প্রকাশ্যে চলছে শৌচ কাজ,বিঘ্নিত হচ্ছে পরিবেশ” ফেসবুকে: নিন্দার ঝড়
নাহিদ মিয়া,মাধবপুর প্রতিনিধি
হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার পৌরসভা সদরে মাধবপুর- নাসিরনগর নতুন রাস্তায় প্রকাশ্যেই চলছে শৌচ কাজ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উঠেছে নিন্দার ঝড়। মাধবপুর উপজেলার সাথে পার্শ্ববর্তী দুইটি উপজেলা নাসিরনগর এবং বিজয়নগর উপজেলা হওয়ায় মাধবপুর সদরে বাজারে প্রতিদিন নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের জন্য হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটে। মাধবপুর বাজারের উত্তর দিকে মাধবপুর-নাসিরনগর নতুন সংযোগ রাস্তাটি হওয়ার ফলে এই রাস্তায় প্রতিদিন শত শত মানুষ যাতায়াত করে। তাছাড়া মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও একমাত্র বালিকা বিদ্যালয় প্রেমদাময়ী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও উপজেলা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রী যাওয়ার একমাত্র রাস্তা হচ্ছে এটি। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নতুন কাঁচা রাস্তার পাশে ছোট একটি খাল রয়েছে সেই খালে প্রতিনিয়ত বাজারের ময়লা আবর্জনা ফেলে পানি নিষ্কাশনের পথে বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে। মুহূর্তেই একে দুয়ে ওই খালের পাড় বসে প্রকাশ্য দিবালোকে এমনকি রাতেও প্রতিনিয়ত দাঁড়িয়ে বসে শৌচ কাজ করছে বাজারের ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ। ময়লা আবর্জনা ফেলা ও প্রকাশ্যে শৌচ কাজ করার ফলে তীব্র দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতির সাথে সাথে সৃষ্টি হচ্ছে নানান রোগ বালাই।
প্রকাশ্যে শৌচ কাজ করার ফলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে তীব্র নিন্দার ঝড় উঠেছে। এ নিয়ে মোঃআবুল কাশেম নামে এক ব্যক্তি গত বৃহস্পতিবার(২৫ মে) তার ব্যবহৃত অফিসিয়াল ফেইসবুক আইডি ”মোহাম্মদ আবুল কাশেম” থেকে তীব্র নিন্দা জানিয়ে ও উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌরসভা মেয়রের দৃষ্টি আকর্ষণ করে একটি স্ট্যাটাস দেন।এরপর থেকেই স্ট্যাটাসটি ভাইরাল হয়ে যায় স্ট্যাটাসে লিখেন “আমাদের মাধবপুর পৌর শহরে যতগুলো শপিং মল রয়েছে তার মধ্যে অধিকাংশই অপরিকল্পিত ভাবে তৈরি করা হয়েছে। মালিকরা শপিংমল বানিয়ে প্রতিটি দোকান থেকে সিকিউরিটি বাবদ লক্ষ লক্ষ টাকা নিচ্ছে। কিন্তু মার্কেটের দোকানদার ও কর্মচারীদের জন্য নূন্যতম একটি শৌচাগার তৈরি করেনি। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, স্কুল ও বিভিন্ন ডায়াগনস্টিকের কথা উল্লেখ করে তিনি লিখেন নাছিরনগর উপজেলার শত শত লোকের যাতায়াতের একমাত্র রাস্তা এটি।তাছাড়া রাস্তার উত্তরপার্শে সরকারি কর্মচারীদের জন্য একটি ডরমিটরি বিল্ডিং রয়েছে। রাস্তা দিয়ে ছেলে মেয়ে ছাত্র ছাত্রী আসা-যাওয়ার সময় দিনে দুপুরে দোকানদার ও কর্মচারীরা রাস্তার উত্তরপার্শে নির্লজ্জের মতো অনেক লোক একসাথে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করে।
উন্মুক্ত জায়গায় শত শত লোক দীর্ঘদিন প্রস্রাব করাতে দুর্গন্ধ এত বেরেছে যে এতে করে চলাচলরত ভদ্রমহিলা ও ছাত্র ছাত্রীদের অসুবিধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে,বয়োজ্যেষ্ঠ ও শিশুরা স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। স্ট্যাটাসটি ফেইসবুকে পোস্ট দেওয়ার পরে অসংখ্য ফেইসবুক ব্যবহারকারী শেয়ার আর তীব্র নিন্দা ও প্রতিকার চেয়ে কমেন্ট করতে থাকে। এই নিয়ে রাস্তা ঘাটসহ চায়ের দোকানগুলোতে চলছে ব্যাপক সমালোচনা। উক্ত স্ট্যাটাসে উদয় সংকর দত্ত নামে একজন লিখেন,পৌর মেয়র দৃষ্টি আকর্ষণ করার পর তিনি পদক্ষেপ নিতে গিয়েও পারেননি। মাধবপুর উপজেলা প্রেসক্লাবের আহব্বায়ক মোঃএরশাদ আলী,স্ট্যাটাসটি গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ব্যবস্থা গ্রহন করার আশা ব্যক্ত করেন।
এই ব্যাপারে মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনজুর আহসান যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, এই রাস্তায় একটা ওয়াসব্লক হওয়ার কথা রয়েছে। ওয়াসব্লক হলে এই ধরনের কাজ কমে যাবে। রাস্তা উন্নয়নের জন্য রেজুলেশন করে পৌর সভাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।যেহেতু রাস্তা পৌর সভার। এই রাস্তায় যাতে কেউ শৌঁচ কাজ করতে না পারে সে ব্যাপারে পৌর সভাকে বলা হয়েছে। এই ব্যাপারে আরো যেসব উদ্যোগ নেওয়া যায় আমরা তা নিব।