লটকনের স্বাস্থ্য উপকারিতা
দৈনিকসিলেটডেস্ক
বৈশ্বিক মহামারি করোনা প্রতিরোধে এখনও পর্যন্ত কোন ভ্যাকসিন আসেনি। তাই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে সুস্থ থাকার পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর অন্যতম উৎস হচ্ছে ভিটামিন সি। আর এই উপকারি উপাদানটি এই সময়ে সবচেয়ে বেশি পাওয়া যাচ্ছে লটকনে। দৈনিক মাত্র ২-৩টি লটকন খেলে প্রতিদিনের ভিটামিন সি’র চাহিদা পূরণ হবে। সেই সঙ্গে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়বে।
লটকন স্বল্প সময়ের ফল। বর্ষায় এই ফলটি বাজারে পাওয়া যায়। এখন রাস্তাঘাটে সব জায়গায় মিলছে এই ফলটি। লটকন এমন সব উপাদানে ঠাসা যাতে কোলন ক্যান্সারসহ নানান জটিল ও কঠিন অসুখ সেরে ওঠে। তাই এ সময়ে সুস্থ থাকতে প্রচুর পরিমাণে লটকন খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
সবচেয়ে বড় কথা, লটকনে কোনো ক্ষতিকর উপাদান নেই। ছোট বড় সবাই এই ফলটি খেতে পারেন। আসুন এবার জেনে নেই লটকনের অবিশ্বাস্য স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভিটামিন সি’র জুড়ি নেই। একইভাবে মন-মেজাজ প্রফুল্ল রাখতেও ভিটামিন সি’র ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই ভিটামিন সি’য়ে ভরপুর লটকন খেলে রোগ-বালাই যেমন দৌড়ে পালাবে, তেমনি শরীরে নতুন রোগও বাসা বাঁধতে দেবে না। তাই সুস্থ্য, নিজেকে ফিট রাখতে নিয়মিত খেতে হবে স্বাস্থ্যকর এই ফলটি। দৈনিক মাত্র ২-৩ টি লটকন খেলে প্রতিদিনের ভিটামিন সি’র অভাব পূরণ হয়ে যাবে বলে মনে করেন পুষ্টিবিদরা। এছাড়াও প্রতি ১০০ গ্রাম লটকনে রয়েছে ১.৪২ গ্রাম প্রোটিন ও ০.৪৫ গ্রাম ফ্যাট। যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রাখে।
খনিজ উপাদানে ভরপুর
লটকন ফলটি আকারে ছোট হলেও এতে রয়েছে পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ক্রোমিয়াম, ম্যাগনেসিয়ামসহ নানা খনিজ উপাদান। প্রতি ১০০ গ্রাম লটকনে ৯ গ্রাম ক্যালসিয়াম,
ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম ও ক্রোমিয়াম থাকে। আর এইসব উপাদান শরীরকে সুস্থ রাখতে বেশ উপকারী। এছাড়া রক্ত ও হাড় গঠনের জন্য আয়রন বিশেষ উপকারী। প্রতি ১০০ গ্রাম লটকনে আয়রনের উপস্থিতি ৫.৩৪ মি.গ্রা।
ভিটামিন বি সমৃদ্ধ ফল
ভিটামিন বি-১ এবং ভিটামিন বি-২ সমৃদ্ধ ফল লটকন। লটকনে ভিটামিন বি-১ এর পরিমাণ হল ১০.০৪ মিলিগ্রাম এবং ভিটামিন বি-২ আছে ০.২০ মিলিগ্রাম। বেরিবেরি রোগ থেকে দূরে রাখে লটকন। শারীরিক দূর্বলতা, বুক ধড়ফড় করা, হাত-পায়ে ব্যথা, ঠোঁট এবং পায়ের তালু ফাটা, ঠোঁট ও মুখের ঘা এবং বারবার গলা শুকিয়ে যাওয়ার সমস্যায় যারা ভুগছেন লটকন তাদের জন্য আদর্শ একটি পথ্য।
আছে প্রচুর ক্যালরি
১০০ গ্রাম লটকনে ক্যালরির পরিমাণ ৯২। যেখানে ১০০ গ্রাম কাঁঠালে ক্যালরি পাওয়া যায় ৪৬। অর্থাৎ কাঁঠালের দ্বিগুণ ক্যালরি আছে ছোট্ট এই লটকনে। যারা প্রচুর পরিশ্রমের কাজ করেন কিংবা দুর্বলতায় ভোগেন তারা নিয়মিত লটকন খেলে শরীরে শক্তি পাবেন।
কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়
ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, ক্যালশিয়াম, পটাশিয়াম প্রচুর পরিমাণে থাকে লটকনে। এসব উপাদান মানবদেহে কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় বলে নিশ্চিত করেছেন গবেষকরা। তাই বর্ষার এই ফলটি খেতে হবে প্রচুর পরিমাণে।
বীজ ও পাতা ওষুধের কাজ করে
‘গনোরিয়া’ রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে লটকনের বীজ। এছাড়াও ডায়রিয়া দূর করতে লটকন গাছের পাতার গুঁড়া বেশ কাজে দেয়। ফলের পাশাপাশি লটকনের পাতা ও শিকড় খেলে পেটের নানা অসুখ ও জ্বর ভালো হয়ে যায়।