জামালগঞ্জে হাওর বাঁচাও আন্দোলনের ইউএনও অফিস ঘেরাও কর্মসূচি

মোঃ বায়েজীদ বিন ওয়াহিদ জামালগঞ্জ প্রতিনিধি :
সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ ইউএনও অফিস ঘেরাও কর্মসূচী পালন করেছে জামালগঞ্জ উপজেলা হাওর বাঁচাও আন্দোলন কমিটি। রবিবার সকাল ১১ টায় জামালগঞ্জের খেয়াঘাট এলাকা থেকে বিক্ষোভ কর্মসূচি নিয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে উপজেলা প্রাঙ্গনে এসে ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেন উপজেলার কৃষক জনতাসহ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, অনিয়ম, দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা, নীতিমালা উপেক্ষা করে প্রকল্প গ্রহন, অক্ষত-অল্প ক্ষতিগ্রস্ত প্রকল্পে বিপুল টাকা বরাদ্ধ দিয়ে সরকারের অর্থ নষ্ট এবং নির্ধারিত সময়েও ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ শেষ করতে না পারার কারনেই আজকের এই ইউএনও অফিস ঘেরাও কর্মসূচী পালিত হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে জেলার ১২ টি উপজেলার প্রতিটি ইউএনও অফিস ঘেরাও কর্মসূচি পালন করা হবে।
এসময় বক্তারা আরো বলেন, বর্ধিত সময়ে বাঁধের কাজ শেষ না হওয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের গাফিলতি ও অব্যবস্থাপনাকেই দায়ি করছেন, পাহাড়ি ঢল ও অকাল বন্যার আগে বাঁধের কাজ শেষ না হওয়ায় জেলার কৃষকের বোরো ফসল ঝুঁকিতে রয়েছে। দূর্বল বাঁধের কারনে ২০২২ সালের মতো ফের ফসল ডুবির ঘটনা ঘটলে কৃষকদের সাথে নিয়ে কঠোর কর্মসূচি ঘোষাণারও হুঁশিয়ারি দেন বিক্ষোভকারীরা।
এসময় কেন্দ্রীয় হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায় বলেন, যদি দ্রুত এই ফসল রক্ষা বাঁধের নিরাপত্তায় কোন পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তাহলে সামনে আরো বড় ধরনের পদক্ষেপসহ ডিসি অফিস ঘেরাও করার হুশিয়ারি দেন।
বক্তব্য শেষে আন্দোলনের নেতারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিত দেবের অফিসে দেখা করতে গেলে তিনি জেলা মিটিংয়ে থাকায় দেখা করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ইকবাল আল আজাদের কার্যালয়ে দেখা করে নির্ধারিত সময়ে হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এব্যাপারে জামালগঞ্জ ফসল রক্ষা বাঁধ প্রকল্প (পিআইসি) মনিটরিং কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিত দেব বলেন, জামালগঞ্জের হাওরের ছোট বড় মোট ৬১টি প্রকল্পের প্রায় ৯৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। এছাড়া হাওরের বিপজ্জনক সব জায়গায় ভালো কাজ হয়েছে। হাওরের সকল ফসল ঘরে না ওঠা পর্যন্ত পিআইসি সদস্যদের বাঁধে অবস্থান করে নতুন মাটিতে ঘাস লাগানো ও সবুজ করার জন্য পানি দেয়া এবং বৃষ্টি হলে ক্ষতিগ্রস্ত অংশ সাথে সাথে পূণরায় মেরামতের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এছাড়াও উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড যৌথভাবে প্রতিটি বাঁধ সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখা হয়েছে। যদি কোন প্রকল্পে কাজের কোন গাফলতির প্রমান পাওয়া যায় তাহলে তাৎক্ষণিকভাবে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এসময় অন্যান্যেদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন হাওর বাঁচাও কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায়, জেলা কমিটির সভাপতি ইয়াকুব বখত বাহলুল , সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল হক মিলন, সাংগঠনিক সম্পাদক শহীদ নূর, সাবেক সদস্য সচিব রাজু আহমেদ, জামালগঞ্জ উপজেলা কমিটির সভাপতি শাহানা আল আজাদ, সাধারণ সম্পাদক অঞ্জন পুরকায়স্থ ও যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, হাওর বাঁচা আন্দোলন নেতা আব্দুল্লাহ আল মামুন প্রমুখ।