ডিম যেভাবে কোলেস্টেরল জমতে বাধা দেয়
দৈনিকসিলেডেস্ক
শরীরের কোলেস্টেরল নিয়ে অনেকেই চিন্তিত। কারণ কোলেস্টেরল এক ধরনের চর্বি যা শরীরের ক্ষতি করে। কোলেস্টেরল ভীতি আমাদের সর্বক্ষণ তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। মানুষের খাদ্যাভ্যাসের কারণে শরীরে কোলেস্টেরল বেড়ে যায়। বেশি শুয়ে বসে থাকার কারণে জীবনযাপনে কোলেস্টেরল বাড়ে। এরপর কিছু অভ্যাস আছে যেমন ধূমপান, মদ্যপান, জর্দা সেবন এসব কারণেও বাড়ে। আর কিছু রোগ রয়েছে কোলেস্টেরলের জন্য দায়ী, যেমন ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ ইত্যাদি। আর কিছু ওষুধ আছে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখা ভীষণ জরুরি। রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমেই জানা যায় কোলেস্টেরল বেড়েছে না ঠিক আছে।
শরীরে কোলেস্টেরল থাকলে ডিম খাওয়া কি উচিত? সপ্তাহে কটা? নাকি একেবারেই বারণ! গবেষণা রিপোর্ট জানলে অবাক হয়ে যাবেন। বেশির ভাগ মানুষ মাঝ বয়সে পৌঁছে ভয়ে ডিম খাওয়া বন্ধ করে দেন। অথচ ডিমে পাওয়া যায় ভিটামিন এ, ভিটামিন বি ১২, একটা ডিমে ফ্যাট, প্রোটিন, ক্যালোরি, পটাসিয়াম, সোডিয়াম সব পাওয়া যায়! কিন্তু এতে কোলেস্টেরলও থাকে! যা চিন্তার বিষয় এ অবস্থায় ডিম খাওয়া যাবে কি না। কিন্তু গবেষণা বলছে সুস্থ মানুষরা দিনে একটা করে ডিম খেতেই পারেন। তবে প্রতিদিন খাওয়া নিয়ে প্রশ্ন থাকছে!
গবেষণায় চিকিৎসকের মতে, ডিম খেলে রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা ততটা বৃদ্ধি পায় না। একজন পূর্ণ বয়স্ক সুস্থ মানুষ দৈনিক গড়ে ৩০০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত কোলেস্টেরল গ্রহণ করতে পারে। আর একটি ডিমে রয়েছে মাত্র ২০০ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল। ডিম রক্তে কোলেস্টেরল জমতে বাধা দেয়। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে, মস্তিষ্কের কার্যকারিতা ঠিক রাখে, ভালো রাখে চোখ, হাড় ও প্রোটিনের ঘাটতি পূরণে সাহায্য করে।
ডিমের সাদা অংশ খেলে কোনো সমস্যা তো হবেই না, এমনকি কুসুমসহ সম্পূর্ণ ডিম খেলেও উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরল ও হৃদ্রোগের ঝুঁকি থাকে না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিদিন একটি করে ডিম খেলে হার্টের ক্ষতি করে না। সকালের নাশতায় একটি ডিম কোলেস্টেরল প্রোফাইলের ওপর তেমন কোনো প্রভাব ফেলে না। ডিমের মধ্যে যে প্রোটিন, ভিটামিন বি১২, রিবোফ্লোবিন, ফলেট ও ভিটামিন ডি রয়েছে, তা কোলেস্টেরল বৃদ্ধির ক্ষতিকর প্রভাব কমিয়ে দেয়।
শরীরের রোগ সম্পর্কে অনেকেই অবগত থাকেন না। সে ক্ষেত্রে সপ্তাহে তিনটা ডিম খাওয়া নিরাপদ। মধ্যবয়স পেরিয়ে গেলেই এই নিয়ম মানতে বলা হচ্ছে। তবে এই বয়সে সব সময় প্রতি তিন মাসে শরীরের একটা রুটিন চেক-আপ করানো উচিত। এতে জানা যায় সুগার, কোলেস্টেরল বাসা বাঁধছে কি না। কোলেস্টেরল থাকলে বা বেশি মাত্রায় থাকলে একটার বেশি ডিম সপ্তাহে খাওয়া উচিত নয়। ডিমের কুসুমের মধ্যেই বেশির ভাগ উপাদান থাকে। তাই কুসুম বাদ দিয়েও খেতে পারেন।
যদি হার্টের সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা এবং ব্লাড সুগার একসঙ্গে থাকে তবে ডিম খাওয়ায় লাগাম টানতে হবে। খুব বেশি হলে মাসে দু’টো ডিম খেতে পারেন! তবে একটা বয়সের পর প্রতিদিন ডিম খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ প্রয়োজন, যদি শরীরে রোগ থাকে।
নিয়মিত ফল, টাটকা শাক-সবজি অবশ্যই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখুন। তাহলে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকে। বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে দুর্বল হয়ে পড়েছেন যারা, সুস্বাস্থ্যের জন্য নিয়মিত ডিম খাওয়া উচিত।