমে স্মরণ করা হয় জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের।
এদিকে, সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শহীদদের শ্রদ্ধা জানানোকে ঘিরে কয়েক স্তরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনীর পাশাপাশি মহানগর পুলিশের (এসএমপি) বিশেষ ইউনিট ‘কুইক রেন্সপন্স টিম (সিআরটি)’-কেও দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে। সেই সঙ্গে শহীদ মিনার এলাকায় ও সড়কে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার আওতায় আনা হয়।
রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক–সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষ শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য ফুল হাতে সমবেত হন। একের পর এক দলবদ্ধ হয়ে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তারা।
এরপরেই সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধানিবেদন শুরু হয়। পূর্ব পরিকল্পিত রুটম্যাপ ধরে প্রবেশ করে প্রত্যেকেই একে একে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। প্রথম প্রহরের শ্রদ্ধা নিবেদনকে কেন্দ্র করে শহীদ মিনার এলাকায় ছয় স্তরের কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা কায়েম করা হয়েছে।