নারীর উপর বিধিনিষেধ প্রত্যাহরের বিষয়ে নিশ্চয়তা দিচ্ছে না তালিবান
দৈনিকসিলেটডেস্ক
আফগানিস্তানে জাতিসংঘের শীর্ষ কর্মকর্তা বলেছেন , তালিবানের কাছ থেকে এমন কোন প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়নি যে তারা দেশের নারীদের উপর আরোপিত তাদের “শাস্তিমূলক বিধিনিষেধ” প্রত্যাহার করবে আর এর ফলে সে দেশে জাতিসংঘের কর্মকান্ডকে “ প্রশ্নবোধক” করে তুলেছে।
আফগানিস্তানে জাতিসংঘের সহযোগিতা মিশনের প্রধান রোজা ওতুনবায়েভা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের এক বৈঠকে জানান, “ এই নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে প্রকৃত কর্তৃপক্ষ আমাদের কোন রকম ব্যাখা দেয়নি এবং এটি প্রত্যাহার করা হবে তেমন কোন নিশ্চয়তাও দেয়নি ।”
তালিবান গত ৫ এপ্রিল মৌখিক ভাবে জাতিসংঘকে জানায় যে মানবিক সংগঠনগুলো কর্মরত নারীদের উপরে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা জাতিসংঘের কেএত্রও প্রযোজ্য হবে । সে দেশে প্রায় ৪০০ আফগান নারী জাতিসংঘের হযৈ কাজ করেন।KSRM
তারপর থেকে জাতিসংঘ আফগানিস্তানে তার নারী কর্মীদের এবং অত্যাবশ্যক নন এমন পুরুষ কর্মীদেরও বাড়ি থেকেই কাজ করার নির্দেশ দিয়েছে।
ওতুনবায়েভা বলেন , “ আমরা দৃঢ় ভাবে বলছি – সে দেশের নারী কর্মীদের পরিবর্তে পুরুষ কর্মীদের নিয়োগ দেয়া হবে না , যেমনটি সে দেশের শাসকরা বলতে চেয়েছেন।”
নিরাপত্তা পরিষদ তালিবানের এই আদেশের নিন্দা করেছে এবং ২৭ এপ্রিল সর্বসম্মত ভাবে পাশ হ্ওয়া প্রস্তাবে এই আদেশ বাতিল করার করার আহ্বান জানিয়েছে। তবে তালিবান এতে অবিচলিত রয়েছে । তাদের শীর্ষতম নেতা হিবাতুল্লাহ আখুনজাদা এ মাসে সরকারী মুখপাত্রদের আদেশ দিয়েছেন যে তারা যেন তাদের বিবৃতিতে ইসলামি আইন প্রয়োগের উপর জোর দেয়।
তিনি দক্ষিণাঞ্চলের শহর কান্দাহারে এক বৈঠকে বলেন, “ যুক্তরাষ্ট্র এবং জাতিসংঘ গোটা বিশ্বকে জিম্মি করে রেখেছে এবং তাদের কথা ছাড়া কিছুই নড়ে চড়ে না। ইসলামিক আমিরাত( তালিবান) প্রকৃতপক্ষে আফগানিস্তানের সকল অংশ নিয়ন্ত্রণ করে তবে অমুসলমানরা এমনকী ইসলামিক দেশরা্ও এটি মেনে নিতে অস্বীকার করে।”
ওতুনবায়েভা বলেন, “ তালিবান আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি চায় কিন্তু তার মানে হচ্ছে জাতিসংঘের সনদ অনুযায়ী তাদের দায়িত্ব পালন করা , এর মূল্যবোধের বিরুদ্ধে কাজ করা নয়।
তিনি বলেন “সেখানকার ক্ষমতাসীন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমার নিয়মিত আলোচনায় আমি পরিস্কার ভাবে জানিয়েছি তারা বিশেষত নারী ও মেয়েদের ব্যাপারে এসব নির্দেশ ও বিধিনিষেধের মাধ্যমে নিজেরাই নিজেদের জন্য প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে । আমরা তাদের জানিয়েছি যতদিন এই সব বিধিনিষেধ চালু থাকবে, এমন সম্ভাবনা প্রায় অসম্ভব যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তাদের সরকারকে স্বীকৃতি দেবে।
তিনি বলেন , এই সব নিষেধাজ্ঞা যার মধ্যে আগে থেকেই রয়েছে মাধ্যমিক স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠগ্রহণ, পার্কে ও জিমে যাওয়া এবং বাড়ির বাইরে যাওয়া থেকে মেয়েদের বিরত রাখার নিষেধাজ্ঞা মেয়ে ও নারীদের মানসিক ও শারিরীক স্বাস্থ্যের উপর প্রতিকুল প্রভাব ফেলছে।
ওতুনবায়েভা বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য তালিবানকে বলেন যাতে জাতিসংঘ আফগান জনগণের প্রতি পূর্ণ সমর্থন অব্যাহত রাখতে পারে , যাদের মধ্যেদু কোটি আশী লক্ষেরও বেশি মানুষের কোন না কোন ধরণের মানবিক সহায়তার প্রয়োজন রয়েছে।
সূত্র: ভয়েস অব আমেরিকা