যে সুরা কোরআনের এক-তৃতীয়াংশের সমান
আহমদ আবদুল্লাহ
সুরা ইখলাস কোরআনের ১১২তম সুরা। সুরাটি সুরা নাসের পরে হিজরতের আগে মক্কার প্রথম যুুগে অবতীর্ণ হয়। এই সুরার আয়াত সংখ্যা ৪, রুকু সংখ্যা ১। ইখলাস অর্থ গভীর অনুরক্তি, একনিষ্ঠতা, নিরেট বিশ্বাস, খাঁটি আনুগত্য, ভক্তিপূর্ণ উপাসনা। শিরক থেকে মুক্ত হয়ে তাওহিদ বা এক আল্লাহর ওপর খাঁটি ও নিরেট বিশ্বাসী হওয়াকে ইখলাস বলা হয়। এ সুরার মর্মার্থের ভিত্তিতে নামকরণ করা হয়েছে সুরা ইখলাস। যে ব্যক্তি এ সুরাটি পাঠ করবে ও এর মর্মার্থের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস স্থাপন করবে, সে নিশ্চিত শিরক থেকে মুক্তি লাভ করে নিরেট তাওহিদবাদী হয়ে যাবে এবং আল্লাহর মুখলিস বান্দায় পরিণত হবে।
বিষয়বস্তু
সুরা ইখলাসের চারটি আয়াতে চারটি বিষয়ের আলোচনা করা হয়েছে। প্রথম আয়াতে বলা হয়েছে, আল্লাহ একক ও অনন্য। দ্বিতীয় আয়াতে বলা হয়েছে, তিনি অমুখাপেক্ষী। তৃতীয় আয়াতে বলা হয়েছে, জন্মের সঙ্গে তাঁর কোনো সম্পর্ক নেই এবং চতুর্থ আয়াতে বলা হয়েছে তিনি অতুলনীয়। চারটি আয়াতের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হলো, তাওহিদ বা আল্লাহর একত্ববাদ।
সুরা ইখলাসের বৈশিষ্ট্য
সুরা ইখলাস এমন একটি সুরা, যার মধ্যে আল্লাহ তাআলার একত্ববাদের বিষয়টি সুন্দরভাবে বর্ণনা করা হয়েছে, যা অন্য কোনো সুরায় বর্ণনা করা হয়নি। মক্কার কাফেরদের কাছে স্রষ্টা এক হওয়া আশ্চর্যের বিষয় ছিল এবং তাদের জানার প্রবল আকাঙ্ক্ষা ছিল স্রষ্টা কেমন এবং কিসের তৈরি। আল্লাহ তাআলা জোরালো ভাষায় এসব প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন এ সুরায়।
কোরআনের এক-তৃতীয়াংশের সমতুল্য
আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, জনৈক ব্যক্তি অপর ব্যক্তিকে রাতে বারবার সুরা আল-ইখলাস পড়তে শুনেছেন। অতঃপর সকালে মহানবী (সা.)-কে এ বিষয়টি অবহিত করা হলো। মহানবী (সা.) তখন বলেন, ওই সত্তার শপথ, যার কুদরতের হাতে আমার জীবন, অবশ্যই এ সুরা কোরআন মজিদের এক-তৃতীয়াংশের সমান। (সহিহ বুখারি : ৫০১৩, আবু দাউদ : ১৪৬১)
মহানবী (সা.) একদা সাহাবিদের বলেন, তোমরা কি একরাত্রে কোরআন মজিদের এক-তৃতীয়াংশ পড়তে পারবে? সাহাবিরা এ প্রস্তাবকে খুবই কঠিন মনে করলেন। ফলে তাঁরা বললেন, আমাদের মধ্যে এ কাজ কে করতে পারবে? মহানবী (সা.) তখন বললেন, সুরা ইখলাস কোরআনের এক-তৃতীয়াংশের সমান। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫০১৫, নাসায়ি, হাদিস : ৯৯৫)