চুনারুঘাটে সাপের কামড়ে মৃত্যু-২
নুর উদ্দিন সুমন, হবিগঞ্জ
হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে সাপে কাটা রোগীর অ্যান্টিভেনম নেই, বিনা চিকিৎসায় ৫ দিনের ব্যবধানে ২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। জানা যায়, উপজেলার উত্তর গোগাউড়া গ্রামের দিঘির পাড়ে বিষাক্ত সাপের কামড়ে দুইদিন পর প্রাণ হারিয়েছেন জালালাবাদ গ্যাস ফ্লিডে কর্মরত মো: আব্দুল কাদির জিতু (৪৮) নামে এক ব্যক্তি । বৃহস্পতিবার (২২জুন) সকালে ৮ টার দিকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তিনি উপজেলার উত্তর গোগাউড়া গ্রামের মৃত আলহাজ্ব ক্বারী আব্দুল গফ্ফারের পুত্র ।
এর আগে গত মঙ্গলবার রাতে বৃষ্টির পানিতে দিঘির নালে মাছ শিকার করতে গেলে বিষাক্ত সাপ ছোবল দেয়। এসময় আশপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে প্রথমে চুনারুঘাট হয়ে সিলেট পাঠানো হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। আব্দুল কাদির জিতু হবিগঞ্জ জালালাবাদ গ্যাস ফ্লিডে অফিস সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। চুনারুঘাট উপজেলার টিএইচও ডা: মোজাম্মেল হোসেন জানান, চুনারুঘাট হাসপাতালে সাপে কাটা রোগীর অ্যান্টিভেনম না থাকায় তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজনে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছিল। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এদিকে গত ১৭ জুন বিকেলে মাছ শিকার করতে গিয়ে উপজেলার রানিগাও ইউনিয়নের কালিকাপুর গ্রামের সালাহউদ্দিন নামে এক কিশোর অ্যান্টিভেনম ইনজেকশন না পেয়ে তার মৃত্যু হয়েছে বলে দাবী তার পরিবারের । প্রসঙ্গত: চুনারুঘাট উপজেলায় বর্ষা মৌসুমে সাপের কামড়ের শিকার বেশি হন গ্রামের সাধারণ মানুষ।
গ্রামাঞ্চলে বৃষ্টির পানিতে মাছ শিকারে গিয়ে মানুষ সাপের কামড়ে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে পড়েন। প্রায়ই সময়ে সাপের কামড়ে মানুষের অসুস্থ ও মৃত্যুর হওয়ার খবর পাওয়া যায়। অথচ গুরুত্বপূর্ণ একটি উপজেলা সাস্থ্যকমপ্লেক্সে সাপের বিষক্ষয়ের ওষুধ (অ্যান্টিভেনম) নেই। ফলে বিষাক্ত সাপের কামড়ে অনেক রোগী মারা যাচ্ছেন। বর্ষা মৌসুমেই সাপের কামড়ের ঘটনা এ উপজেলায় বেশি ঘটে। এ অবস্থায় উপজেলা সরকারি হাসপাতালে সাপের বিষক্ষয়ের পর্যাপ্ত ওষুধ সরবরাহ নিশ্চিত করার দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগী সহ সাধারণ মানুষ । অপর দিকে কুসংস্কারের কারণে সাপের কামড়ের শিকার অনেকে প্রথমে চিকিৎসকের কাছে যান না। সময়মতো সঠিক চিকিৎসা না পেলে সাপে কাটা ব্যক্তির জীবন হুমকির মুখে পড়ে যায়।