সিলেটে রোজার প্রথম দিনেই রকমারী ইফতারের আয়োজন

দৈনিকসিলেট প্রতিবেদক :
সিলেটে পবিত্র মাহে রমজানের প্রথম দিনেই জমজমাট ইফতারী বাজার। প্রতি বছরের মতোই সিলেটের ঐতিহ্যবাহী ইফতারীকে তুলে ধরতে রোজার প্রথম দিনেই তুমুল ব্যস্ত সময় কাটান দোকানীরা। পাশাপাশি রকমারি নানাপদের ইফতার সামগ্রী কিনতে নগরীর অভিজাত রেস্টুরেন্ট গুলোতে ভিড় করেন ক্রেতারাও। সাধারণ ছোলা-মুড়ি থেকে শুরু করে কাবাব, টিকিয়া, রোস্ট, পোলাও, ফল-মূল, বড় বাপের পোলায় খায়সহ নানা খাবার। আর হরেক রকম আয়োজন রয়েছে রেস্টুরেন্ট গুলো থেকে শুরু করে ফুটপাতে বসা ইফতারের দোকানেও। এসব ইফতার সামগ্রীর মূল্য দেখে বোঝা যায় কোনটি উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত বা নিম্নমধ্যবিত্তের। প্রথম রোজাতেই সব শ্রেণির ক্রেতার আগমন হচ্ছে এসব দোকানে।
শুক্রবার (২৪ মার্চ) সিলেট নগরীর বিভিন্ন পয়েন্ট ঘুরে দেখা গেছে, প্রচলিত ইফতারির পাশাপাশি নানান স্বাদের বাহারি আয়োজন সাজিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। বাহারি এসব ইফতারির স্বাদ নিতে দুপুরেই দূর-দূরান্ত থেকে ভোজনবিলাসীরা ছুটে এসেছেন। ঐতিহ্যবাহী জিলাপি কিনতে দেখা গেছে দীর্ঘ জটলা।
প্রতি বছরের মতো এবারও সিলেটে ইফতারির সবচেয়ে বড় আকর্ষণ ‘আখনি, নামের একটি বিশেষ ইফতারি। এটি কিনতে ক্রেতাদের দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। ’আখনি’ তৈরিতে মাংস, ডাবলি, বুটের ডাল, ডিম, আলু, ঘি, কাঁচা ও শুকনো মরিচসহ নানা পদের খাবার আইটেম এবং হরেক ধরনের মসলা প্রয়োজন হয়। প্রতি কেজি ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা দরে এটি বিক্রি হচ্ছে।
শহিদুল ইসলাম পরিবারের জন্য প্রথম রোজার ইফতারে বাহারি আইটেমের সংযোজন করতেই তিনি বলেন, প্রতি বছর প্রথম রোজায় এখানে আসি পোলায় সহ অন্যান্য ইফতারি কিনতে। গত দুই বছর করোনার কারণে আসতে পারিনি। আজ পোলায় খায়, পেস্তা শরবত, দইবড়া, জিলাপিসহ বেশ কিছু আইটেম কিনেছি।সিলেটের এই ইফতারির স্বাদ আর কোথাও পাওয়া যাবে না।
জাকরিয়া নামের এক বিক্রেতা বলেন, যে দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ আসছে ইফতারি কিনতে, এটা তো ঐতিহ্যবাহী। এটা সবাই খেতে চান। আমাদের কাছে অনেক ধরনের ইফতারি আছে। এখন পর্যন্ত বিক্রি করে কুলাতে পারছি না। এই ভিড় আরও বাড়বে।
আকর্ষণীয় সব আইটেমের পাশাপাশি প্রচলিত ইফতারির কদরও অনেক বেশি সিলেটে ইফতার বাজার ঘুরে দেখা গেছে, জিলাপি কালাই আইটেম ২৪০ টাকা, আটার জিলাপি ২০০ টাকা, বড় সাইজের জিলাপি ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। শিঙাড়া ১০ টাকা প্রতি পিস, সমুচা ১০ টাকা, চিকেন টোস্ট ৩০জিটেবল পাকোড়া ১০ টাকা, ডিমচপ প্রতিটি ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ঘুমনি ৮০ টাকা কেজি, ছোলা ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা, সবজির বড়া ১০ টাকা প্রতিটি, গরুর টিকা ৩০ ও মুরগির টিকা ২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
জালি কাবাব প্রতি পিস ৫০ টাকা, সাসলিক ৫০ টাকা, টিকা কাবাব ৫০ টাকা, কোয়েল পাখির রোস্ট ৭৫ থেকে ১০০ টাকা, চিকেন রোল ৬০ টাকা, আস্ত মুরগি ৩৫০ টাকা, পনির ৭৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়াও পানীয় আইটেমের মধ্যে পেস্তা শরবত ২০০ টাকা লিটার, মাঠা ৮০ টাকা লিটার, বোরহানি ১২০ টাকা লিটার, ফালুদা বড় বাটি ২০০ টাকা, ফালুদা ছোট বাটি ১০০ টাকা, দইবড়া বড় বক্স ২২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
পানীয় আইটেম বিক্রেতা মো. জাহেদ জানান, সবাই চায় মজার ইফতারি করতে। যুগ যুগ ধরে মানুষ পেস্তা শরবতের জন্য পাগল। এখানের খুব জনপ্রিয় আইটেম এটা। ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। এছাড়া ফালুদা, বোরহানিসহ কয়েকটি আইটেম বিক্রি করছি। ভালো বিক্রি হচ্ছে। গত দুই বছর কোনো ব্যবসা করতে পারিনি। আশা করছি এ বছর ভালো ব্যবসা করতে পারবো।