নবীগঞ্জে ভাতিজির মামলায় লন্ডনীসহ দু’সহোদর পলাতক

নবীগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রতারণার দায়ে অভিযুক্ত নবীগঞ্জের পারকুল গ্রামের দু’সহোদর মোঃ তেরা মিয়া ও লন্ডন প্রবাসী মোঃ নইম উল্লা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। আপন ভাতিজিদের পক্ষে দায়েরকৃত মামলায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী করায় তারা আত্মগোপনে রয়েছেন। একই মামলায় আউশকান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দিলাওর হোসেন ও মেম্বার সুজন মিয়া হাজতবাসের পর জামিনে মুক্তি লাভ করেছেন।
প্রকাশ, নবীগঞ্জের বিবিয়ানা বিদ্যুৎ পাওয়ার প্ল্যান্টের জন্য আউশকান্দি ইউনিয়নের পারকুল গ্রামের লন্ডন প্রবাসী মৃত ছাইম উল্লার জমি অধিগ্রহণ করা হয়। ছাইম উল্লা মারা যাওয়ায় তার ৪ মেয়ে ওয়ারিমান হিসেবে ওই ভূমির মালিক এবং অধিগ্রহণকৃত ভূমির টাকা পাওয়ার কথা। কিন্ত মৃত ছাইম উল্লা’র ভাই তেরা মিয়া ও লন্ডন প্রবাসী নইম উল্লা বনগাও গ্রামের মোশাহিদ মিয়া সহযোগিতায় জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে ২০১১ সালে ভূয়া ওয়ারিশান সনদ সৃস্টি করে। পরে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড মেম্বার সুজন মিয়ার প্রতিস্বাক্ষর গ্রহণ করে আউশকান্দি ইউনিয়র চেয়ারম্যান দিলাওর হোসেন এর নিকট থেকে ওয়ারিশান সনদ গ্রহণ করে। এবং ওই ভূয়া ওয়ারিশান সার্টিফিকেট দিয়ে জ্বাল কাগজ সৃষ্টি করে তেরা মিয়া ও নইম উল্লা তাদের ভাতিজি লন্ডন প্রবাসী সেলিনা বেগম উল্লা, শাহেলা বেগম উল্লা, শাবানা বেগম উল্লা ও শাহিনা বেগম এর স্বাক্ষর জ্বাল করে একটি না-দাবীনামা সৃজন করে। এবং উক্ত না-দাবীনামা দিয়ে ভাতিজিদের অধিগ্রহণকৃত ভূমির ১ লাখ ৯০ হাজার ৫৩১ টাকা ও ৬ লাখ ৩ হাজার ৩৯৪ টাকা মোট ৭ লাখ ৯৪ হাজার ৯২৫ টাকার দু’টি চেক হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে গ্রহন করে উক্ত আত্মসাত করেন তেরা মিয়া ও লন্ডনী নইম উল্লা।
পরবর্তীতে প্রবাসী ভাতিজিরা জানতে পারেন তাদের আপন চাচারা তাদের মৃত পিতার অনুপস্থিতিতে জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে টাকা আত্মসাত করেছেন। এঘটনায় জালিয়াতি, প্রতারণা ও আত্মসাতের অভিযোগ এনে যুক্তরাজ্য প্রবাসী মৃত ছাইম উল্লার মেয়ে সেলিমা বেগম, সাহেলা বেগম, সাবানা বেগম ও শাহিনা বেগম পক্ষে এমরান বাহার চৌধুরী বাদী হয়ে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার অভিযুক্তরা হচ্ছেন, মোঃ তেরা মিয়া, মোঃ নইম উল্লা, মোশাহিদ মিয়া, ইউপি চেয়ারম্যান দিলাওর হোসেন ও মেম্বার সুজন মিয়া।
বিজ্ঞ বিচারক বিষয়টি তদন্তের জন্য হবিগঞ্জ জেলা সিআইডিতে প্রেরণ করেন। সিআইডির তদন্তকারী কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর মোঃ শফিকুল ইসলাম দীর্ঘ তদন্ত শেষে গত ৬ ফেব্রুয়ারি আদালতে ৫ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। আদালত প্রতিবেদনের আলোকে আসামীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেন। এ মামলায় চেয়ারম্যান দিলাওর হোসেন এবং ইউপি সদস্য সুজন মিয়া আদালতে হাজির হয়ে জামিন প্রার্থণা করলে বিজ্ঞ আদালত তাদের জামিন না-মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। পরবর্তীতে বাদীপক্ষ চেয়ারম্যান দিলাওর হোসেন এবং ইউপি সদস্য সুজন মিয়ার জামিন বিষয়ে তাদের কোন আপত্তি নেই মর্মে লিখিত দেয়ায় বিজ্ঞ বিচারক দু’জনের জামিন মঞ্জুর করেন।