মাধবপুরে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়াই পশু জবাই, বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি

নাহিদ মিয়া, মাধবপুর প্রতিনিধি :
হবিগঞ্জের মাধবপুরে প্রাণিসম্পদ বিভাগ চিকিৎসকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও ছাড়পত্র ছাড়াই উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারগুলোতে অবাধে গবাদিপশু জবাই করে মাংস বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। আর সাধারণ জনগণ নিয়ম কানুন না জেনেই কিনছেন মাংস। এতে বাড়ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মাধবপুর উপজেলার মাধবপুর বাজার, নোয়াপাড়া বাজার, চৌমুহনী বাজারে প্রতিদিন ১০-১২টি গরু জবাই হয়। জবাইকৃত পশুর শরীরে কোনো রোগ বালাই রয়েছে কি না এমন কোনো ধারণাই রাখেন না ক্রেতা-বিক্রেতারা। সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী আইন প্রয়োগের দায়িত্ব প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। কিন্তু এ ব্যাপারে তাদের কোনো তৎপরতা নেই বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা ও সাধারণ মানুষ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাধবপুর বাজার ছাড়াও নোয়াপাড়া বাজার চেঙ্গা বাজার, মনতলা বাজার,চৌমুহনী বাজার,গরু, ছাগল, জবাই করা হয়। তা ছাড়া হোটেলের চাহিদা পূরণ করার জন্যও গরু, ছাগল জবাই করা হয় বলে জানিয়েছেন হোটেল ব্যবসায়ী আওয়াল মিয়া।
মাধবপুর পৌরসভার এলাকা থেকে গরুর মাংস কিনতে আসা কাউন্সিল হাজী মোঃ দুলাল খাঁ বলেন,’আমরা তো শুধু বিশ্বাস করেই মাংস কিনছি, কোনো ভেজাল থাকলে আমাদের জানার কথা নয়। তবে সব বিষয়ে ভেটেরিনারি হাসপাতাল দেখাশোনা করলে আমাদের স্বাস্থ্যের ঝুঁকি কমে আসবে।’
কাউন্সিলর হাজী মো: দুলাল খাঁ আরও বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এ ধরনের কোনো তদারকি না থাকায়, সাধারণ জনগণ মরা গবাদিপশু, নাকি রোগাক্রান্ত গবাদিপশুর মাংস খাচ্ছে তা বোঝার কোনো উপায় নেই। পাশাপাশি ধর্মীয় নিয়মানুবর্তিতার মধ্যে পশুটি জবাই করা হচ্ছে কি না, সেটাও সকলের অগোচরে।’
মাধবপুর বাজারে মাংস ব্যবসায়ী মোঃ মতি মিয়া বলেন, ‘আমরা অনেক দিন থেকে গরুর মাংস বিক্রি করে আসছি। গরুর জবাই করার জন্য স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয় না। আগে পশু হাসপাতাল থেকে খোঁজ রাখলেও এখন আর কেউ খোঁজখবর রাখেন না। মাঝে মাঝে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে লোক এসে খোঁজ খবর নিত।
এ বিষয়ে মাধবপুর পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিল জহিরুল ইসলাম বলেন,‘পশু জবাই করার আগে পশুটি সুস্থ কি না, রোগাক্রান্ত কি না, পশুটি গর্ভবর্তী কি না, এসব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার দায়িত্ব উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বা চিকিৎসকের। স্যানিটারি ইন্সপেক্টর এর দায়িত্ব পশু জবাই এর পরবর্তীতে স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে বিক্রি হচ্ছে কি না এবং ওজনের কারচুপি করছে কি না, সেটা দেখা শোনার দায়িত্ব কর্তৃপক্ষের।’
এ বিষয়ে স্যানিটারি ইন্সপেক্টর মহিবুর রহমান এর মোবাইল ফোনে একাধিক বার ডায়াল করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
মাধবপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ আব্দুস সাত্তার বেগ বলেন, যারা পশু জবাই ও মাংস বিক্রি করে তাদের একটা লাইসেন্স লাগে, আমরা কসাইদের কাছে একটা চিঠি দিয়েছি এক মাসের সময় দেওয়া হয়েছে লাইসেন্স করা জন্য। এর পর তারা নিবন্ধনের আওতায় আসলে আমরা পশু জবাইয়ের আগে পরিক্ষা করে নিব।আমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণ জনবল না থাকায় আমরা সেই ভাবে মনিটরিং করতে পারি না। তিনি আরও বলেন,পশু জবাইয়ের ওপর পবিত্র রমজান মাসের মধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান মাঝে মাঝে পরিচালিত হবে। আর আমি নিজেও হাঁটতে বের হলে মাধবপুর বাজারে ঠিকভাবে পশু জবাই হচ্ছে কি না তা তদারকি করি।