আত্মগোপনে থেকে অপহরণের নাটক সাজানো জামাই নরসিংদীতে উদ্ধার

নুর উদ্দিন সুমন, হবিগঞ্জ :
হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে শ্বশুর-শ্বাশুড়ি ও স্ত্রীকে ফাঁসাতে আত্মগোপনে থাকার ছক কষেন আব্দুল ছত্তার ওরফে মাসুক (২৮) নামে এক জামাতা । এমনকি তার মা আয়েশা খাতুনকে বাদি করে অপহরণের মামলাও দায়ের করান। তবে শেষ রক্ষা হয়নি আব্দুল ছত্তার ওরফে মাসুকের। মামলার তদন্তে বেরিয়ে আসে আত্মগোপনের রহস্য। নরসিংদী জেলার মাধবদী থানা এলাকা থেকে উদ্ধার করেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন পিবিআই ।
উদ্ধারের বিষয়টি রাতে জানান পিবিআই হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার আল মামুন শিকদার। পিবিআই জানায়, চুনারুঘাট উপজেলার ২নং আহম্মাদাবাদ ইউনিয়নের কালিশিরি গ্রামের আয়েশা খাতুনের ছেলের স্ত্রী-শ্বশুর ও শাশুড়ি সহ ৫ জন কে আসামী করে অপহরণ করা হয়েছে অভিযোগ এনে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পিবিআই, হবিগঞ্জকে আদেশ দেন ।
এ প্রেক্ষিতে ঘটনার রহস্য উদঘাটনের ছায়া তদন্ত শুরু করে পিবিআই । মামলার বাদীসহ পরিবারের অন্যদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে মাসুককে অপহরণের বিষয়ের সন্দেহের সৃষ্টি হয়। এরমধ্যে জানা যায়, ভিকটিম মাসুকের স্ত্রী সুলতানা বেগমকে ভরণপোষন ও দেনমোহর এর টাকা চেয়ে মাসুকের বিরুদ্ধে আদালতে একটি মামলা দায়ের করে বসেন। তদন্তের ধারাবাহিকতায় তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় নরসিংদী থেকে মাসুককে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করে পিবিআই । মাসুক প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে পিবিআই জানায়, মাসুক স্ত্রীর দায়েরকৃত মামলার দায় থেকে অব্যাহতি পেতে এবং প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে পরামর্শ করে আত্মগোপনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। যার ভিত্তিতে তার মা আয়েশা খাতুনকে বাদি করে শ্বশুর, শাশুড়ি এবং স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করান।
মাসুকের মায়ের করা মামলাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও প্রতিহিংসা মূলক বলে প্রমাণিত হয়েছে বলে জানান মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই কাশেম। এর আগে ৮মে রাত ১ টায় পিবিআই পুলিশ সুপার মোঃ আল মামুন শিকদারের সার্বিক তত্ত্বাবধানে মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আবুল কাশেমের নেতৃত্বে এসআই আব্দুল আহাদ সহ একটি টিম বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে কথিত অপহৃত ভিকটিম আব্দুল ছাত্তার কে নরসিংদী থেকে উদ্ধার করে সোমবার বিকেলে হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমল আদালত ২ – এ তাকে হাজির করলে স্বেচ্ছায় সে তার দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী প্রদান করলে আদালত তাকে নিজ জিম্মায় প্রদান করেন।