মাদ্রাসা থেকে পালানো শিশুকে পরিবারের হাতে তুলে দিল পুলিশ

নুর উদ্দিন সুমন, হবিগঞ্জ :
হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে মাদ্রাসায় পড়ার চাপে পড়ে পালিয়ে যাওয়া ঠিকানা বিহীন শিশুর পরিচয় মিলেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শিশু উদ্ধারের খবরটি ছড়িয়ে পড়লে। বিষয়টি নজরে পড়ে সৌদি প্রবাসী ওই শিশুর পিতার । এ প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার সকালে চুনারুঘাট থানায় এসে শিশুটিকে নিয়ে যায় তার পরিবার। এমন তথ্য জানিয়েছেন থানার ওসি মোঃ রাশেদুল হক। ওই শিশুর নাম তামিম হোসেন হিমেল । সে উপজেলার মিরাশি ইউনিয়নের সৌদি প্রবাসী হেলাল উদ্দিনের ছেলে। এর আগে গত রবিবার বিকেলে উপজেলার শায়েস্তাগঞ্জ নতুনব্রিজ এলাকা থেকে ওই শিশুটিকে উদ্ধার করে চুনারুঘাট থানা পুলিশ।
চুনারুঘাট থানার ওসি রাশেদুল হক জানান, রবিবার সকালে বাসুল্লা বিশগাও দারুসসালাম হাফিজিয়া এতিমখানা মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে নানার বাড়ি ঢাকা যাওয়ার জন্য শিশু তামিম হোসেন হিমেল পালিয়ে আসে। গত রবিবার সকালে মাদ্রাসার হুজুরদের চোখ ফাঁকি দিয়ে বের হয় সে। পরে হাঁটতে হাঁটতে শায়েস্তাগঞ্জ নতুনব্রীজ এলাকায় চলে যায়। এসময় রাস্তার রহস্যজনক ঘোরাফেরা করায় বিষয়টি নজরে পড়ায় স্থানীয় এক দোকানদার তাকে তার দোকানে নিয়ে নাম পরিচয় জানতে চায়। কিন্তু শিশুটি কিছুই বলতে চাচ্ছিলনা।পরে বিষয়টি পুলিশকে জানায় ওই দোকানদার। খবর পেয়ে থানার উপপরিদর্শক এসআই তরিকুল ইসলাম গিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। পুলিশের কাছে তামিম হোসেন তার নাম তামিম বয়স (৯) পিতা মৃত হেলাল মিয়া, মাতা মৃত তানজিলা, নানা নিজাম মাঝি, ঠিকানা সায়েদাবাদ, যাত্রা বাড়ি এবং দারুল কৌমিয়া হাফিজিয়া এতিমখানা মাদ্রাসা যাত্রাবাড়িতে অধ্যয়নরত আছে বলে মিথ্যে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রদান করে। তার নাম-ঠিকানা সঠিকভাবে বলতে না পারায় পুলিশ দুইদিন চরম বিপাকে পড়ে। পরবর্তীতে শিশুর পরিবারের সন্ধানে ব্যাপক তৎপরতা চালান এসআই তরিকুল ইসলাম। একপর্যায়ে পরিবারের সন্ধান চেয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দেন ওসি রাশেদুল হক । পরে বিষয়টি সোমবার রাতে নজরে পরে তামিমের পিতার । এ প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (৯ মে) সকাল ১১টায় থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি রাশেদুল হক, স্থানীয় মিরাশি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মানিক সরকারের উপস্থিতিতে শিশুটির ফুফু রতনা ও দাদা থানায় এসে সঠিক পরিচয় দিয়ে সন্তানকে তাদের সাথে নিয়ে যায়। এসময় থানা পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তামিম হোসেন হিমেলের বাবা হেলাল উদ্দিন ও ফুফু রতনা বেগম।
পালিয়ে যাওয়া তামিমের দাবি, মাদ্রাসার পড়ার চাপ সহ্য করতে না পেরে মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে যায় সে। এর আগে লেখাপড়ার চাপে ৫ বার মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে যায়।