যাত্রী নেই সিলেট-চাঁদপুর ‘ঈদ স্পেশাল’ ট্রেনে

নাসির উদ্দিন :
ঈদে ঘরমুখো মানুষের স্বাচ্ছন্দ্যে যাতায়াতে সিলেট থেকে চালু করা হয়েছে বিশেষ (স্পেশাল) ট্রেন। কিন্তু ঘটা করে সিলেট-চাঁদপুর রুটে ঈদ স্পেশাল ট্রেন চালু করা হলেও ট্রেনে কাঙিক্ষত যাত্রী নেই।
ফলে অধিকাংশ কোচ খালি নিয়ে যাতায়াত করছে ঈদ স্পেশাল (বিশেষ) ট্রেন।
রেলওয়ে তথ্য অনুযায়ী, সিলেট-চাঁদপুর রুটে ঈদ স্পেশাল ট্রেন-৯ ও ১০ মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) থেকে চলাচল শুরু করেছে। আগামী ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত এই ট্রেন চলাচল করবে।
বুধবার (১৯ এপ্রিল) সরেজমিন সিলেট রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, সিলেট থেকে চাঁদপুরগামী বিশেষ ট্রেন বিকাল ৪টা ৪০ মিনিটে ছেড়ে যাওয়ার জন্য প্লাটফর্মে দাঁড়িয়ে। কিন্তু ট্রেনের পাওয়ার কার ব্যতীত ৯টি কোচের অধিকাংশ খালি। ২/৩টি কোচে শতাধিক যাত্রী রয়েছেন। তাও আবার সবাই চাঁদপুরগামী নয়, মধ্যবর্তী স্টেশনগুলোর যাত্রী বেশি।
এরমধ্যে টিকিটবিহীন কুলাউড়া স্টেশনের এক যাত্রীকে ৮০ টাকা জরিমানা ও ৩ কুমিল্লার ৩ জন যাত্রীকে টিকিট কাটতে বাধ্য করেছেন টিকিট কালেক্টরেটরের দায়িত্বে থাকা এম তানজিরুজ্জামান।
তিনি বলেন, সিলেট-চাঁদপুর বিশেষ ট্রেন মঙ্গলবার থেকে চালু করা হয়েছে। ট্রেনে যাত্রী সেরকম নেই। যারাই ভ্রমণ করছেন, প্রায় অর্ধেক যাত্রী গন্তব্যের আগে মধ্যবর্তী স্টেশনগুলোর। তবে কেউ যাতে বিনা টিকিটে ট্রেনে ভ্রমণ না করেন, সেজন্য কোচগুলোতে টিকিট তল্লাশি করে থাকি।
সিলেট রেলওয়ে স্টেশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার সজিব মালাকার বলেন, সিলেট থেকে চাঁদপুরের উদ্দেশ্যে মঙ্গলবার প্রথম বিশেষ ট্রেন যাত্রা করে। ট্রেনটিতে পাওয়ার কারসহ ১০টি কোচ সংযোজন করা হয়েছে। যাতে ৫১৪টি আসন রয়েছে। গতকাল (মঙ্গলবার) বিকাল ৪০ টা ৪০ মিনিটে ১৯০ জন যাত্রী নিয়ে ট্রেনটি গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। বুধবার (১৯ এপ্রিল) ভোর ৪টায় চাঁদপুর থেকে রওয়ানা হয়ে সিলেটে পৌঁছায় দুপুর ১২টায়। আজ বিকেলে ফের ১৫২ জন যাত্রী নিয়ে গন্তব্য চাঁদপুরের উদ্দেশ্যে সিলেট ছাড়ে ঈদ স্পেশাল ট্রেন। এরমধ্যে ৭৫ জন চাঁদপুরের যাত্রী। অন্যরা মধ্যবর্তী স্টেশনগুলোর।
সিলেট রেলওয়ে স্টেশন ব্যবস্থাপক নুরুল ইসলাম বলেন, প্রতি ঈদে যাত্রীদের দুর্ভোগ লাঘবে ট্রেনে কোচ বাড়িয়ে দেওয়া হয়। এবার সিলেট-চাঁদপুর রুটে প্রথমবারের মতো একজোড়া ‘স্পেশাল ট্রেন’ চালু করা হয়েছে। এছাড়া ঢাকাগামী আন্তঃনগর কালনী, জয়ন্তিকা, পারাবত ও উপবন এবং চট্রগ্রাম অভিমুখী আন্তঃনগর পাহাড়িকা ও উদয়ন এক্সপ্রেসে একটি করে কোচ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ঈদের দিন ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকবে। ঈদের পরদিন থেকে আবার চালু হয়ে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত চলাচল করবে। এরপর ঈদ স্পেশাল ট্রেন বাতিল করা হবে। ঈদ স্পেশাল-৯ বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে সিলেট থেকে ছেড়ে চাঁদপুর পৌঁছায় রাত ১২টা ১৫ মিনিটে। আর ঈদ স্পেশাল-১০ ভোর ৪টায় চাঁদপুর থেকে ছেড়ে সিলেট আসে দুপুর ১২টায়। প্রতিটি ট্রেনে আসন থাকবে ৫১৪টি করে।
সূত্র জানায়, সিলেট বিভাগীয় শহরে কুমিল্লা, চাঁদপুর জেলার শিক্ষার্থীসহ প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। সিলেট থেকে কুমিল্লা ও চাঁদপুর জেলায় প্রতিদিন মোট ৩০টি বাস চলাচল করলেও মানের দিক থেকে তেমন ভালো না। এছাড়া সিলেট-চট্টগ্রাম রুটে চলাচলরত দুটি ট্রেন আন্তঃনগর পাহাড়িকা ও উদয়ন এক্সপ্রেসে বৃহত্তর কুমিল্লার অধিবাসীদের জন্য স্বল্পসংখ্যক সিট বরাদ্দ থাকে। তাই দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে এ রুটে একজোড়া আন্তঃনগর ট্রেন চালু করা হলো।
রেলওয়ে সূত্র আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর রুটটিতে নতুন একটি ট্রেনের সম্ভাব্যতা যাচাই ও মতামত তৈরি করছে রেলওয়ে। ইন্দোনেশিয়া থেকে আসা নতুন রেক দিয়ে ট্রেনটি চলতি বছরের মধ্যে চালু করা হতে পারে। আর এ প্রক্রিয়া চূড়ান্তের লক্ষ্যেই এবার ঈদকে কেন্দ্র করে এ রুটে পরীক্ষামূলকভাবে ‘স্পেশাল ট্রেন’ চালু হচ্ছে। সৌজন্যে : বাংলা নিউজ