বিদ্যুৎ স্বাভাবিক হতে সময় লাগলে ক্ষমা করে দিয়েন: পরিকল্পনামন্ত্রী
দৈনিকসিলেট প্রতিবেদক :
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, বিদ্যুৎ নিয়ে সরকার কাজ করছে। আদানির বিদ্যুৎ আসছে, কয়লা নিয়ে জাহাজ মোংলাবন্দরে ভিড়েছে। দুই সপ্তাহের মধ্যে বিদ্যুৎ স্বাভাবিক হবে, দুই সপ্তাহের জায়গায় ১৬/১৭ দিন লাগলে ক্ষমা করে দিয়েন।
‘হাওরাঞ্চলে অকাল বন্যা ঠেকাতে করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শনিবার (১০ জুন) সকাল ১০টায় সুনামগঞ্জ পৌর শহরের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ্যোতি লাইব্রেরি মিলনায়তনে এ বৈঠক হয়।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, অবহেলিত পিছিয়ে পড়া অর্থনৈতিক অঞ্চল, হাওর, চরাঞ্চল, উপকূলীয় অঞ্চল, পাহাড়ি জনপদের দিকে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ নজর আছে। তিনি আমার মায়ের মতো, বোনের মতো, চাচির মতো এলাকার উন্নয়ন নিয়ে কথাবার্তা বলেন।
তিনি বলেন, সুনামগঞ্জে এখন স্বাক্ষরতার হার বেড়েছে, বাড়ি বাড়ি বিদ্যুৎ গেছে। আগে ঘর ছিল খড়ের চালের। ধান চাষ আর মাছ ধরে খেয়ে আমরা বাঁচতাম। সেই জায়গা থেকে এখন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, টেকনিক্যাল কলেজ, টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট হচ্ছে। রাণীগঞ্জ সেতু হয়েছে, দিরাই-শাল্লা-আজমিরিগঞ্জ সড়ক হচ্ছে। এগুলো কিন্তু সামরিক-স্বৈরাচার সরকার বা অন্য দল করেনি। তারা এসব বিষয় চিন্তাও করে নাই। ওরা ছিল শহুরে বাবুদের, সুশীল সমাজের সুশীল দল। সেই সুশীল দলের চিন্তায় কুশীল চিন্তাভাবনা ছিল।
হাওর এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে বিভিন্ন সাহসী পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে সরকার উল্লেখ করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আমরা ডুবন্ত সড়ক ও উড়াল সড়ক নির্মাণ করব। গাছগাছালি, পশু, পাখি, মাছ যাতে নিরাপদ থাকে সেদিকেও আমাদের নজর আছে। আমরা ভাটি অঞ্চলের মানুষ, জলাভূমির মানুষ। আমাদের পরিবেশের সঙ্গে সমন্বয় করে, পরিবেশের জায়গা পরিবেশকে দিয়ে নিজেদের সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। জননেত্রী শেখ হাসিনা চেষ্টা করছেন আমাদের সব সমস্যা সমাধানের। প্রতিবেশীদের সম্পর্কে আমাদের বোঝাপড়া দরকার, সহযোগিতা দরকার উল্লেখ করে পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, বিবাদ করে সমস্যার সমাধান হবে না। আমরা একই জলাভূমির একই প্রাকৃতিক পরিবেশের মানুষ। সাংস্কৃতিকভাবেও আমাদের হাজার বছরের যোগাযোগ আছে। সেটা অস্বীকার করে আমরা এগুতে পারব না। ভারত চাইলেও বন্যার পানি আটকাতে পারবে না। বন্যা শুধু বাংলাদেশে হয় না, ভারতেও হয়। আসামের ডিব্রুগড়, লামডিংসহ অনেক অঞ্চলের মানুষ জলে ভাসে। সেজন্য একসঙ্গে মিলে আমাদের সমস্যার সমাধান করতে হবে।
আলোচনায় বক্তব্য দেন সুনামগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ, সিলেট-সুনামগঞ্জ সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট শামীমা শাহরিয়ার, সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী, পুলিশ সুপার মো. এহসান শাহ, সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নাদের বখত, সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ পরিমল কান্তি দে, বাংলাদেশ কৃষক সংগ্রাম সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান কবির, ‘মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন হেলাল শিক্ষা ট্রাস্ট্রের সাধারণ সম্পাদক কবি মুনমুন চৌধুরী, সিনিয়র আইনজীবী স্বপন কুমার দাশ রায়, তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল, সুনামগঞ্জ হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সহসভাপতি সুখেন্দু সেন, সুনামগঞ্জ জেলা সিপিবির সভাপতি অ্যাডভোকেট এনাম আহমদ, জেলা কৃষক দলের সভাপতি আসিনুল হক, জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি সেলিম আহমদ, বাংলাদেশ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (বাকবিশিস) সুনামগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি সভাপতি অধ্যাপক শুভংকর তালুকদার মান্না, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নিগার সুলতানা কেয়া, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ্যোতি লাইব্রেরির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খলিল রহমান, নারী উদ্যোক্তা জাহানারা বেগম প্রমুখ।