হবিগঞ্জে চুনারুঘাটসহ ৩ উপজেলাকে ভূমিহীন মুক্ত ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর

নুর উদ্দিন সুমন হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলাসহ ৩ উপজেলাকে ভূমিহীন মুক্ত ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী একই সাথে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ, বানিয়াচং চুনারুঘাটসহ ৮১৫টি পরিবার পেলেন আশ্রয়নের নতুন ঘর। বুধবার (২২ মার্চ) সকালে গনভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সারা দেশে ৭ টি জেলা ও ১৫৯টি উপজেলার ন্যায় চুনারুঘাটে উপকারভোগী ৯৭ টিসহ ৮১৫টি পরিবারের নিকট গৃহসমুহের চাবী ও জমির দলিল হস্তান্তর কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক ভার্চুয়ালী উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও কনফারেন্স শেষে একই দিন দুপুর ১২ টায় উপজেলা পরিষদের কনফারেন্স রুমে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ৯৭টি পরিবারের হাতে তাদের নুতন ঘরের চাবি তুলে দেন জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান । সর্বশেষ ক-শ্রেণির ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের আশ্রয়ণ -২ প্রকল্পের আওতায় ১ম, ২য় ও ৩য় পর্যায় মোট ৩১৭টি ও আশ্রয়ণ -১ ও গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পের মাধ্যমে ৮ টি প্রকল্পস্থানে ১০৭০টি পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। ফলে এপর্যন্ত চুনারুঘাট উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীন করার লক্ষ্যে ১৩৮৭ টি ভূমিহীন পরিবারকে পূর্ণবাসন করা হয়েছে।
বুধবার ২২ মার্চ প্রকল্পের ৪র্থ পর্যায়ে নির্মিত ৩১৭ টি’র মধ্যে ৯৭টি পাকাঘর উপকারভোগী পরিবারকে জমির দলিল ও চাবি হস্তান্তর করা হয়েছে। একই সাথে উপজেলাকে ভূমিহীন গৃহহীন মুক্ত করার করা হয়। চুনারুঘাট উপজেলায় ঘরের জমির দলিল ও গৃহের চাবী হস্তান্তর অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিদ্ধার্থ ভৌমিক এর সভাপতিত্বে পিআইও প্লাবন পাল এর সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল কাদির লস্কর , সহকারী কমিশনার (ভূমি) আফিয়া আমিন পাপ্পা ,ভাইস চেয়ারম্যান আলহাজ্ব লুৎফর রহমান মহালদার , মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আবিদা খাতুন ,উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার ডা: মোজাম্মেল হক , ইন্সপেক্টর তদন্ত গোলাম মোস্তফা , উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ মাসুদ রানা, প্রকল্প জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মহি উদ্দিন, বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ, ইউনিয়ন চেয়ারম্যানগণ,সাংবাদিকবৃন্দ ও নানা শ্রেণী পেশার লোকজন। পরে বড়আব্দা আশ্রয়নে গিয়ে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল কাদির লস্কর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মানিক সরকার উপকারভোগীদের সাথে কথা বলেন। ছেলে সন্তান থেকেও নেই। সবাই ছেড়ে চলে যাওয়ায় খুব কষ্টে পড়ি। জমি-জায়গা নাই। মানুষের জমিতে বহুদিন ভাঙা ঘরে ঘুমাতে পারিনি। তাই শেষ বয়সে শান্তিতে থাকতে মাথা গোঁজার ঠাঁই চেয়েছিলাম। আমার জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহারের নতুন একটি ঘর বরাদ্দ করে দেয় উপজেলা প্রশাসন। এখানেই আমার মাথা গোঁজার ঠাঁই হবে স্ত্রীকে নিয়ে। বাকি জীবন নিজের বাড়িতে কাটাতে পারব। এ জন্য প্রধানমন্ত্রীর জন্য অনেক দোয়া ও কৃতজ্ঞতা রইল —কথাগুলো বলছিলেন বড়আব্দা আশ্রণে ঘর পাওয়া ৭০ বছরের হরমুজ আলী। এছাড়াও উপকারভোগী নারী পুরুষ ঘরের চাবি পেয়ে আনন্দে আত্মহারা। তারা প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।
হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান বলেন, মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন হয়েছে। শেষ ধাপে আরও ৮১৫ পরিবারকে ঘর দেওয়ার মধ্য দিয়ে জেলার ৩ উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী। এর ফলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে আরেক ধাপ এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ।