যেসব উপায়ে ভালো কাজের তাওফিক মেলে
দৈনিকসিলেট ডেস্ক :
কোনো মানুষের বাহ্যিক শক্তি ও সামর্থ্য তার কল্যাণ নিশ্চিত করতে পারে না; বরং সে সর্বাবস্থায় আল্লাহর মুখাপেক্ষী। আল্লাহ প্রদত্ত ভালো কাজের সুযোগকে তাওফিক বলা হয়। আল্লাহ বলেন, ‘আমি তাদের যে প্রতিষ্ঠা দিয়েছিলাম তোমাদের তা দিইনি; আমি তাদের দিয়েছিলাম কান, চোখ ও হৃদয়; কিন্তু তাদের কান, চোখ ও হৃদয় তাদের কোনো কাজে আসেনি। কেননা তারা আল্লাহর আয়াতগুলো অস্বীকার করেছিল।
যা নিয়ে তারা ঠাট্টা-বিদ্রুপ করত। এটাই তাদের পরিবেষ্টন করল।’ (সুরা আহকাফ, আয়াত : ২৬)
ভালো কাজের সুযোগ লাভের উপায়
ভালো কাজের সুযোগ তথা তাওফিক হলো আল্লাহর একান্ত অনুগ্রহ। তবে কিছু কিছু আমলের মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর এই অনুগ্রহ লাভ করতে পারে।
এমন কয়েকটি কাজ হলো—
১. আল্লাহর অনুগ্রহ : কোনো আমল ছাড়া কেবল আল্লাহর অনুগ্রহেও ব্যক্তি তাওফিক লাভ করতে পারে। ইরশাদ হয়েছে, ‘আমি তো আমার সাধ্যমতো সংস্কারই করতে চাই। আমার কার্যসাধন তো আল্লাহরই সাহায্যে; আমি তাঁরই ওপর নির্ভর করি এবং তাঁরই অভিমুখী।’ (সুরা হুদ, আয়াত : ৮৮)
২. নিয়তের সততা : দাম্পত্যজীবনের কলহের ব্যাপারে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তারা উভয়ে নিষ্পত্তি চাইলে আল্লাহ তাদের মধ্যে মীমাংসার অনুকূল অবস্থা সৃষ্টি করবেন।
নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সবিশেষ অবহিত।’ (সুরা নিসা, আয়াত : ৩৫)
৩. আল্লাহর ওপর আস্থা : যারা আল্লাহর ওপর আস্থাশীল আল্লাহ তাদের পথ খুলে দেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘আমার কার্যসাধন তো আল্লাহরই সাহায্যে; আমি তাঁরই ওপর নির্ভর করি এবং আমি তাঁরই অভিমুখী।’ (সুরা হুদ, আয়াত : ৮৮)
৪. দৃঢ়প্রত্যয় : রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তির একমাত্র চিন্তার বিষয় হবে পরকাল, আল্লাহ সেই ব্যক্তির অন্তরকে অভাবমুক্ত করে দেবেন এবং তার যাবতীয় বিচ্ছিন্ন কাজ একত্র করে সুসংযত করে দেবেন, তখন তাঁর কাছে দুনিয়াটা নগণ্য হয়ে দেখা দেবে।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ২৪৬৫)
৫. প্রচেষ্টা : কেউ ভালো কাজে প্রচেষ্টা করলে আল্লাহ পথ খুলে দেন।
ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা আমার উদ্দেশ্যে সংগ্রাম করে আমি তাদের অবশ্যই আমার পথে পরিচালিত করব। আল্লাহ অবশ্যই সৎকর্মপরায়ণদের সঙ্গে থাকেন।’ (সুরা আন কাবুত, আয়াত : ৬৯)
৬. দোয়া : দোয়া আল্লাহর অনুগ্রহকে ত্বরান্বিত করে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, বিপদগ্রস্ত ব্যক্তির দোয়া হলো: ‘হে আল্লাহ, আমি আপনার রহমতপ্রার্থী। কাজেই আমাকে এক পলকের জন্যও আমার নিজের কাছে সোপর্দ করবেন না এবং আমার সব কিছু সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করে দিন। আর আপনিই একমাত্র উপাস্য।’ (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ৫০৯০)
মুমিনজীবনে তাওফিকের বহিঃপ্রকাশ
মুমিনজীবনে তাওফিকের বহিঃপ্রকাশ ঘটে ভালো কাজের সুযোগ লাভ এবং মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে। যেমনটি ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা জেনে রাখো যে তোমাদের মধ্যে আল্লাহর রাসুল রয়েছেন; তিনি বহু বিষয়ে তোমাদের কথা শুনলে তোমরাই কষ্ট পেতে। কিন্তু আল্লাহ তোমাদের কাছে ঈমানকে প্রিয় করেছেন এবং তাকে তোমাদের হৃদয়গ্রাহী করেছেন; কুফরি, পাপাচার ও অবাধ্যতাকে করেছেন তোমাদের কাছে অপ্রিয়। তারাই সৎপথ অবলম্বনকারী।’ (সুরা হুজরাত, আয়াত : ৭)
‘তাওফিকে’র ব্যাপারে হতাশা নয়
আল্লাহর পক্ষ থেকে ভালো কাজের সুযোগ লাভে বান্দা কখনো নিরাশ হবে না। কেননা আল্লাহ যেকোনো সময় তাকে সুযোগ করে দিতে পারেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ তাআলা যদি তাঁর কোনো বান্দার কল্যাণ করার ইচ্ছা করেন তাহলে তাকে কাজ করার তাওফিক দেন। প্রশ্ন করা হলো, হে আল্লাহর রাসুল, তিনি কিভাবে তাকে কাজ করার তাওফিক দেন? তিনি বললেন, তিনি সেই বান্দাহকে মৃত্যুর আগে সৎকাজের সুযোগ দান করেন।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ২১৪২)
আল্লাহ সবাইকে ভালো কাজের তাওফিক দিন। আমিন