আলোর মুখ দেখেনি জামালগঞ্জ ‘মডেল মসজিদ’
রাজু আহমেদ রমজান
সরকারী অর্থায়নে দেশের বিভিন্ন স্থানে ‘মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র’ নির্মাণ হলেও সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলায় নির্মাণাধীন মডেল মসজিদের কাজ মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। নির্মাণ কাজের মেয়াদ দেড় বছর পূর্বে শেষ হলেও আজো আলোর মুখ দেখেনি জামালগঞ্জ সরকারী মডেল মসজিদ।
জানা গেছে, উপজেলার জামালগঞ্জ-সেলিমগঞ্জ সড়কের নতুন পাড়া সড়কের পাশে প্রায় ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে মসজিদ নির্মাণ কাজ পায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কবির সিন্ডিকেটের লিমিটেড। ২০১৯ সালের ২১ নভেম্বর নির্মাণ কার্যাদেশ পেয়ে ২০২১ সালে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়া কথা ছিল। নির্ধারিত সময়ের দেড় বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো তেমন কোন কাজ চোখে পড়েনি। কেবলমাত্র মসজিদের ভিট লেভেল পর্যন্ত কাজ দেখা গেলেও বাকী কাজ কবে নাগাদ হবে অজানা এলাকাবাসীর।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অগ্রাধিকার ভিত্তিক প্রকল্পের আওতায় মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ হচ্ছে দেশজুড়ে। এই কেন্দ্রে ইসলামি শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য প্রসারে দেশের প্রতিটি জেলা-উপজেলায় ৫শ’ ৬০টি মডেল মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় জামালগঞ্জ উপজেলায় মডেল মসজিদের নির্মাণ করা শুরু হয়। তৃতীয় তলা বিশিষ্ট এই মসজিদের নির্মাণ ব্যয়ে ধরা হয়েছে প্রায় ১২ কোটি টাকা।
উপজেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশন সুত্রে জানা যায়, নির্মাণাধীন মডেল মসজিদটি তিন তলা বিশিষ্ট হবে। এর জন্য ৪৩ শতক ভূমি সরকারীভাবে ক্রয় করা হয়েছে। দৃষ্টিনন্দন এই মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সংস্কৃতিক কমপ্লেক্সে থাকছে নারী ও পুরুষের জন্য পৃথকভাবে ওজু ও নামাজ আদায়ের সুবিধা, লাইব্রেরি গবেষণা ও দ্বীনি-দাওয়াত কার্যক্রম, পবিত্র কুরআন হেফজ, শিশু শিক্ষা, অতিথিশালা, মরদেহের গোসলের ব্যবস্থা, হজ্জযাত্রীদের নিবন্ধন, প্রশিক্ষণ, ইমামদের প্রশিক্ষণসহ অন্যান্য সুবিধা। এছাড়া ইমাম-মুয়াজ্জিনের আবাসনসহ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য অফিসের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এই মসজিদের খতিব, ইমাম, মোয়াজ্জিম, খাদেম সকলেই সরকারি বেতনভুক্ত হবেন।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কবির সিন্ডিকেটের লিমিটেড এর স্বত্বাধিকারী শাহ্ আলমের সাথে কথা বলতে একাধিকবার মুঠোফোনে কল দিলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে নির্মাণ কমিটির সদস্য প্রতিনিধি তোষার আহমেদ জানান, নির্মাণকারী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ না করতে পারায় এটি সারেন্ডার করেছে। আমরা কাগজপত্র উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছি। এখন নতুন করে টেন্ডার প্রক্রিয়ায় আছে। টেন্ডার হলে কাজ শুরু হবে।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তনুকা ভৌমিক বলেন, মডেল মসজিদটির নির্মাণ কাজ শেষ হলে ধর্মীয় প্রচার-প্রচারণা আরও বাড়বে। এই মসজিদে মানুষের ইবাদতের জন্য সব ধরনের সুযোগ থাকবে। তবে কি কারণে এই মসজিদের কাজ বন্ধ আছে এ বিষয়ে আমার জানা নেই।