ব্রিটেনে রেডব্রিজের মেয়র নির্বাচিত হলেন মৌলভীবাজারের জ্যোৎস্না
দৈনিকসিলেট ডেস্ক :
মাল্টিন্যাশনাল ও মাল্টিকালচারালের বৃটেনের মূলধারার রাজনীতিতে আরেক বাঙালি নারীর সাফল্য যুক্ত হলো। সেখানকার মূলধারার রাজনীতিতে নেতৃত্বের পাশাপাশি জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়ে সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালনের একের পর এক চমক দেখাচ্ছেন বাঙালিরা। প্রবাসী ও পর্যটন অধ্যুষিত মৌলভীবাজারের মেয়ে কাউন্সিলর ও ডেপুটি মেয়র জোৎস্না রহমান ইসলাম লন্ডন বরো অব রেডব্রিজের মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। তার এমন সাফল্যের সংবাদে আত্মীয়স্বজনসহ জেলাবাসী আনন্দিত।
যুক্তরাজ্যে বসবাসরত মৌলভীবাজার জেলার বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রায় ২৫ জনেরও বেশি কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর ধারাবাহিক সাফল্যের এটা অন্যতম প্রাপ্তি বলে মন্তব্য করেছেন সেখানকার বাঙালি কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ। তারা বলছেন ধারাবাহিক এই সাফল্য অর্জন আগামীতে আরও বড় পদের নেতৃত্ব দেবেন বাঙালিরা এমন স্বপ্ন ও প্রত্যাশা করছেন। জানা যায়, মৌলভীবাজারের মেয়ে ও সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরের পুত্রবধূ কাউন্সিলর জোৎস্না রহমান অতিসম্প্রতি লন্ডন বরো অব রেডব্রিজের মেয়র নির্বাচিত হয়ে দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন। তিনি একাধিকবার কাউন্সিলর ও লন্ডন বরো অব রেডব্রিজের ডেপুটি মেয়রও নির্বাচিত হয়েছিলেন। এ
ই তথ্যটি নিশ্চিত করে যুক্তরাজ্যে বসবাসরত বাঙালিদের পক্ষ থেকে তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছেন বৃটেনের বিশিষ্ট বাঙালি কমিউনিটি লিডার, সমাজকর্মী ও সংগঠক মোহাম্মদ মকিস মনসুর। তিনি বলেন, ড. বাবলিন মল্লিক ও জোৎস্না ইসলাম দুইজনই মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। তাদের দুইজনের বাড়ি আমার গ্রামের বাড়ির এলাকায়।
তারা দুইজনই কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছিলেন এখন মেয়রও হলেন। তারা যুক্তরাজ্যের মূলধারার রাজনীতির সঙ্গে মিশে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। যা বাংলাদেশি কমিউনিটির জন্য অত্যন্ত গৌরবের ও বর্তমান প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণার। জানা যায়, মেয়র জ্যোৎস্নার স্বামী সাম ইসলাম কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব ও একই কাউন্সিলের কাউন্সিলরও।
স্বামীর অনুপ্রেরণায় তিনি ধারাবাহিক সাফল্য অর্জনে এগিয়ে চলেছেন। এ দম্পতি এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে লন্ডনের রেড ব্রিজেই দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন। জ্যোৎস্না ইসলামের বাড়ি মৌলভীবাজার সদর উপজেলার একাটুনা ইউনিয়নের উত্তর মোলাইম গ্রামে। তিনি লন্ডনের প্রবীণ ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক মরহুম আব্দুর রহমান (মন্নাফ মিয়া) ও বেগম মুহিবুন্নাহার এর মেয়ে। মেয়র জোৎস্না রহমান ইসলাম ১৯৬৬ সালে লন্ডনে জন্মগ্রহণ করেন। কিন্তু পরে মা-বাবার ইচ্ছায় বাংলাদেশে ফিরে আসেন। তার মা-বাবার প্রবল আগ্রহ ছিল তাদের সন্তানরা বাংলাদেশ এবং যুক্তরাজ্য এই দু’দেশের শিক্ষা, সাহিত্য, সংষ্কৃতি ও সামাজিক পরিবেশে বেড়ে ওঠার।
এই কারণেই দেশে মৌলভীবাজারে আলী আমজাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও মৌলভীবাজার সরকারি মহাবিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেন জ্যোৎস্না। লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলায়ও খুবই পারদর্শী ছিলেন। স্থানীয় ও বিভাগীয় পর্যায়ে বিভিন্ন ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে অনেক পদকও অর্জন করেন। ১৯৮৬ সালে লন্ডনে ফিরে লোকাল গভর্নমেন্ট-এ চাকরির পাশাপাশি এমবিএ করেন। তিনি বেঙ্গলি স্পোর্টস কাউন্সিল, বাংলাদেশি কমিউনিটির জন্য বিভিন্ন সোশ্যাল সার্ভিসের জন্য টিভি প্রোগ্রাম করেন।
লন্ডনে রেডব্রিজ বৈশাখী মেলা ট্রাস্টের অর্গানাইজার। সিনেবাজ ফিল্ম প্রোডাকসন্স এর চেয়ারম্যান। বিদেশে বাংলা চলচিত্রের প্রচার, প্রসার ও জনপ্রিয়তা প্রতিষ্ঠার লক্ষে লন্ডনে বেঙ্গলি ফিল্ম ক্লাব নামে একটি সংগঠন করেন এবং লন্ডনে অনেকগুলো বাংলা ছবির প্রদর্শন করেন। নিজ এলাকা মৌলভীবাজারের একাটুনা ইউনিয়ন ডেভেলপমেন্ট এন্ড ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের ট্রাস্টিসহ লন্ডনে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত রয়েছেন। তিনি বর্তমানে রেডব্রিজ লেবার পার্টির ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন।