সিসিক নির্বাচন থেকে সড়ে দাঁড়ালেন দিনার খান হাসু
সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন ১৯নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক তিন বারের কাউন্সিলর, মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক দিনার খান হাসু। সোমবার (২২ মে) বিকেলে নগরীর মিরাবাজারের একটি হোটেলের হলরুমে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ ঘোষণা দেন।
সংবাদ সম্মেলনে হাসু জানান, তিনি আগামী সিটি নির্বাচনে ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে আবারও কাউন্সিলর প্রার্থী হতে চাচ্ছিলেন। এলাকার মানুষের আকাংক্ষা ও অনুরোধে তিনি প্রার্থী হওয়ার প্রস্তুতিও নিয়েছিলেন। তবে দলের সিদ্ধান্ত ও নির্বাচনী পরিবেশ না থাকায় নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। ইভিএমের মাধ্যমে সুষ্ঠু ভোট হবে না বলেও আশঙ্কা করেন তিনি।
লিখিত বক্তব্যে দিনার খান হাসু বলেন, আমি বিএনপির একজন কর্মী। আমার এ পর্যায়ে আসার পেছনে বিএনপির অবদান অনস্বীকার্য। তিন বার কাউন্সিলর হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে আমি জনগণের ভোটের আমানত রক্ষা করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। বিগত দিনগুলোতে এলাকাবাসীর যে ভালোবাসা ও সহযোগিতা পেয়েছি সে ঋণ আমি শোধ করতে পারব না।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, বর্তমানে দেশে নির্বাচনের কোনো পরিবেশ নেই। দেশে ভোটাধিকার নেই। গণতন্ত্র ও সুশাসন আজ প্রশ্নবিদ্ধ। তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অবস্থায় কার্যত বন্দিজীবন কাটাচ্ছেন। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে আসতে পারছেন না। সারাদেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের গুম করা হচ্ছে।
হাসু আরও বলেন, ‘গ্রেপ্তার-নির্যাতনের পাশাপাশি মিথ্যা ও গায়েবি মামলার মাধ্যমে হয়রানি করা হচ্ছে নেতাকর্মীদের। আমাকেও সাজানো ও বানোয়াট মামলায় শুধুমাত্র হয়রানি করতে গ্রেপ্তার করা হয়েছিলো। অথচ, এ মামলায় যে ঘটনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে তখন আমি দেশের বাইরে ছিলাম। ইভিএমে ভোটগ্রহণের মাধ্যমে ডিজিটাল ডাকাতির প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আমার বাক্সে ভোট যাবে না। এটি ডিজিটাল ভোট ডাকাতির অংশ। বিগত নির্বাচনেও আমার নিশ্চিত বিজয় হাইজ্যাক হয়েছিল।
তিনি আরো বলেন, বিগত ২০১৮ সালের নির্বাচন প্রসঙ্গে উল্লেখ করেন সেদিন ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে যে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করা হয়েছিল। আপনারা জানেন সেই নির্বাচন সুষ্টু ও নিরপেক্ষ হলে আমার বিজয় নিশ্চিত ছিল। কিন্তু আমার বিজয়কে নস্যাত করার জন্য একটি অপশক্তি নির্লজ্জভাবে দুর্বত্তপনা করেছিল। তারা বখতিয়ার বিবি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোটকেন্দ্র দখল করে প্রকাশ্যে ভোট ডাকাতি করে। সেদিন আমার এজেন্ট এবং ভাতিজা তালহা খানকে ভোটকেন্দ্রে থেকে বের করে দেয়, তখন সে প্রতিবাদ করলে তাকে গুলি করে রক্তাক্ত জখম করে সেই অপশক্তি। যা তৎকালীন সময়ে স্থানীয় ও জাতীয় গনমাধ্যমে আলোচিত হয়েছিল। আমার ভাতিজা সেইসময় দীর্ঘদিন লাইফ সার্পোটে ছিল। পরবর্তীতে কিছুটা সুস্থ হলেও এখনও সে নানা শারীরিক অসুবিধার মধ্য দিয়ে দিনযাপন করছে।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন ও উপস্থিত ছিলেন, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র ও বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-ক্ষুদ্র ঋণ বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রাজ্জাক, সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন চৌধুরী ও মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক সালেহ আহমদ খসরু, বিএনপি নেতা জসিম উদ্দিন, রেজাউল করিম নাচন, খালেদুর রশীদ ঝলক, আমিনুল ইসলাম বেলাল,১৯নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি নাদির খান, প্রমুখ।